ভাঙচুরের পরে। দুবচুড়ুরিয়া মোড়ে বৃহস্পতিবার। নিজস্ব চিত্র
মোটরবাইকের ধাক্কায় জখম হলেন এক সাইকেল আরোহী। এর পরেই পথ অবরোধ করেন এলাকাবাসী। অভিযোগ, ট্র্যাফিক পুলিশের একটি কিয়স্কে ভাঙচুরও চালানো হয়। বৃহস্পতিবার সকালে ২ নম্বর জাতীয় সড়কে দুর্গাপুরের দুবচুড়ুরিয়া মোড়ের ঘটনা। গোলমাল, অবরোধের জেরে প্রায় ঘণ্টা দুয়েক আটকে থাকে যানবাহন।
পুলিশ জানায়, এ দিন সকাল সাড়ে ৬টা নাগাদ দুবচুড়ুরিয়া গ্রামের রতন বাগদি সাইকেলে চড়ে জাতীয় সড়ক ধরে যাচ্ছিলেন। সেই সময়ে পিছন থেকে একটি মোটরবাইক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সাইকেলে ধাক্কা মারে। ঘটনাস্থলেই লুটিয়ে পড়েন রতনবাবু। ডান পায়ে ভালরকম চোট পান তিনি। লাগোয়া এলাকা থেকে ছুটে আসেন এলাকাবাসী। দুর্ঘটনাগ্রস্ত মোটরবাইকটিকে তাড়া করেন কয়েক জন। এর পরেই মোটরবাইকের চালক ভয় পেয়ে সড়ক লাগোয়া জঙ্গলে বাইক ফেলে চম্পট দেন। বাসিন্দারা মোটরবাইকটিকে নিয়ে আসেন। দুর্ঘটনার পরেই ঘটনাস্থলে আসেন কর্তব্যরত ট্র্যাফিক পুলিশকর্মীরা। বেশ কিছুক্ষণ পরে রতনবাবুকে উদ্ধার করে দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়। হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, তাঁর শারীরিক অবস্থা আপাতত স্থিতিশীল।
কিন্তু সমস্যা বাধে অন্য ক্ষেত্রে। পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ট্র্যাফিক পুলিশের কর্মীরা বাসিন্দাদের মোটরবাইকটি দিয়ে দিতে বলেন। এলাকাবাসী দাবি করেন, অভিযুক্তকে গ্রেফতার না করা পর্যন্ত মোটরবাইক দেওয়া হবে না। শুরু হয় অবরোধও। দু’দিকে দাঁড়িয়ে পড়ে কয়েকশো যানবাহন। পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে বচসা শুরু হয়। পুলিশ শেষমেশ মোটরবাইকটি উদ্ধার করে কিয়স্কে এনে রাখে। এর পরেই কিয়স্কে শুরু হয় ভাঙচুর। সিসি ক্যামেরা, রেকর্ডার, মাইক্রোফোন, সব ভেঙে দেওয়া হয়েছে বলে জানা যায়। অণ্ডাল থানা থেকে পুলিশের বড় বাহিনী এসে শেষমেশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। ঘণ্টা দুয়েক বাদে যান চলাচল পুরোপুরি স্বাভাবিক হয়।
বাসিন্দাদের অভিযোগ, জাতীয় সড়কের ওই মোড়ে অস্থায়ী ধাতব রেলিং লাগিয়ে ‘জিগজ্যাগ ট্র্যাফিক ব্যবস্থা’ চালু করেছে পুলিশ। এতে চালকদের অনেকেরই সমস্যা হচ্ছে। সেই কারণে মাঝেসাঝেই সেখানে দুর্ঘটনা ঘটছে। স্থানীয় বাসিন্দা সমীর বাগদি, মুন্না রায়দের ক্ষোভ, ‘‘ট্র্যাফিক পুলিশের গাফিলতির জন্যই বার বার দুর্ঘটনা ঘটেছে। ট্র্যাফিক সামলানোর নাম করে তাঁরা অন্য কাজে ব্যস্ত থাকেন।’’
ট্র্যাফিক পুলিশ অভিযোগ অস্বীকার করেছে। ট্র্যাফিক পুলিশের এক আধিকারিক জানান, তাঁরা দিনভর যানবাহনের চলাচল নিয়ন্ত্রণ করেন। এমনকি, রাতে ট্রাক চালকদের ঝিমুনি কাটাতে জল খাওয়ানো, ধারাবাহিক সচেতনতা প্রচারও চালানো হয়। সেই সঙ্গে ওই আধিকারিক বলেন, ‘‘আমরা চাই না একটিও দুর্ঘটনা হোক। তবু ঘটে যায়। রাগ গিয়ে পড়ে আমাদের উপরে। চালকদের আরও সচেতন হতে হবে। স্থানীয় বাসিন্দাদেরও সহনশীল হতে হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy