E-Paper

অনিশ্চয়তা বন্ধ কারখানার আবাসন নিয়েও

কিছু আবাসন দখল হয়ে গিয়েছে। কিছু আবাসনের দরজা-জানলা ভেঙে নিয়ে পালিয়েছে দুষ্কৃতীরা।

সুব্রত সীট

শেষ আপডেট: ১২ মে ২০২৫ ০৭:৪০
এমন হাল নানা কোয়ার্টার্সের।

এমন হাল নানা কোয়ার্টার্সের। —ফাইল চিত্র।

এমএএমসি কারখানা গড়ে উঠেছিল ১৯৩ একর জায়গা জুড়ে গড়ে। এক সময়ে কারখানায় প্রায় সাত হাজার কর্মী ছিলেন। তাঁদের থাকার জন্য ৪৭৪ একর জায়গায় গড়ে তোলা হয় আধুনিক টাউনশিপ।

নিজস্ব হাসপাতাল, স্কুল, বাজার থেকে শুরু করে স্টাফ ক্লাব, সুইমিং ক্লাব, সিনে ক্লাব। স্টাফ ক্লাবের মাঠে ফুটবল খেলে গিয়েছেন কৃশানু দে, বিকাশ পাঁজি, তরুণ দে, কুলজিৎ সিংহ, মইদুল ইসলামেরা। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান লেগেই থাকত। মমতা শঙ্করের দলের নৃত্য, সলিল চৌধুরীর গান, অজিতেশ বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাটক, বীণা দাশগুপ্তের যাত্রাপালা হয়েছে এখানে। সন্ধ্যায় সাদা পর্দা টাঙিয়ে দেশ-বিদেশের সিনেমা দেখার ব্যবস্থাও ছিল।

কারখানা বন্ধ হয়ে যায় ২০০২ সালে। অনিশ্চিত হয়ে পড়ে তখনও টাউনশিপে থাকা প্রায় আড়াই হাজার কর্মীর বসবাস। বন্ধ হয়ে যায় হাই স্কুল, হাসপাতাল। সিটুর করা আবেদনের ভিত্তিতে ২০০৩ সালের ২৪ জুন আদালত কারখানা থেকে টাউনশিপকে আলাদা করে দেয়। সে বছর ১ জুলাই থেকে টাউনশিপের দায়িত্ব যায় আসানসোল-দুর্গাপুর উন্নয়ন পর্ষদের (এডিডিএ) এর হাতে। টাউনশিপে মোট কোয়ার্টার্সের সংখ্যা ৪,২৫৩টি। তার মধ্যে প্রায় ২,৪৯৪টিতে বসবাস করে কারখানার প্রাক্তন শ্রমিক-কর্মীদের পরিবার। কিছু আবাসন দখল হয়ে গিয়েছে। কিছু আবাসনের দরজা-জানলা ভেঙে নিয়ে পালিয়েছে দুষ্কৃতীরা।

প্রাক্তন কর্মীরা জানান, ১৯৯৯ সালে এমএএমসি কর্তৃপক্ষ নির্দেশ দিয়েছিলেন, কোয়ার্টার্সে থাকতে গেলে কোয়ার্টার্সের তৎকালীন মূল্যের ৮০ শতাংশ অর্থ জমা দিতে হবে আবাসিকদের। তা না হলে, কোয়ার্টার্স ছেড়ে দিতে হবে। কোয়ার্টার্সের প্রকৃতি অনুযায়ী ৬৫ হাজার থেকে ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত জমা নেওয়া হয় শ্রমিক-কর্মীদের কাছ থেকে। ২০০৫ সালের ২৮ এপ্রিল কারখানা লিক্যুইডেটরের হাতে চলে যায়। তখন কোয়ার্টার্স বাবদ জমা দেওয়া অর্থও চলে যায় লিক্যুইডেটরের হাতে। ২০১৩ সালে আদালতের নির্দেশে সেই অর্থ এডিডিএ-র হাতে আসে। মোট পরিমাণ ছিল প্রায় ১০৩ কোটি ২৮ লক্ষ টাকা। প্রাক্তন কর্মীরা দাবি করেন, সেই অর্থ থেকে তাঁদের কোয়ার্টার্স লিজ় বাবদ টাকা কেটে নিয়ে অতিরিক্ত অর্থ তাঁদের ফেরত দেওয়া হোক।তবে এমএএমসি-র কাছে বকেয়া পাওনার দাবিতে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের দায়ের করা মামলার প্রেক্ষিতেবিষয়টি আর এগোয়নি। ২০১৮সালে সেই টাকা ফেরত যায় লিক্যুইডেটরের কাছে।

আবাসিক সংগঠন ‘এমএএমসি টাউনশিপ আবাসিক ওয়েলফেয়ার অ্যাসাসিয়েশন’-এর সাধারণ সম্পাদক অসীম চট্টোপাধ্যায়, ‘এমএএমসি প্রাক্তন শ্রমিক কল্যাণ সমিতি’র তরফে স্বপন বিশ্বাসদের দাবি, ২০১৫ সালে ৪১৭টি কোয়ার্টার্স প্রাক্তন কর্মীদের লিজ় দিয়েছিল এডিডিএ। সেগুলিও আর কার্যকর হয়নি। আবাসিক সংগঠন ‘এমএএমসি ভিআরএস, ভিএসএস অ্যান্ড রিটায়ার্ড এমপ্লয়িজ় অ্যাসোসিয়েশন’-এর সভাপতি বিনয়েন্দ্র কিশোর চক্রবর্তী জানান, বিষয়টি এখন আদালতে বিচারাধীন।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Durgapur

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy