Advertisement
E-Paper

দেখতে পেলে হয়তো বাঁচত ছেলেটা

‘‘আহা রে! ঝোপঝাড়ের মধ্যে ছেলেটাকে দেখতে পেলে হয়তো প্রাণটা বেঁচে যেত’’— ঘটনার দু’দিন পরেও আফশোস যাচ্ছে না টোটো চালক মানিক দত্তের। রবিবার রাতে ইউআইটি-র ছাত্রের মৃত্যু, তাঁর বন্ধুটিকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া থেকে বাড়িতে, পুলিশে খবর দেওয়া সবেই এগিয়ে এসেছিলেন তিনি। এমনকী, মাঝরাতে মৃত শেষাদ্রি হালদারের দাদা-বৌদিকে বাড়িতে পৌঁছেও দিয়ে আসেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২১ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০১:১৮
টোটো চালক মানিক দত্ত।

টোটো চালক মানিক দত্ত।

‘‘আহা রে! ঝোপঝাড়ের মধ্যে ছেলেটাকে দেখতে পেলে হয়তো প্রাণটা বেঁচে যেত’’— ঘটনার দু’দিন পরেও আফশোস যাচ্ছে না টোটো চালক মানিক দত্তের।

রবিবার রাতে ইউআইটি-র ছাত্রের মৃত্যু, তাঁর বন্ধুটিকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া থেকে বাড়িতে, পুলিশে খবর দেওয়া সবেই এগিয়ে এসেছিলেন তিনি। এমনকী, মাঝরাতে মৃত শেষাদ্রি হালদারের দাদা-বৌদিকে বাড়িতে পৌঁছেও দিয়ে আসেন। এবং সবটাই বিনা পারিশ্রমিকে। মানিকবাবুর বাড়ি বাঁকা নদীর পাড়ে রায়নগরে। কয়েক বছর ধরে বর্ধমান শহরে টোটো চালাচ্ছিলেন তিনি। রবিবার রাতে বিশ্বকর্ম পুজোর ভাসান শেষে দুই বন্ধুর সঙ্গে ওই রেলসেতু লাগোয়া বিধানপল্লির দিকে যাচ্ছিলেন তিনি। মানিকবাবুর কথায়, ‘‘রেল সেতুর নীচ দিয়ে যাচ্ছিলাম। ফাঁকাই ছিল চারপাশ। দেখি জখম একটা ছেলেকে নামিয়ে আনছে কয়েকজন। সঙ্গে সঙ্গে ছুটে গিয়ে তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করি।’’ মানিকবাবুর দাবি, রেললাইনের ধারে আর কাউকে দেখতে পাননি তাঁরা। তাই জখম যুবককে নিয়েই হাসপাতালে যান। পরে ঘটনাটি জেনে ফোনে মৃত ছাত্রের বাড়িতে খবর দেন তিনি। রাতে ব্যাটারির আলো জোগাড় করে মৃত ছাত্রের দাদার সঙ্গে রেললাইন ধরে খোঁজাখুজি করেন। বর্ধমানমুখী আপ লাইনের পাশে ঝোপঝাড়ে ক্ষতবিক্ষত দেহটি দেখতে পান তাঁরা। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, ওই টোটো চালকই রেল পুলিশে খবর দেন। গভীর রাতে পুলিশ মৃতদেহ তোলার পরে তিনি বাড়ি যান। তবে নিজে বাড়ি যাওয়ার আগে শেষাদ্রির দাদা-বৌদিকে ঘটনাস্থল থেকে প্রায় ৭-৮ কিলোমিটার দূরে গোলাপবাগের বাড়িতে পৌঁছেও দেন মানিকবাবু।

রেল সেতু লাগোয়া বিধানপল্লীর সাহেব মিস্ত্রী, বিশ্বজিৎ হালদাররা বলেন, “জখমকে রেল লাইন থেকে নীচে নামানোর সময় চিৎকার চেঁচামেচি শুনে মানি দা ছুটে আসেন। আমরা হাসপাতাল থেকে চলে আসার পরেও উনি ছিলেন।’’ মৃতের দাদা, নিলাদ্রী হালদারও বলেন, “ওই টোটো চালক প্রচুর সাহায্য করেছেন। খবর দেওয়া তো বটেই, বাড়িও পৌঁছে দেন উনি।’’ পারিশ্রমিক দেওয়ার কথা বললেও সবিনয়ে প্রত্যাখ্যান করেন।’’ তাঁর আরও দাবি, ‘‘রাতে পুলিশ বারবার জিজ্ঞাসাবাদও করেছে। তাতেও কিন্তু উনি বিরক্ত হননি।’’ মানিকবাবু বলেন, ‘‘ওঁরা ওই অবস্থাতেও ভাড়া দিতে এসেছিলেন। টাকা নিতে নিতে পারিনি। খালি মনে হচ্ছে, ছেলেটাকে দেখতে পেলে হয়তো বেঁচে যেত।’’

Engineering Student Mysterious death Toto Driver
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy