ইভিএম বাক্সবন্দি হতে না হতেই ‘ভোট লুঠ’ আটকানোর চেষ্টা করার মাসুল দিতে হয়েছিল সিপিএমের দুই এজেন্টকে। বাড়ি ফেরার পথে লাঠি-রড দিয়ে পিটিয়ে খুন করা হয়েছিল খণ্ডঘোষের ফজল হক ও দুখীরাম ডাল নামে দুই প্রবীণ সিপিএম কর্মীকে। ফল বেরোনোর পরেও লোধনা গ্রামে ওই দুই পরিবারের উপর হামলা চলেছিল বলে অভিযোগ। এ বার জোড়া খুনের মামলার সিবিআই তদন্ত চেয়ে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করলেন ওই দুই পরিবার।
দুই পরিবারের আইনজীবী রবিশঙ্কর চট্টোপাধ্যায় জানান, মামলার আবেদনে বলা হয়েছে, খুনের ঘটনায় মূল অভিযুক্তদের পুলিশ গ্রেফতার করছে না। রাজ্য পুলিশের তদন্তে সন্তুষ্ট নন দুই সিপিএম কর্মীর পরিবারের লোকজন। বিচার পেতে তাই সিবিআই তদন্ত চেয়েছেন তাঁরা।
২১ এপ্রিল, চতুর্থ দফা ভোটে লোধনা গ্রামের সিপিএমের এজেন্ট হয়েছিলেন ফজল শেখ। সঙ্গী ছিলেন প্রবীণ সিপিএম কর্মী দুখীরাম ডাল। অভিযোগ, বুথ থেকে মল্লিকপাড়ার দিকে যাওয়ার সময় বোমাবাজি শুরু করে তৃণমূলের লোকেরা। পরে বাড়ির কাছে একটি কালভার্টের উপর ফজল শেখকে ফেলে লাঠি, বাঁশ দিয়ে মারধর ও কোপানো হয়। হাত-পায়ের শিরা কেটে দেওয়া হয় বলেও অভিযোগ। প্রথমে খণ্ডঘোষ প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে পুলিশের হাতে অভিযোগ জমা দেন ফজল শেখের স্ত্রী হেনা বিবি। পরে খণ্ডঘোষের তৃণমূল প্রার্থীর নেতৃত্বে তাঁর বাবা ও দুখীরাম ডালকে লাঠি, টাঙি দিয়ে খুন করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন ফজল শেখের ছেলে সজল।
ভোটের ফল বেরোনোর পরে ওই দুই পরিবারের উপর হামলা, দোকান খুলতে না দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। সিপিএম নেতারা অভিযোগ করেন, মূল অভিযুক্ত ধরা পড়া তো দূর, গ্রামে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। অথচ পুলিশের হেলদোল নেই। জেলা পুলিশ সুপারের কাছে সিআইডি তদন্তের দাবিও জানান সিপিএমের জেলা সম্পাদকণ্ডলীর সদস্য উদয় সরকারের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল। এ দিনও সিপিএম নেতারা অভিযোগ করেন, খুনে অভিযুক্তরা গ্রামের দশ কিলোমিটারের মধ্যে ঘোরাফেরা করছে। রাতে গ্রামে ঢুকে ওই দুই নিহত কর্মীর বাড়িতে হামলার পরিকল্পনাও চলছে। অথচ পুলিশ পক্ষপাতিত্ব করছে। তাঁদের দাবি, পুলিশ সংঘর্ষ হিসেবে পুরো ঘটনাটিকে দেখাতে চাইছে। সেই কারণে নিহত ফজল হকের ছেলে সজল শেখকেও পুলিশ খুঁজছে। ওই দুই পরিবারেরও দাবি, এত কিছুর পরেও ব্যবস্থা না হওয়ায় রাজ্য পুলিশের তদন্তে অসন্তোষ জানিয়ে হাইকোর্টে সিবিআই তদন্ত চেয়ে মামলা করা হয়েছে। তাঁদের আইনজীবী রবিশঙ্করবাবু জানিয়েছেন, আগামী সোমবার হাইকোর্টের বিচারপতি দীপঙ্কর দত্তের আদালতে মামলাটির শুনানির সম্ভাবনা রয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy