ব্যারাজের রাস্তায় দেওয়া হয়েছে এই বিজ্ঞপ্তি। নিজস্ব চিত্র
ফের এক দফা সংস্কারের কাজ হবে দুর্গাপুরে দামোদরের ডিভিসি ব্যারাজে, জানাল সেচ দফতর। তবে রাতে সেই কাজ হওয়ায় যানবাহন চলাচলে তেমন প্রভাব পড়বে না বলে আশা করছেন প্রশাসনের কর্তারা। তাঁরা জানান, ৫ থেকে ১১ জানুয়ারি পর্যন্ত রাত ১২টা থেকে ভোর ৪টে পর্যন্ত কাজ হবে। ব্যারাজের দু’টি গেট বদলানো হবে এই পর্বে।
১৯৫৫ সালে ব্যারাজটি গড়ে ওঠে। ৬৯২ মিটার লম্বা ব্যারাজে গেটের সংখ্যা ৩৪টি। ব্যারাজের উপর দিয়েই গিয়েছে দুর্গাপুর থেকে বাঁকুড়া, পশ্চিম মেদিনীপুর হয়ে ওড়িশাগামী ৯ নম্বর রাজ্য সড়ক। দুই বর্ধমান ও বাঁকুড়া জেলার বিস্তীর্ণ অংশে সেচের জল সরবরাহ হয় ব্যারাজ থেকে। দুর্গাপুর শহরের কল-কারখানায় এবং পানীয় জলের প্রধান উৎসও এই ব্যারাজ। গড়ে ওঠার পর থেকে কোনও দিন সে ভাবে ব্যারাজের সংস্কার হয়নি। রাজ্য সরকারের তরফে বার বার কেন্দ্রের কাছে দরবার করেও ফল হয়নি বলে অভিযোগ।
২০১৭ সালের ২৪ নভেম্বর ভোরে ব্যারাজের ১ নম্বর লকগেট বেঁকে গিয়ে ব্যারাজের সব জল বেরিয়ে যায়। দুর্গাপুর শহর জুড়ে পানীয় জলের আকাল দেখা দেয়। শিল্প-কারখানায় ব্যাপক প্রভাব পড়ে। ফ্লোটিং গেট লাগিয়ে কোনও রকমে পরিস্থিতি সামাল দেয় সেচ দফতর। এর পরেই রাজ্য সরকার নিজে ব্যারাজ সংস্কারের সিদ্ধান্ত নেয়। গত মে মাসে বড়জোড়ায় সভা করতে এসে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, ১৩০ কোটি টাকা খরচ করে ব্যারাজের সংস্কার করা হবে।
সেচ দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, মোট ১১টি গেটের হাল খারাপ। সেগুলি পাল্টে ফেলে নতুন লাগাতে হবে। ধাপে-ধাপে সেই কাজ করা হচ্ছে। ১ নম্বর গেটের ফ্লোটিং গেট সরিয়ে সেখানে নতুন গেট বসানোর কাজ আগেই হয়ে গিয়েছে। কিছু দিন আগে ৪ নম্বর গেট বদলে নতুন গেট বসানো হয়। এই দফায় ৩ ও ৫ নম্বর, দু’টি নতুন গেট বসানো হবে বলে জানিয়েছেন সেচ দফতরের এসডিও (ব্যারাজ) গৌতম বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি জানান, পরে ধাপে-ধাপে বাকি গেটগুলিও বদলানো হবে।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, রাতে কাজ হবে। তখন যানবাহন চলাচল করবে না। তবে জরুরি প্রয়োজনে অ্যাম্বুল্যান্স ও দমকলের গাড়ি যাতায়াত করতে পারবে। সেপ্টেম্বরের গোড়ার দিকে ব্যারাজের রাস্তা সংস্কার হয়। সেই সময়ে কয়েকদিনের জন্য রাস্তার এক পাশ দিয়ে কম গতিতে গাড়ি চলাচলের ব্যবস্থা করা হয়েছিল। তা সত্ত্বেও এক দিন ভোর থেকে দীর্ঘক্ষণ যানজটে নাকাল হতে হয় মানুষজনকে। নভেম্বরের শুরুতে আর এক দফা কাজ হয়। সে বার অবশ্য যানজটের সমস্যা হয়নি। এ বার এক সপ্তাহ ধরে কাজ হবে।
বাঁকুড়া জেলা প্রশাসন থেকে ইতিমধ্যে ব্যারাজে যান চলাচলে নিষেধাজ্ঞার নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে। সেচ দফতরের এসডিও (ব্যারাজ) গৌতমবাবু বলেন, ‘‘এ বার কাজ হবে রাতে। সারা রাত ধরে কাজ হবে। সেই সময়টুকু যান চলাচল বন্ধ থাকবে। আশা করা যায়, কোনও সমস্যা হবে না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy