Advertisement
০৫ ডিসেম্বর ২০২৩

দুর্নীতির নালিশ, সরানো হল উপপুরপ্রধানকে

দিনকয়েক আগেই পারিবারিক বিবাদে এক পক্ষের তরফদারি করার অভিযোগ উঠেছিল গুসকরার উপপুরপ্রধান রাখি মাজির বিরুদ্ধে। তিনিও পাল্টা দুর্নীতির অভিযোগ করেছিলেন পুরপ্রধান বুর্ধেন্দু রায়ের নামে। জেলাশাসক, মুখ্যমন্ত্রী ও পুরমন্ত্রীর কাছে অভিযোগ জানিয়ে চিঠিও পাঠিয়েছিলেন। বৃহস্পতিবার কাউন্সিলরদের সভার পরে পদ থেকে অপসারণ করা হল তাঁকেই।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বর্ধমান শেষ আপডেট: ২৯ মে ২০১৫ ০১:০৫
Share: Save:

দিনকয়েক আগেই পারিবারিক বিবাদে এক পক্ষের তরফদারি করার অভিযোগ উঠেছিল গুসকরার উপপুরপ্রধান রাখি মাজির বিরুদ্ধে। তিনিও পাল্টা দুর্নীতির অভিযোগ করেছিলেন পুরপ্রধান বুর্ধেন্দু রায়ের নামে। জেলাশাসক, মুখ্যমন্ত্রী ও পুরমন্ত্রীর কাছে অভিযোগ জানিয়ে চিঠিও পাঠিয়েছিলেন। বৃহস্পতিবার কাউন্সিলরদের সভার পরে পদ থেকে অপসারণ করা হল তাঁকেই। নতুন উপপুরপ্রধান হলেন ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর চাঁদনিহারা মুন্সি।

তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, গুসকরায় পুরপ্রধান ও উপপুরপ্রধানের মধ্যে দ্বন্দ্ব দীর্ঘ দিনের। উপপুরপ্রধানকে সামনে রেখে এক প্রবীণ কাউন্সিলর নিজের কর্তৃত্ব বজায় রাখতেন বলেও কাউন্সিলরদের একাংশের দাবি। কিছু দিন আগে গুসকরার হাটতলায় একটি পারিবারিক বিবাদকে ঘিরে বুর্ধেন্দু রায় ও রাখি মাজির দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে চলে আসে। দু’পক্ষই পরস্পরের বিরুদ্ধে বিবৃতি দেন। ওই পরিবারের লোকেরা রাখিদেবী ও তাঁর অনুগামীদের বিরুদ্ধে আউশগ্রাম থানায় অভিযোগও দায়ের করেন। পরে বর্ধমান আদালত থেকে জামিন নিয়ে পুরপ্রধানের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তোলেন তিনি।

তাঁর অভিযোগ, পুরপ্রধানের নির্দেশে ৩২ লক্ষ টাকার একটি রাস্তার কাজকে সাত ভাগে ভাগ করে দরপত্র ডাকা হচ্ছে। বাসস্ট্যান্ডে ১৫ লক্ষ টাকার মাটি ফেলার কাজকেও পুরপ্রধান চার ভাগে ভাগ করেছেন। ই-টেন্ডার এড়িয়ে যেতেই তিনি এ সব করেছেন বলে রাখিদেবীর দাবি। তাঁর লিখিত অভিযোগ, ‘ঠিকাদারদের কাছ থেকে তোলা আদায়ের জন্য পুরপ্রধান ই-টেন্ডার করছেন না। এক কাউন্সিলর মল্লিকা চোঙদারের সাহায্য নিচ্ছেন। এ ভাবে চুরি চলতে থাকলে বহু কাউন্সিলর পদত্যাগ করবেন।’

পুরসভা সূত্রে জানা যায়, এ দিন রাখিদেবী কাউন্সিলরদের সভায় একটি চিঠি দেন। সেখানে তিনি দুর্নীতির পাশাপাশি পুরপ্রধান তাঁকে ‘নিচুজাত’ বলে সম্বোধন করে কুপ্রস্তাব দিয়েছেন বলে অভিযোগ করেন। ওই সভায় অবশ্য দলমত নির্বিশেষে সব কাউন্সিলর এক হয়ে পুরপ্রধানের নামে ব্যক্তিগত কুৎসা করার জন্য রাখিদেবীর বিরুদ্ধে নিন্দা প্রস্তাব নেওয়া হয়। আর দুর্নীতির অভিযোগে তদন্তের দাবি তোলেন বিরোধী দলনেতা সিপিএমের মনোজ সাউ। সভা শেষ হওয়ার পরে পুরপ্রধান নিজের ঘরে সমস্ত কাউন্সিলরকে ডেকে রাখিদেবীকে সরানোর সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেন। বুর্ধেন্দুবাবুর অভিযোগ, “পছন্দের ঠিকাদারদের কাজ দেওয়ার জন্য নিয়মিত চাপ দিচ্ছিলেন উপপুরপ্রধান। তার উপর পারিবারিক বিবাদে জড়িয়ে পরা, চড়া সুদে মহাজনি ব্যবসা শুরু, নেশা করে দফতরে আসার মতো বিষয়গুলির প্রতিবাদ করায় ব্যক্তিগত কুৎসা ছড়াচ্ছেন আমার নামে। এর প্রভাব দফতরে এসে পড়ছে বলেই বাধ্য হয়ে পদ থেকে সরিয়ে দিতে হল।” তিনি জানিয়েছেন, রাখিদেবীর বিরুদ্ধে মানহানি মামলা করবেন তিনি। পুরপ্রধানের পাশে দাঁড়িয়ে আর এক কাউন্সিলর মল্লিকা চোঙদারও বলেন, “রাখিদেবী যে ভাবে হুমকি দিয়ে চিঠি দিয়েছেন, ওনাকে না সরালে পুরসভায় কাজ করতে সবাই ভয় পেত।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement

Share this article

CLOSE