Advertisement
E-Paper

হাতে-কলমে শেখায় কাঁটা শিক্ষকের অভাব

যেখানে পড়ুয়ারা আসে, সেখানে পরিকাঠামো বেহাল। যেখানে পর্যাপ্ত পরিকাঠামো রয়েছে, সেখানে আবার নিয়মিত দেখা মেলে না অনেক পড়ুয়ার। স্কুল পরিদর্শকের রিপোর্টে উঠে এসেছে বর্ধমান জেলার প্রাথমিক স্কুলগুলিতে এমন পরিস্থিতির কথা।

অর্পিতা মজুমদার

শেষ আপডেট: ১০ জানুয়ারি ২০১৭ ০১:১৫

যেখানে পড়ুয়ারা আসে, সেখানে পরিকাঠামো বেহাল। যেখানে পর্যাপ্ত পরিকাঠামো রয়েছে, সেখানে আবার নিয়মিত দেখা মেলে না অনেক পড়ুয়ার। স্কুল পরিদর্শকের রিপোর্টে উঠে এসেছে বর্ধমান জেলার প্রাথমিক স্কুলগুলিতে এমন পরিস্থিতির কথা।

ধারাবাহিক ভাবে ধাপে-ধাপে জেলার স্কুলগুলিতে পরিদর্শনের কাজ চলছে। স্কুল পরিদর্শকের দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, অক্টোবরে দুর্গাপুরের ৫টি স্কুলে পরিদর্শন হয়। দেখা গিয়েছে, করঙ্গপাড়া, খাটপুকুর, সারদাপল্লি, শিক্ষা নিকেতন শালবাগান— এই চারটি স্কুলে পড়ুয়ার উপস্থিতি বেশ কম। স্কুলগুলিকে অবিলম্বে উপস্থিতির হার বাড়ানোর দিকে নজর দিতে বলা হয়েছে। অথচ, স্কুলগুলিতে হাতে-কলমে শেখানোর (টিচিং-লার্নিং) জিনিসের কোনও অভাব নেই। একমাত্র বেনাচিতি উত্তরপল্লি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়ুয়া সংখ্যা স্বাভাবিক বলে রিপোর্টে উল্লেখ।

ওই একই মাসে কাঁকসার গ্রামীণ এলাকায় ১০টি স্কুলে পরিদর্শন হয়। তার মধ্যে পাথরডিহা ভালুককোঁদা বাদে বাকি ন’টি স্কুলে টিচিং-লার্নিং সামগ্রী ঠিক মতো ব্যবহার করা হচ্ছে না বলে জানানো হয়েছে। কিন্তু স্কুলগুলিতে পড়ুয়ার ভিড় যথেষ্ট। একে পর্যাপ্ত সামগ্রী নেই, তার উপর শিক্ষকের সংখ্যাও অপ্রতুল। ফলে, সবাইকে হাতেকলমে শেখানো যাচ্ছে না বলে স্কুল কর্তৃপক্ষগুলির দাবি। একই সমস্যা গলসি-সহ জেলার নানা গ্রামীণ এলাকার স্কুলেই।

সর্বশিক্ষা অভিযানের দুর্গাপুরের ২ চক্র সম্পদ কেন্দ্রের কর্মী পারমিতা রায়ের মতে, গ্রামাঞ্চলের স্কুলগুলির শিক্ষকেরা অনেক সময়েই বদলি নিয়ে শহরে চলে যান। ফলে, গ্রামের বহু স্কুলেই শিক্ষক সংখ্যা এক বা দুই। কিন্তু শহরে ইংরেজি মাধ্যম স্কুলের রমরমা। বেশির ভাগ পড়ুয়া সেগুলিতেই যায়। সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত প্রাথমিক স্কুলগুলিতে বেশির ভাগই প্রথম প্রজন্মের পড়ুয়া। তাদের অনেকেই নিয়মিত স্কুলে আসে না। কিন্তু সেই স্কুলগুলিতে শিক্ষক রয়েছে বেশি। টিচিং-লার্নিং পদ্ধতিতে পড়ানোর জন্য জিনিস কিনতে প্রত্যেক শিক্ষক পাঁচশো টাকা করে অনুদান পান। ফলে, শহরের স্কুলগুলিতে শিক্ষা সামগ্রীর অভাব থাকে না। কিন্তু গ্রামে সেই সমস্যা হয়।

স্কুল পরিদর্শকের দফতর সূত্রে জানা যায়, জেলায় ৫৯টি শিক্ষাচক্র আছে। দুর্গাপুর ১ ও ২, হিরাপুর, আসানসোল, বর্ধমান সদর ১ ও ২ চক্রে শিক্ষক সংখ্যা পড়ুয়ার অনুপাতে অনেকটাই বেশি। বাকিগুলিতে তা যথাযথ নয়। শিক্ষার অধিকার আইন অনুযায়ী, দুর্গাপুরের দু’টি চক্র মিলিয়ে পড়ুয়ার তুলনায় ৩০-৩৫ জন শিক্ষক বেশি আছেন। অথচ, কাঁকসা, গলসি ইত্যাদি এলাকায় প্রত্যেক সার্কেলেই ২৫-৩০ জন শিক্ষক কম রয়েছেন।

কাঁকসার এক প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষিকার অভিযোগ, ‘‘স্কুলে ১২০ জন পড়ুয়া আর শিক্ষক দু’জন। গত দু’বছর টিচিং-লার্নিং সামগ্রী কেনার টাকাও আসেনি। আগে পাওয়া টাকা থেকেও যথেষ্ট জিনিস কেনা যায়নি।’’ অনেক অভিভাবকের দাবি, শিক্ষক পিছু টাকা বরাদ্দ না করে যদি ছাত্র পিছু টাকা দেওয়া হতো তাহলে সমস্যা হয়তো অনেকটা কমত।

জেলা স্কুল পরিদর্শকের দফতরের তরফে জানানো হয়েছে, গ্রামাঞ্চলে শিক্ষক কম থাকায় এমন সমস্যার কথা নির্দিষ্ট দফতরে জানানো হয়েছে।

Unavailability Teacher
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy