Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪
Crime

Crime: ক্ষণিকে জিপিএস খুলে আস্ত ট্যাঙ্কার গায়েব! আসানসোলে ফাঁদ পেতে ‘ভেলকি’ ছিনতাইবাজদের

গত ৪ মে রাজস্থান থেকে বাঁকুড়াগামী একটি ভোজ্যতেলের ট্যাঙ্কার আসানসোল থেকে উধাও হয়। তার তদন্তে নামে পুলিশ।

উদ্ধার হওয়া ট্যাঙ্কারের অংশ।

উদ্ধার হওয়া ট্যাঙ্কারের অংশ। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
আসানসোল শেষ আপডেট: ১৩ জুলাই ২০২১ ১৬:৩৫
Share: Save:

আসানসোলের কাছে জাতীয় সড়কে রাজস্থান থেকে আসা ভোজ্যতেল‌‌বাহী একটি ট্যাঙ্কার স্রেফ ‘লোপাট’ হয়ে গিয়েছিল। গত মে মাসের ওই ঘটনার তদন্তে নেমে বড়সড় সাফল্য পেল আসানসোল-দুর্গাপুর কমিশনারেট। ট্যাঙ্কারটির ‘জিপিএস’ কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে খুলে কী ভাবে সাত লক্ষ টাকার ভোজ্যতেল-সহ ওই ট্যাঙ্কার নিয়ে চম্পট দিয়েছিল দুষ্কৃতীরা মঙ্গলবার সেই রহস্য ফাঁস করলেন পুলিশকর্তারা। জানালেন, তাঁদের জালে ধরা পড়েছে ছ’জন। তবে মতলব খান নামে ওই চক্রের মূল পাণ্ডাকে এখনও খোঁজা হচ্ছে।

পুলিশের দাবি, দীর্ঘ দিন ধরেই জাতীয় সড়কে ট্যাঙ্কার ছিনতাই করছিল একটি চক্র। গত ৪ মে রাজস্থান থেকে বাঁকুড়াগামী এমনই একটি ভোজ্যতেলের ট্যাঙ্কার আসানসোল থেকে লোপাট হয়ে যায়। ট্যাঙ্কারটির মালিক গুজরাট নিবাসী। কয়েক দিন পর তিনি জানতে পারেন, ট্যাঙ্কারের চালক এবং খালাসি ওড়িশার বালেশ্বরে একটি হাসপাতালে ভর্তি। তাঁদের বয়ানের ভিত্তিতেই গত ১০ মে আসানসোল উত্তর থানায় অভিযোগ দায়ের করেন তিনি। অভিযোগে জানান, গত ৪ মে রাত ১০টা থেকে সাড়ে ১০টার মধ্যে চালক এবং খালাসিকে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে বেহুঁশ করে ট্যাঙ্কারটি লুঠ করা হয়।

তদন্তে নেমে কমিশনারেটের তরফে যোগাযোগ করা হয় রাজ্যের সব থানার সঙ্গে। এর পর স্রেফ সন্দেহের বশে হাওড়া সিটি পুলিশ ইমরান খান এবং বসন্ত জয়সওয়াল নামে দু’জনকে গ্রেফতার করে। তাদের জেরা করেই গোটা চক্রটি সম্পর্কে নানা তথ্য আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের হাতে আসে। জানা যায়, আন্তঃরাজ্য ওই ট্যাঙ্কার পাচার চক্রের অন্যতম পাণ্ডা মনজিন্দ্র সিংহ সান্ধু নামে অসমের তিনসুকিয়ার এক বাসিন্দা। এর পর তাকে দমদম বিমানবন্দরের কাছাকাছি আড়াই নম্বর গেট এলাকার একটি হোটেল থেকে গ্রেফতার করা হয়। তদন্তকারীরা জানতে পারেন, মনজিন্দ্র মুম্বই পালানোর ছক কষছিল।

ধৃতদের জেরা পুলিশের।

ধৃতদের জেরা পুলিশের। নিজস্ব চিত্র

ধৃতদের জেরা করে জানা যায়, গত ৪ মে রাতে রাজস্থান থেকে আসা ওই ট্যাঙ্কারটির জিপিএস মাত্র ২৯ সেকেন্ডে খুলে ফেলে দুষ্কৃতীরা। তার পর ট্যাঙ্কার নিয়ে তারা চম্পট দেয়। ট্যাঙ্কারটিতে প্রায় সাত লক্ষ টাকার ভোজ্যতেল ছিল। সেই তেল বিক্রি করে দেওয়া হয়। তবে তা কোথায় বিক্রি করা হয়েছে তা এখনও জানা যায়নি। এখানেই শেষ নয়, লোপাট করা ট্যাঙ্কারটি কেটেও ফেলা হয়েছে খিদিরপুরের একটি গ্যারাজে। তদন্তকারীরা মঙ্গলবার জানিয়েছেন, একটি দল ট্যাঙ্কার ছিনতাই করত। আর একটি দল তেল সংগ্রহ করত। অপর একটি দল ট্যাঙ্কার কেটে নতুন করে যানবাহন বানাত। নতুন করে তার রেজিস্ট্রেশনও করা হত। ওই কাজে জড়িত থাকার অপরাধে গ্রেফতার করা হয়েছে নিজামুদ্দিন খান এবং মহম্মদ আজাদ নামে দু’জনকে। একই সঙ্গে ওই চক্রের মাস্টারমাইন্ড কমলজিৎ সিংহ খাণ্ডেলওয়ালকেও মেটিয়াবুরুজ থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

পশ্চিমবঙ্গ ছাড়াও ঝাড়খণ্ড, বিহার, উত্তরপ্রদেশ-সহ দেশের বিভিন্ন অংশে ছড়িয়ে থাকা ওই চক্রটির কয়েক জন পাণ্ডা-সহ মোট ছ’জনকে গ্রেফতার করা হলেও মূল পাণ্ডা মতলব খান এখনও অধরা। সে আদতে উত্তরপ্রদেশের বালিয়ার বাসিন্দা। সম্প্রতি খিদিরপুরে থাকত। তাকে খুঁজছে পুলিশ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE