Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
West Bengal Municipal Election 2020

বৃষ্টি হলে বড় রাস্তাও নদী

নিকাশি নালা দিয়ে জল বার না হওয়া, সামান্য বৃষ্টিতেই বড় রাস্তা-গলিতে জল দাঁড়িয়ে যাওয়া নিয়ে ক্ষুব্ধ তাঁরা।

বড় নালার মুখে জমে নোংরা। নিজস্ব চিত্র

বড় নালার মুখে জমে নোংরা। নিজস্ব চিত্র

প্রণব দেবনাথ
কাটোয়া শেষ আপডেট: ০৩ মার্চ ২০২০ ০১:২৫
Share: Save:

জনসংখ্যা বাড়ছে। বাড়ছে বাড়িঘর, দোকানপাট, শপিংমল। কিন্তু দেড়শো বছরের পুরনো নিকাশি ব্যবস্থা সেখানেই থমকে রয়েছে বলে অভিযোগ শহরবাসীর।

নিকাশি নালা দিয়ে জল বার না হওয়া, সামান্য বৃষ্টিতেই বড় রাস্তা-গলিতে জল দাঁড়িয়ে যাওয়া নিয়ে ক্ষুব্ধ তাঁরা। বিরোধীদেরও দাবি, এত বছরেও শহরের ন্যূনতম প্রয়োজনটুকু মেটাতে পারনি পুরবোর্ড।

যদিও পুরসভার দাবি, একটানা বৃষ্টি হলে দিল্লি, মুম্বইয়ের মতো শহরে জল জমে যায়। সেই তুলনায় কাটোয়া শহরে নিকাশির ব্যবস্থা ভাল। সঙ্গে শহরবাসীদেরও সচেতন হওয়া প্রয়োজন বলে জানিয়েছেন পুরপ্রধান। পুর কর্তৃপক্ষের দাবি, অনেক বাসিন্দাই প্লাস্টিকের ক্যারিব্যাগ, বাড়ির আবর্জনা নর্দমায় ফেলে দেন। ফলে, জল ঠিকমতো যেতে পারে না।

শহরের বাসিন্দাদের দাবি, ফরিদপুর কলোনি, পাবনা কলোনি, সার্কাস ময়দান, বিদ্যাসাগরপল্লি, মাধবীতলার মতো বেশ কিছু এলাকায় বৃষ্টি হলেই জল দাঁড়িয়ে যায়। স্থানীয় ব্যবসায়ীদেরও দাবি, কিছুক্ষণ বৃষ্টি হলেও জল জমে যায় রাস্তায়। আর গাড়ি গেলে সেই জল ঢুকে পড়ে দোকানেও। বাধ্য হয়ে দোকানের মেঝেও উঁচু করে নিয়েছেন অনেকে। এর সঙ্গেই পঞ্চবটি পাড়া, খালপাড়া, মণ্ডলপাড়ার ভিতরের নালাগুলি সংস্কারেরও দাবি তুলেছেন এলাকাবাসী।

ক্ষোভ জানিয়েছেন স্থানীয় তৃণমূল কাউন্সিলর প্রণব দত্তও। তিনি বলেন, ‘‘নিকাশি নিয়ে আমাদের এলাকায় মানুষের ক্ষোভ রয়েছে। খালপাড়া এলাকায় সামান্য বৃষ্টিতেই মনে হয় বন্যা হয়েছে।’’ তাঁর দাবি, শহরের চার-পাঁচটি ওয়ার্ডের জল খালপাড়ার ‘স্লুইসগেট’ দিয়ে ভাগীরথীতে পড়ে। বর্ষায় ভাগীরথীর জল বাড়লে ওই গেট বন্ধ রাখতে হয়। ফলে, জমা জলে এলাকা ভাসে। তিনি বলেন, ‘‘এর প্রতিকার হিসেবে একটি শক্তিশালী পাম্প মেশিন বসানোর জন্য পুরসভার বোর্ড মিটিংয়ে বারবার প্রস্তাব দিয়েছি। কিন্তু এখনও তা কার্যকর হয়নি।’’

আগামী পুরভোটে এই সমস্ত বিষয় নিয়েই ময়দানে নামতে চলছে বিরোধীরাও। কাটোয়ার সিপিএম নেতা অঞ্জন চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আমরা ১৯৯৫ সালে পুরসভা ছেড়ে এসেছি। সেই সময়ে শহরের জনসংখ্যা ছিল ৩৮ হাজারের মতো। এখন জনসংখ্যা প্রায় এক লক্ষ। এত দিন ধরে এক জনের হাতে ক্ষমতা থাকলেও কোনও কাজ হয়নি।’’ তাঁর দাবি, সুষ্ঠু পরিকল্পনা করা না হলে দুর্ভোগেই দিন কাটবে শহরবাসীর। বিজেপির জেলা সভাপতি (কাটোয়া) কৃষ্ণ ঘোষেরও কটাক্ষ, ‘‘অনেক জায়গাতেই নিকাশি নালা দিয়ে বিপরীত দিকে জল বইতে দেখা যায়। দিনের পর দিন জল দাঁড়িয়ে থাকে। তৃণমূলের উন্নয়নের ফানুস মানুষ বুঝে গিয়েছেন।’’

তবে কাটোয়ার বিধায়ক তথা পুরপ্রধান রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় জানান, এই শহরের এক দিকে, ভাগীরথী, অন্য দিকেল অজয় নদ রয়েছে। শহরটা গামলার মতো। স্বভাবতই নিকাশির সমস্যা রয়েছে। তাঁর দাবি, ‘‘আমরা নিকাশি ব্যবস্থার অনেক উন্নতি করেছি। প্রধান রাস্তাগুলি রাস্তা উঁচু করা হয়েছে। নতুন হাইড্রেন করা হয়েছে। বর্ষাকালে বিভিন্ন জায়গায় পাম্প চালিয়ে জল বার করে দেওয়া হয়।’’ তাঁর দাবি, ‘‘মানুষ উন্নয়নের নিরিখেই আমাদের ভোট দেবেন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE