Advertisement
E-Paper

মহিলাকে সঙ্গে নিয়ে ভূগর্ভে বাড়ি

নিজস্ব সংবাদদাতা 

শেষ আপডেট: ২১ জুন ২০২০ ০১:২৩
প্রতীকী চিত্র

প্রতীকী চিত্র

ঘুমোচ্ছিলেন স্বামীর সঙ্গে। আচমকা দু’কামরার বাড়ি ধসে ভূগর্ভে তলিয়ে গেলেন শাহনাজ বেগম নামে বছর ৪৫-এর এক মহিলা। শুক্রবার মাঝরাতে পশ্চিম বর্ধমানের জামবাদ খোলামুখ খনির অদূরের ঘটনা। উদ্ধারকাজ চললেও শনিবার রাত পর্যন্ত খোঁজ মেলেনি মহিলার। পাশাপাশি, আরও একটি বাড়ি ও একটি হোটেলও তলিয়ে গিয়েছে। এলাকাবাসীর অভিযোগ, প্রায় ন’ঘণ্টা পরে শুরু হয় উদ্ধারকাজ।

গাড়ির যন্ত্রাংশের মিস্ত্রি মিরাজ শেখ জানান, রাতে তিনি ও তাঁর স্ত্রী শাহনাজ ঘুমোচ্ছিলেন। রাত ২টো নাগাদ আচমকা বাড়ি কেঁপে ওঠে। সঙ্গে মাটি ফাটার তীব্র আওয়াজে ঘুম ভাঙে মিরাজের। স্ত্রীকেও ডেকে তোলেন তিনি। কী ঘটেছে বুঝতে পেরে দরজা দিয়ে লাফিয়ে বাড়ির বাইরে বেরোন মিরাজ। কিন্তু শাহনাজ বেরোতে পারেননি। কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে শাহনাজ এবং ওই একতলা বাড়ির পুরোটাই ভূপৃষ্ঠ থেকে অন্তত ৫০ ফুট নীচে তলিয়ে যায়, অনুমান ইসিএলের উদ্ধারকারী দলের। পাশাপাশি, ভাতের হোটেল ব্যবসায়ী স্বপন ঘোষের হোটেল এবং পেশায় ধোপা ইন্দর রজক নামে এক জনের বাড়ি তলিয়ে যায়। সেই সময়ে হোটেলে কেউ ছিলেন না। বাড়িতে একাই ছিলেন ইন্দরবাবু। তিনি বেরিয়ে আসতে পারেন।
মিরাজ ও শাহনাজের ছোট ছেলে দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়া শেখ জিব্রাহিম বলে, ‘‘চিৎকার শুনে বাইরে বেরিয়ে দেখি, বাড়িটা আর নেই। মা-ও বাড়ির সঙ্গেই তলিয়ে গিয়েছেন।’’ পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, ইসিএল-এর জায়গায় আগে বাড়ি, হোটেল তৈরি করেছিলেন মিরাজ, স্বপনবাবু, ইন্দরবাবুরা। স্বপনবাবুরা বলেন, ‘‘রুটি-রুজি সব হারালাম। জানি না, আর মাথা গোঁজার ঠাঁই হবে কি না।’’

ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, অন্তত ২০ ফুট চওড়া ও ১০ ফুট লম্বা মাপের গর্ত তৈরি হয়েছে। তার তল দেখা যাচ্ছে না। এলাকাবাসী পাণ্ডবেশ্বরের তৃণমূল বিধায়ক তথা আসানসোলের মেয়র জিতেন্দ্র তিওয়ারিকে ঘিরে দ্রুত উদ্ধারকাজ শুরুর দাবিতে বিক্ষোভ দেখান। বেলা ১১টা নাগাদ ইসিএল মাটি কেটে উদ্ধারের কাজ শুরু করে। স্থানীয় বাসিন্দা হিরা সাউ, ভিকি সিংহদের ক্ষোভ, ‘‘ঘটনা গভীর রাতের। আর উদ্ধারকাজ শুরু হল পরদিন সকালে।’’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ইসিএল-কর্তার দাবি, নিয়ম অনুযায়ী তাঁদের উদ্ধারকাজ করার কথা নয়। কিন্তু মানবিকতার খাতিরে তা করা হয়। যখন প্রক্রিয়াগত ভাবে খবর এসেছে, তখনই উদ্ধারকাজ শুরু হয়েছে। তাঁর সংযোজন: ‘‘যেখানে এই ঘটনা ঘটেছে, সেখানে এলাকাবাসীকে বারবার জানানো হয়েছে, লাগোয়া জামবাদ খোলামুখ খনির সম্প্রসারণ হবে। সে জন্য ওখানে থাকা নিরাপদ নয়। তার পরেও এলাকাবাসী সেখানে ছিলেন।’’ যদিও বিধায়ক জিতেন্দ্রবাবুর দাবি, ‘‘খনি লাগোয়া এলাকায় সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকেই এই কাজগুলি ইসিএল-এর করার কথা।’’ ইসিএলের সিএমডি-র কারিগরি সচিব নীলাদ্রি রায় বলেন, ‘‘ওই এলাকায় ব্যক্তিগত মালিকানাধীন ভূগর্ভস্থ খনি ছিল। মাটির তলা ফাঁকা থাকায়, ওই খনির নীচে জলের অভাবে বা উপরি ভাগের মাটি আলগা হয়েও ধস নামতে পারে।’’

Asansol Durgapur
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy