Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

চাকরির নাম করে প্রতারণা, হদিস চক্রের

চাকরি দেওয়ার নাম করে প্রথমে বিজ্ঞাপন দেওয়া হত সংবাদপত্রে। আবেদনপত্র পাওয়ার পরে কয়েক জনকে বেছে নিয়ে তাঁদের কাছ থেকে নেওয়া হত লক্ষাধিক টাকা। কিছু দিন ‘প্রশিক্ষণ’ও দেওয়া হত। তার পরে গুটিয়ে যেত অফিস। চাকরি দেওয়ার নাম করে এ ভাবে প্রতারণার অভিযোগে দু’জনকে গ্রেফতার করা হল দুর্গাপুরে। এর পিছনে আন্তঃরাজ্য একটি চক্র জড়িয়ে রয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

নিজস্ব সংবাদদাতা
দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ১৯ জুন ২০১৫ ০১:৪৭
Share: Save:

চাকরি দেওয়ার নাম করে প্রথমে বিজ্ঞাপন দেওয়া হত সংবাদপত্রে। আবেদনপত্র পাওয়ার পরে কয়েক জনকে বেছে নিয়ে তাঁদের কাছ থেকে নেওয়া হত লক্ষাধিক টাকা। কিছু দিন ‘প্রশিক্ষণ’ও দেওয়া হত। তার পরে গুটিয়ে যেত অফিস। চাকরি দেওয়ার নাম করে এ ভাবে প্রতারণার অভিযোগে দু’জনকে গ্রেফতার করা হল দুর্গাপুরে। এর পিছনে আন্তঃরাজ্য একটি চক্র জড়িয়ে রয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ওড়িশায় রীতিমতো অফিস খুলে সংবাদপত্রে বিজ্ঞাপন দিয়ে ‘মার্চেন্ট নেভি’তে চাকরি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল একটি সংস্থা। বিজ্ঞাপন দেখে অসম, ঝাড়খণ্ড-সহ বেশ কয়েকটি রাজ্যের বেকার যুবকেরা চাকরির জন্য আবেদনপত্র পাঠান। এর পরে ২০ জনকে বেছে নিয়ে তাঁদের প্রত্যেকের কাছ থেকে টাকা জমা নেওয়া হয়। কিছু দিন প্রশিক্ষণও দেওয়া হয়। তার পরেই ঝাঁপ পড়ে যায় অফিসটিতে।

এই ঘটনার পরে ওড়িশায় চাকরির জন্য টাকা দেওয়া কয়েক জন ওই সংস্থা আর কোথাও কারবার ফেঁদে বসেছে কি না, খোঁজখবর করছিলেন। সম্প্রতি দুর্গাপুরের সেপকো এলাকায় একই ধরনের একটি অফিসের খোঁজ পান তাঁরা। এখানে এসে টাকা ফেরতের দাবি জানান তাঁরা। কিন্তু সেই অফিস থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়, টাকা ফেরত দেওয়া সম্ভব নয়। কারণ, এটি আলাদা অফিস। এর পরেই বি-জোন ফাঁড়িতে অভিযোগ করেন তাঁরা। রাতেই দুর্গাপুরের জে সি বোস অ্যাভিনিউয়ে ডিএসপি-র আবাসন থেকে প্রতারণার অভিযোগে ওড়িশার বাসিন্দা তারকনাথ পুততুণ্ড এবং ঝাড়খণ্ডের বাসিন্দা চন্দ্র রানাপ্রতাপ সিংহকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

অভিযোগকারী ঝাড়খণ্ডের বাসিন্দা বিবেকানন্দ মণ্ডল জানান, দিনের পর দিন চাকরি দেওয়ার নাম করে মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে তাঁদের। চাকরি হবে না বুঝতে পেরে তাঁরা টাকা ফেরত দেওয়ার দাবি জানান। তাঁর কথায়, ‘‘টাকা ফেরত দেওয়ার কথা বললেই বলা হত, চাকরি পেতে একটু সময় লাগবে। এ ভাবে বেশ কিছু দিন চলার পরে অফিস গুটিয়ে নেয় ওই সংস্থাটি।’’ তিনি আরও অভিযোগ করেন, টাকা ফেরতের দাবি জানানোয় হুমকিও শুনতে হয়েছে। ফের যাতে অন্য কেউ প্রতারণার শিকার না হন সে জন্যই পুলিশে অভিযোগ করেছেন বলে জানান বিবেকানন্দবাবু।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, সংবাদপত্রে মাঝে-মাঝেই মার্চেন্ট নেভিতে চাকরির প্রতিশ্রুতি দিয়ে বিজ্ঞাপন দেয় বিভিন্ন সংস্থা। প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ দিয়ে কাজ করার যোগ্য করে তোলে সংস্থাগুলি। ওড়িশার এই সংস্থাটিও সে ধরনের কাজ শুরু করেছিল। অভিযোগকারীরা পুলিশকে জানিয়েছেন, প্রথম দিকে চাকরির জন্য তাঁদেরও প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। তবে কিছু দিনের মধ্যেই সংস্থার কর্মী-আধিকারিকদের হালচাল দেখে তাঁরা বুঝতে পারেন, বিষয়টি ভুয়ো। তার পর থেকেই সমস্যার শুরু।

আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের এক আধিকারিক জানান, যে দু’জনকে ধরা হয়েছে তারা চক্রের অন্যতম মাথা। দলে আরও কয়েক জন রয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘আমাদের সন্দেহ, দেশ জুড়েই সংস্থাটি এই ধরনের প্রতারণা চালাচ্ছে। সে জন্য বাকিদের ধরা খুব জরুরি।’’ বৃহস্পতিবার ধৃতদের দুর্গাপুর আদালতে তোলা হলে ২ দিন পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়। এডিসিপি (পূর্ব) অমিতাভ মাইতি বলেন, ‘‘ধৃতদের জেরা করে আন্তঃরাজ্য চক্রটির বাকিদের খোঁজে তল্লাশি চালানো হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

money police job news paper advertisement
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE