Advertisement
E-Paper

বিক্ষোভে ব্যাহত কাজ, ক্ষতি খনির

গ্রামবাসীর বিক্ষোভের জেরে প্রায় ২৪ ঘণ্টা বন্ধ রইল খনির কাজ। সালানপুরে ইসিএলের ডাবর খনিতে সোমবার বিকেল থেকে শুরু হওয়া ওই বিক্ষোভের জেরে কয়লা তোলা ও পরিবহণ বন্ধ হয়ে পড়ে। মঙ্গলবার দুপুর পর্যন্ত কাজ বন্ধ থাকায় প্রায় ৭০ লক্ষ টাকা ক্ষতি হয়েছে বলে খনি কর্তৃপক্ষের দাবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৪ অগস্ট ২০১৬ ০০:৩৭
সালানপুরে তখনও কাজ বন্ধই। মঙ্গলবারের নিজস্ব চিত্র।

সালানপুরে তখনও কাজ বন্ধই। মঙ্গলবারের নিজস্ব চিত্র।

গ্রামবাসীর বিক্ষোভের জেরে প্রায় ২৪ ঘণ্টা বন্ধ রইল খনির কাজ। সালানপুরে ইসিএলের ডাবর খনিতে সোমবার বিকেল থেকে শুরু হওয়া ওই বিক্ষোভের জেরে কয়লা তোলা ও পরিবহণ বন্ধ হয়ে পড়ে। মঙ্গলবার দুপুর পর্যন্ত কাজ বন্ধ থাকায় প্রায় ৭০ লক্ষ টাকা ক্ষতি হয়েছে বলে খনি কর্তৃপক্ষের দাবি। তৃণমূলের স্থানীয় কিছু নেতা-কর্মীর মদতেই এই বিক্ষোভ চলে বলে অভিযোগ। এ দিন তৃণমূল নেতৃত্বের সঙ্গে খনি কর্তৃপক্ষের বৈঠকের পরে সমস্যা মেটে। বিকেল থেকে কাজ চালু হয়।

কোলিয়ারি ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ঘটনার সূত্রপাত রবিবার। সে দিন খনির কাছে সামডি রোডে কয়লা বোঝাই ডাম্পারের ধাক্কায় এক মোটরবাইক আরোহী জখম হন। তিনি লাগোয়া ফুলবেড়িয়া গ্রামের বাসিন্দা। এর পরেই গ্রামবাসীরা ক্ষতিপূরণের দাবিতে কোলিয়ারিতে বিক্ষোভ শুরু করেন। ডাম্পারটি ভাঙচুর করা হয়। বাধা দিতে গিয়ে নিগৃহীত হন খনির এক আধিকারিক ও কয়েক জন নিরাপত্তাকর্মী। কর্তৃপক্ষ ক্ষতিপূরণের আশ্বাস দেওয়ায় তখনকার মতো গোলমাল থামে। সোমবার সকালে খনি কর্তৃপক্ষ আধিকারিক ও নিরাপত্তাকর্মীদের নিগ্রহে এলাকার তিন বাসিন্দার বিরুদ্ধে সালানপুর থানায় অভিযোগ করেন। এই খবর জানার পরেই এলাকাবাসীর একাংশ খনির কাজ বন্ধ করে বিক্ষোভ শুরু করেন। তাঁদের দাবি, ওই তিন গ্রামবাসীর বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রত্যাহার করতে হবে।

এই খনির দৈনিক উৎপাদন প্রায় পনেরোশো টন। মঙ্গলবার সকালে ডাবর খনিতে গিয়ে দেখা যায়, শ্রমিক-কর্মীরা আশপাশে জটলা করছেন। ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রাখা আছে কয়লা কাটার যন্ত্রগুলি। কয়লা পরিবহণের কয়েকটি ডাম্পার খনির অদূরেই দাঁড়িয়ে রয়েছে। কাজ পুরোপুরি বন্ধ। কয়েক জন আধিকারিকও রয়েছেন। কাজ বন্ধ কেন, প্রশ্ন করা হলে পি কুমার নামে এক আধিকারিক শুধু বলেন, ‘‘গ্রামবাসীদের বাধায় কেউ কাজে নামতে পারছেন না।’’ সকালেই খনিতে কাজ করতে পৌঁছে গিয়েছিলেন পাণ্ডবেশ্বরের বাসিন্দা শিবনাথ ঘোষ। ছাউনির তলায় বসে তিনি বলেন, ‘‘কাজে নামতে নিষেধ করেছে।’’ আর এক শ্রমিক, সামডিহির বাসিন্দা গোলাস চহ্বণ বলেন, ‘‘গ্রামবাসীদের সঙ্গে বিবাদ না মিটলে কাজে যোগ দিতে দেবে না বলেছে।’’ কে বা কারা এই নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে, সে ব্যাপারে অবশ্য কোনও কথা বলতে চাননি তাঁরা। তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জনা কয়েক কর্মী অভিযোগ করেন, এলাকার তৃণমূল নেতা দীনেশ লালের নেতৃত্বেই এক দল বাসিন্দা তাঁদের কাজ করতে দিচ্ছেন না। কাজে নামলে মারধর করা হবে বলে হুমকিও দেওয়া হচ্ছে, দাবি করেন তাঁরা।

সকালে খনি চত্বরে ঘোরাফেরা করতে দেখা গেল ওই তৃণমূল নেতা দীনেশ লালকেও। তাঁর বক্তব্য, ‘‘খনি কর্তৃপক্ষ অন্যায় ভাবে গ্রামবাসীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন। তাই খনিতে বিক্ষোভ করা হচ্ছে।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘আমি ব্যক্তিগত ভাবে খনি বন্ধের পক্ষে নই। তবে আমি এলাকায় তৃণমূল করি। গ্রামবাসীদের সঙ্গে সব সময় থাকি। তাঁদের দাবি সমর্থন করেছি।’’ খনিতে কাজ বন্ধের খবর পেয়ে কোলিয়ারি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনায় বসেন তৃণমূলের জেলা (শিল্পাঞ্চল) সাংগঠনিক সম্পাদক পাপ্পু উপাধ্যায়। তার পরেই জট কাটে। পাপ্পুবাবু বলেন, ‘‘গ্রামবাসীদের বিরুদ্ধে তোলা অভিযোগ প্রত্যাহারের আশ্বাস মিলেছে। তার পরেই বিক্ষোভ উঠে খনির কাজ শুরু হয়েছে।’’

ইসিএলের সালানপুর এরিয়ার জেনারেল ম্যানেজার যোগেন্দ্র বিশওয়াল পরে বলেন, ‘‘সমস্যা মিটেছে। খনিতে স্বাভাবিক কাজ শুরু হয়েছে। গ্রামবাসীদের দাবি বিবেচনা করা হচ্ছে।’’

Colliery Unrest
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy