Advertisement
৩০ এপ্রিল ২০২৪

ছেলে দেখে না, নালিশ দুই প্রৌঢ়ার

বাড়িতে ফেরানোর আর্জি জানিয়ে ফেব্রুয়ারিতে মহকুমাশাকের দ্বারস্থ হয়েছিলেন বেলি। কিন্তু ফল না হওয়ায় দিন পনেরো আগে ফের মহকুমাশাসককে ছেলের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানান। তার দিন তিনেকের মধ্যেই কাটোয়া ২ ব্লক প্রশাসনকে বিষয়টি দেখতে বলেন মহকুাশাসক।

বেলি বিবি ও নমিতাবালা ঘোষ।

বেলি বিবি ও নমিতাবালা ঘোষ।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কাটোয়া শেষ আপডেট: ২৬ জুলাই ২০১৭ ১১:২০
Share: Save:

এক জনের স্বামী নিরুদ্দেশ। অন্য জন বিধবা। ছেলেরা বাড়ি থেকে বের করে দেওয়ায় আত্মীয়ের বাড়িতে থাকতে বাধ্য হচ্ছেন, এই অভিযোগে মঙ্গলবার মহকুমাশাসকের দ্বারস্থ হলেন কাটোয়ার ভাটনা ও মঙ্গলকোটের যাজ্ঞেশ্বরডিহির দুই প্রৌঢ়া।

কাটোয়ার সিঙ্গি পঞ্চায়েতের ভাটনার বাসিন্দা বছর পঞ্চাশের বেলি বিবির স্বামী ফিরোজ মণ্ডল বছর তিনেক আগে আচমকাই নিরুদ্দেশ হয়ে যান। থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করলেও এখনও তাঁর কোনও হদিস পাওয়া যায়নি। বেলির অভিযোগ, ভাটনাতে তিন কাঠা জায়গায় তাঁর স্বামীর বাড়ি রয়েছে। কিন্তু মাস পাঁচেক আগে ছেলে নুরুল ইসলাম মণ্ডল তাঁকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করে সেখান থেকে বের করে দিয়েছেন। এমনকী চাষের চার বিঘা জমিও তাঁকে না জানিয়েই ছেলে বিক্রি করে দিয়েছেণ বলেও অভিযোগ। মহকুমাশাসকের কার্যালয়ে দাঁড়িয়ে এ দিন বেলি বলেন, ‘‘মাথা গোঁজার জন্য কখনও ন’পাড়ায় বাপের বাড়িতে, কখনও মেয়ের বাড়িতে দিন কাটাতে হচ্ছে। বাড়ি ঢুকলে মেরে ফেলার হুমকি দেয় ছেলে।’’

বাড়িতে ফেরানোর আর্জি জানিয়ে ফেব্রুয়ারিতে মহকুমাশাকের দ্বারস্থ হয়েছিলেন বেলি। কিন্তু ফল না হওয়ায় দিন পনেরো আগে ফের মহকুমাশাসককে ছেলের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানান। তার দিন তিনেকের মধ্যেই কাটোয়া ২ ব্লক প্রশাসনকে বিষয়টি দেখতে বলেন মহকুাশাসক। তাতেও ফল না হওয়ায় এ দিন ফের মহকুাশাসকের কাছে আসেন প্রৌঢ়া। যদিও নুরুলের বক্তব্য, ‘‘মা মিথ্যা অভিযোগ করছেন। আমি নিজেই লোহাপোতায় শ্বশুরবাড়িতে থাকি। মায়ের সঙ্গে দেখাই হয় না, অত্যাচার করব কি করে!’’

মঙ্গলকোটের যাজ্ঞেশ্বরডিহির নমিতাবালা ঘোষেরও একই রকম অভিযোগ। বছর কুড়ি আগে স্বামী ও বছর দুয়েক আগে এক দুর্ঘটনায় ছোট ছেলের মৃত্যু হয়েছে। বড় ছেলের কাছেই ছিলেন বছর পঞ্চান্নর নমিতাদেবী। নিজের কাঠা চারেক জায়গায় বাড়ি থাকলেও বড় ছেলে সমীর ঘোষ ও বৌমা লক্ষ্মী ঘোষ তাঁকে থাকতে দেন না বলে অভিযোগ তাঁর। তাঁর কথায়, ‘‘ছেলে-বৌমা প্রায়ই মারধর করে। অত্যচার সহ্য করতে না পেরে শ্রীখণ্ডে আত্মীয়ের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছি।’’ তাঁর দাবি, তিনি বিধবা ভাতাও পান না। তাই মুশকিলে পড়েছেন। তাঁর ছেলে সমীর এ বিষয়ে কিছু বলতে চাননি।

দুই প্রৌঢ়ার অভিযোগই খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন মহকুমাশাসক সৌমেন পাল। প্রয়োজনে তাঁদের ছেলেদের ডাকা হবে বলে জানান তিনি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE