পড়ুয়াদের দেখানো হল জঙ্গল। নিজস্ব চিত্র
প্রায় বছর পাঁচেক আগে রাজ্য সরকার ঘোষণা করেছিল, কাঁকসার শিবপুর থেকে দেউল পর্যন্ত প্রায় ১০ কিলোমিটার জঙ্গল-ট্রেকিংয়ের ব্যবস্থা করা হবে। বন দফতর তা চালুও করে। কিন্তু কোভিড পরিস্থিতিতে দু’বছর তা বন্ধ ছিল। ফের তা পুরোদমে চালু করতে বিভিন্নপরিকল্পনা নিয়েছে বন দফতরের বর্ধমান ডিভিশন।
দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, শিবপুর বিট অফিস থেকে এই ট্রেকিং শুরু করা যায়। শেষ হবে দেউল এলাকায়। মাঝে পড়বে শ্যামারূপা মন্দির। ঘন জঙ্গলের মধ্যে দিয়ে গিয়েছে এই পথ। জঙ্গলে রয়েছে বহু প্রাচীন গাছ। রয়েছে শাল, পিয়াল, মহুয়া, সেগুন, শিশু এবং ভেষজের বিপুল সম্ভার। রয়েছে ফলের গাছও। ট্রেকিংয়ের রাস্তাটি কোথাও পাথুরে, আবার কোথাও উঁচু-নিচু অসমতল মাটির উপর দিয়ে গিয়েছে। সরকারি ভাবে এইি রুটটি ২০১৮-য় চালু হলেও, এখনও সে ভাবে জনপ্রিয়তা পায়নি বলেই স্থানীয়দের পর্যবেক্ষণ। বন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, এ পর্যন্ত প্রায় শ’খানেক ‘ট্রেকার’ এই রাস্তায় হেঁটেছেন। তবে পথে তাঁরা নানা সমস্যাতেও পড়েছেন।
এই পরিস্থিতিতেই রুটটিকে আরও আকর্ষণীয় করতে বন দফতর বেশ কিছু পরিকল্পনা নিয়েছে। বন দফতরের অতিরিক্ত প্রধান মুখ্য বনপাল (দক্ষিণ-পূর্ব চক্র) কল্যাণ দাস জানান, এখানে প্রকৃতিকে ভালবেসেই মানুষ আসেন। তাঁর কথায়, “সে জন্য রুটটির নাম দেওয়া হয়েছে, ‘বেঙ্গল নেচার ট্রেল’।” তিনি জানাচ্ছেন, প্রকৃতি, পুরনো গাছ, ইতিহাস, সবই রয়েছে এ পথে। তাঁর পরামর্শ, কেউ চাইলে শিবপুর থেকে ট্রেক শুরু করে শ্যামারূপার মন্দির পর্যন্ত যেতে পারেন। আবার দেউলের দিক থেকে শুরু করে ছ’কিলোমিটার পর্যন্ত শ্যামারূপার মন্দিরেও শেষ করা যেতে পারে ট্রেকিং। পুরো পথটিতে বন দফতরের তরফে এক জন গাইডও থাকবেন। ‘বনসুরক্ষা কমিটি’র সদস্যেরা গাইডের কাজ করবেন। তাঁদের উপার্জনও হবে। রুটে ট্রেকারদের সুবিধার জন্য বিশ্রামের জায়গা, পানীয় জল, শৌচাগারের ব্যবস্থাও করা হবে। থাকছে দু’টি নজরমিনার(‘ওয়াচ টাওয়ার’)।
পরিকল্পনার অঙ্গ হিসেবে রবিবার কুলডিহা শহিদ সুকুমার বান্যার্জি মেমোরিয়াল স্কুলের প্রায় ২৫ জন পড়ুয়াকে বন দফতর এই পথে নিয়ে যায়। ট্রেকিং রুট, বিভিন্ন গাছপালার সঙ্গে তাদের পরিচয় করানো হয়। ছিলেন বন দফতররের দুর্গাপুরের রেঞ্জার সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি জানান, এলাকার বিভিন্ন স্কুলের পড়ুয়াদের এই জায়গাটি সম্পর্কে উৎসাহ তৈরির জন্যই এমন কর্মসূচি। আগামী দিনে অন্য স্কুলের পড়ুয়াদেরও এখানে আনা হবে।
এ দিন ওই দলটিতে ছিল পড়ুয়া উদিত বাসুরী, মোহর বন্দ্যোপাধ্যায় প্রমুখ। তারা বলে, “এ ভাবে এত গভীর জঙ্গলে কোনও দিন আসিনি। অনেক কিছু জানতে পারলাম।”
ডিএফও (বর্ধমান) নিশা গোস্বামী জানান, ট্রেকারদের থেকে ৫০ টাকা করে এবং গাইডের জন্য দল পিছু তিনশো টাকা করে নেওয়া হবে। বন দফতরই গাইডদের প্রশিক্ষণেরব্যবস্থা করবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy