ছেলেমেয়েদের স্কুলে পৌঁছলেন অভিভাবকেরা। নিজস্ব চিত্র।
পরপর পুলকার দুর্ঘটনার পরে রাজ্যের বিভিন্ন এলাকার মতো আসানসোলেও অভিযানে নেমেছে মহকুমা প্রশাসন। কিন্তু অভিযান শুরু হতে না হতেই শুক্রবার থেকে লাগাতার ধর্মঘটে নামলেন পুলকার চালকেরা। এর জেরে শিল্পাঞ্চল জুড়ে কয়েক হাজার পড়ুয়া বিপাকে পড়েছে।
সম্প্রতি জেলাশাসক সৌমিত্র মোহন পুলকার অভিযানের জন্য জেলার প্রতিটি মহকুমার পরিবহণ দফতরকে নির্দেশ দিয়েছেন। তারপরেই লোকো ফুটবল স্টেডিয়ামের উল্টো দিকে, এলআইসি লাগোয়া জি টি রোড, বিএনআর মোড়-সহ মহকুমার বিভিন্ন প্রান্তে অভিযানে নেমেছেন পরিবহণ দফতরের কর্মীরা। প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, অভিযানে নেমে নিয়মিত পুলকারগুলির বৈধতা ও ফিট সার্টিফিকেট প্রভৃতি বিষয় খতিয়ে দেখা হচ্ছে। পরিবহণ দফতরের আধিকারিকেরা জানান, বহু জায়গায় পেট্রোলের গাড়ি এলপিজি গ্যাসে চালানো হচ্ছে। বেশির ভাগ গাড়িরই নেই প্রয়োজনীয় কাগজপত্র। বেশ কয়েকটি ক্ষেত্রে ঝাড়খণ্ড ও বিহার থেকে ভুয়ো নম্বর এনে পুলকার চালানো হচ্ছে। কয়েকটি অটো আবার কেরোসিনে চলছে। অধিকাংশ পুলকার আবার বেশি মুনাফার আশায় বাড়তি পড়ুয়া চাপাচ্ছে। কোথাও আবার পুলকারগুলি বাণিজ্যিক নম্বরের বদলে ব্যক্তিগত নম্বরে চলছে। এমন কোনও অনিয়ম দেখলেই জরিমানা, চালকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা সবই নেওয়া হচ্ছে।
পুলকার চালকদের দাবি, অবিলম্বে অভিযান বন্ধ করতে হবে। গাড়ির কাগজপত্র তৈরির জন্য সময় দেওয়ারও দাবি জানিয়েছেন তাঁরা। আচমকা পুলকার ধর্মঘট শুরু হওয়ায় বিপাকে পড়েছে স্কুলের পড়ুয়ারা। এ দিন আসানসোলের বিভিন্ন এলাকাতেই পড়ুয়াদের দুর্ভোগের ছবি দেখা গিয়েছে। এক পড়ুয়া জানায়, যাত্রীবাহী বাসে চেপে স্কুলে এসেছে। অনেক অভিভাবক আবার ছেলেমেয়েদের স্কুলে পৌঁছে দিয়েছেন। প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, পরিবহণমন্ত্রীর নির্দেশ অনুসারে স্কুল কর্তৃপক্ষ ও অভিভাবকদের আবেদন জানানো হচ্ছে, কোনও পুলকারে অনিয়ম দেখলে সেই গাড়িতে পড়ুয়াদের যাতে না চাপানো হয়।
সংখ্যায় খুবই কম হলেও এ দিনও পথে নেমেছে কয়েকটি পুলকার। সেই রকম একটি গাড়ির চালক বলেন, ‘‘বিধি মানা আমাদের দায়িত্ব। তাই ধর্মঘটে সামিল হইনি।’’ আইএনটিটিইউসি অনুমোদিত মোটর ট্রান্সপোর্ট ইউনিয়নের সম্পাদক রাজু অহলুওয়ালিয়া জানান, পুলকার চালকদের সঙ্গে বৈঠক করেও লাভ হয়নি। রবিবার ফের বৈঠক রয়েছে।
তবে আসানসোলের মহকুমাশাসক প্রলয় রায়চৌধুরী জানিয়ে দিয়েছেন, ‘‘পুলকার অভিযান কোনও ভাবেই বন্ধ করা হবে না। সবাইকে বৈধ কাগজ তৈরি করতে হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy