বড় বড় ঘাসে ঢেকেছে আলো, আগাছায় ভরেছে ১০৮ শিবমন্দির চত্বরের বাগান। ছবি: জাভেদ আরফিন মণ্ডল।
পর্যটনের মরসুম শুরু হওয়ার আগেই কালনার ১০৮ শিবমন্দির চত্বর ও রাজবাড়ি কমপ্লেক্স সংস্কারের আশ্বাস দিয়েছিল প্রশাসন। তার পরেও বনজঙ্গলে ঢাকা পুরাতাত্ত্বিক নিদর্শন দেখে হতাশ পর্যটকেরা। রবিবার কালনায় বেড়াতে এসে বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভও জানান অনেকেই।
শীত পড়লেই দেশ-বিদেশের পর্যটকদের আনাগোনা শুরু হয় কালনায়। ১০৮ শিবমন্দির, লালজি মন্দির, প্রতাপেশ্বর মন্দির, কৃষ্ণচন্দ্র মন্দির দেখতে আসেন বহু মানুষ। প্রতিবার এই সময়ে কেন্দ্রীয় পুরাতত্ত্ব বিভাগের নজরদারিতে থাকা মন্দিরগুলির সামনে তৈরি হয় ফুলের বাগান। নিজস্বী তোলার ভিড় লেগে যায় সেই বাগানের সামনে। বছর পাঁচেক আগে রাজ্য পর্যটন দফতরের উদ্যোগে মন্দিরেরগুলির সামনে লাগানো হয় বাহারি আলোও। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, করোনা পরিস্থিতি, লকডাউনের জন্য দীর্ঘ দিন মন্দিরগুলি তালা বন্ধ ছিল। নিয়মিত পরিচ্ছন্ন করাও হয়নি। ফলে মন্দির খুলতেই দেখা যায় আশেপাশে তৈরি হয়েছে ঘন জঙ্গল। কোথাও কোথাও জঙ্গল এতটাই বেশি যে ঢেকে গিয়েছে আলোও। এমনকী, আলোগুলিও দীর্ঘ দিন ধরে খারাপ, মন্দির চত্বরে সাপ বার হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন এলাকাবাসী। পরিস্থিতি বদলাতে কালনার মহকুমাশাসকের দফতরে একটি উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক হয় সম্প্রতি। প্রশাসন ও পুরাতত্ত্ব বিভাগের আধিকারিকেরা আশ্বাস দেন, দ্রুত ঝোপ সাফ করার। কিন্তু এ দিন দেখা যায়, পরিচ্ছন্নতা তিমিরেই।
রবিবার ছুটির দিনে বেশ কিছু পর্যটক এসেছিলেন কালনার প্রাচীন পুরাতাত্ত্বিক নিদর্শনগুলি দেখতে। মন্দির চত্বরে ঢুকে কার্যত হতাশা প্রকাশ করেন অনেকেই। কলকাতা থেকে আসা ইন্দ্রনীল বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তাঁর স্ত্রী পায়েল বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘কালনার মন্দিরের কথা অনেক শুনেছি। সুযোগ পেয়েই এলাম। কিন্তু মন্দিরের আশপাশের পরিস্থিতি দেখে মন ভরল না।’’ নৈহাটি থেকে আসা সুভাষ ঘোষাল, দেবরাজ সেনরাও বলেন, ‘‘সোশ্যাল মিডিয়াই প্রচার দেখে কালনায় বেড়াতে আসার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। কিন্তু মন্দিরের চারপাশে অযত্ন বোঝা যাচ্ছে।’’
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, মহকুমাশাসকের দফতরে ওই বৈঠকের পরে ভারতীয় পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণের কিছু লোকজন ঝোপঝাড় পরিষ্কার করতে শুরু করেন। কিন্তু কাজ পুরোপুরি হয়নি। ওই দফতরের তরফে কালনার মন্দিরগুলি দেখাশোনার দায়িত্বে থাকা গঙ্গা দাস বলেন, ‘‘১২টি নিদর্শন পরিষ্কারের জন্য পাঁচ জন অস্থায়ী কর্মী রয়েছেন। তাঁরা যেমন সময় পাচ্ছেন কাজ করছেন। প্রতাপেশ্বর মন্দিরের দিকে কিছুটা পরিষ্কারও হয়েছে।’’ কালনার মহকুমাশাসক সুমন সৌরভ মোহান্তি বলেন, ‘‘বৈঠকের পরে কাজ শুরু করার জন্য চিঠি পাঠানো হয়েছিল। আমার কাছে খবর আছে, দরপত্র ডাকার প্রক্রিয়া হয়ে গিয়েছে। দ্রুত রাজবাড়ি এবং ১০৮ শিবমন্দির চত্বর পরিষ্কার হয়ে যাবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy