জলের স্রোত ঢুকছে নরসুমদা কয়লা খনিতে। নিজস্ব চিত্র।
টানা বৃষ্টির মধ্যেই জল ঢুকতে শুরু করল আসানসোলের নরসমুদা কয়লা খনিতে। যদিও শুক্রবার ভোরে এই ঘটনায় সময় কর্মরত শ্রমিকদের দ্রুত বার করে আনা হয়। ফলে কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।
প্রত্যক্ষদর্শীরা রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা ইসিএল-এর মালিকানাধীন এই কোলিয়ারিতে যে ভাবে জল ঢোকা শুরু হয়েছিল, শ্রমিকদের সঠিক সময়ে খনি থেকে বার না করা হলে চাসনালার মতো বড় দুর্ঘটনা আশঙ্কা ছিল। প্রসঙ্গত, ১৯৭৫ সালে তৎকালীন বিহারের (বর্তমান ঝাড়খণ্ড) চাসনালা কয়লা খনিতে জল ঢুকে ৩৭৫ জন শ্রমিক মারা গিয়েছিলেন।
জল কী ভাবে ঢুকল সে বিষয়ে নরসমুদা কয়লা খনির ম্যানেজার নন্দদুলাল সিংহ বলেন, ‘‘কোলিয়ারির চারপাশে তাকিয়ে দেখলেই বোঝা যাবে কী ভাবে অবৈধ খনি গজিয়ে উঠেছে। সেই অবৈধ খনিগুলি অবৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে তৈরি করার হয়েছে। কোনও নিয়ম বা নিরাপত্তার তোয়াক্কা না করে কয়লা উত্তোলন করা হচ্ছে। ফলে বিপদ বাড়ছে বৈধ খনির।’’ তিনি জানান, জল ঢোকার ফলে কার্যত বন্ধ হয়ে গেল নরসমুদা কোলিয়ারির কয়লা উত্তোলন । শুক্রবার সকাল থেকেই এই খনিতে জল ঢুকতে শুরু করায় নিরাপত্তার স্বার্থে কোনও শ্রমিককে খনি গর্ভে নামতে দেওয়া হয়নি সকালে। আর রাতে যাঁরা ছিলেন তাঁদের দ্রুত খনি থেকে তুলে ফেলা হয়।
ইসিএল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে অবশ্য গাফিলতির অভিযোগ তুলেছেন শ্রমিক নেতা রামচন্দ্র সিংহ। শ্রমিক সংগঠন এইআইটিইউসি-র নেতা রামচন্দ্র সিপিআইয়ের প্রাক্তন রাজ্যসভা সাংসদ। তিনি নিজেও প্রাক্তন খনি কর্মী। রামচন্দ্র বলেন, ‘‘তিন দিন ধরে টানা বৃষ্টির পূর্বাভাস পেলেও খনি কর্তৃপক্ষ কোনও পদক্ষেপ করেনি। কর্তৃপক্ষ বিষয়টিতে গুরুত্ব দিলে পাম্প এনে রাখতেন বা অন্য কোনও ব্যবস্থা করতেন।’’
কোলিয়ারির ম্যানেজার নন্দদুলাল অবশ্য বলেন, ‘‘অতি বৃষ্টিতে অবৈধ খনির জল ঢুকেই এই বিপত্তি। বার বার প্রশাসনের কাছে বিভিন্ন ভাবে বলা সত্ত্বেও অবৈধ খনি বন্ধ করার বিষয়টিটে নজর দেওয়া হয়নি। তারই পরিণাম ভোগ করতে হচ্ছ।’’ কবে জল বার করে নরসমুদা কয়লা খনিতে কাজ শুরু হবে, তা বলতে পারেননি তিনি। তবে নন্দদুলালের অভিজ্ঞতা বলছে— এত জল বার করা খুবই কঠিন কাজ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy