এলাকার বেশির ভাগ মানুষ কৃষিজীবী। কিন্তু চাষের জল মিলছে না। প্রশাসনের বিভিন্ন মহলে সেচখালের জন্য দরবার করেও লাভ হয়নি। ভোটের মুখে প্রার্থীদের কাছে পেয়ে এমনই বিভিন্ন অভিযোগ জানাচ্ছেন বর্ধমানের আউশগ্রামের বিভিন্ন এলাকার চাষিরা। সেচ না থাকার বিষয়টিকে হাতিয়ার করে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলগুলিও লাভের গুড় ঘরে তুলতে চাইছে।
আউশগ্রাম ১, ২ ব্লক ও গুসকরা পুর এলাকা নিয়ে গঠিত আউশগ্রাম বিধানসভা কেন্দ্র। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এই বিধানসভা কেন্দ্রের অধিকাংশ বাসিন্দাই রুজির জন্য চাষের জন্য নির্ভর করেন। ধান, আলু ও বিভিন্ন ডাল শস্য-সহ বিভিন্ন ফসলের চাষ হয় এই এলাকায়। তবে চাষের এলাকা অর্থনীতি নির্ভর করলেও প্রতিবারই জল নিয়ে সমস্যায় পড়তে হয় চাষিদের।
চাষিদের অভিযোগ, আউশগ্রাম ১ ও ২ ব্লকের বিস্তীর্ণ এলাকায় উপযুক্ত সেচের ব্যবস্থা নেই। প্রশাসনের সূত্রে জানা গিয়েছে, আউশগ্রাম ১ ব্লকে চাষ-জমির পরিমাণ ১৮,২০০ হেক্টর। তার মধ্যে মোটে আট হাজার হেক্টর জমি সেচের আওতায় রয়েছে। তবে তার সবটাই সেচখাল নয়। সাবমার্সিবল পাম্প ও নদী সেচ থেকেও জলের জোগান মেটানো হয়। বার্ষায় আবার বহু জমি জলে তলিয়ে যায় বলে জানান চাষিরা। আউশগ্রামের উদয় বন্দ্যোপাধ্যায়, তপন পালদের বক্তব্য, ‘‘সেচের জলের অভাবে অনেকেই বোরো চাষ করতে পারেন না। আবার বর্ষায় বৃষ্টি কম হলেও চাষের ক্ষতি হয়।’’
একই হাল আউশগ্রাম ২ ব্লকেও। ব্লক প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, এখানে ২৪০০০ হেক্টর চাষ-জমির মধ্যে সেচের আওতায় রয়েছে মোটে ন’হাজার হেক্টর জমি। বাসিন্দারা জানান, এই ব্লকের ভাল্কি, অমরপুর ও দেবশালা পঞ্চায়েত এলাকায় সমস্যা সবথেকে বেশি। বাসিন্দারা জানান, দেবশালা পঞ্চায়েত এলাকায় একটি সেচখাল রয়েছে। কিন্তু সেটিরও পরিকাঠামোগত ত্রুটি থাকার জেরে সব জমিতে জল পৌঁছয় না বলে জানান চাষিরা।
জল-সমস্যা নিয়ে সরব হয়েছেন সব দলের প্রার্থীরাই। তৃণমূল প্রার্থী অভেদানন্দ থান্ডারের অভিযোগ, ‘‘চাষিদের সমস্যা মেটাতে কোনও উদ্যোগ নেননি সিপিএম বিধায়ক। এলাকার বাসিন্দারাই সে কথা বলছেন।’’ যদিও বিদায়ী বিধায়ক তথা এ বারের সিপিএম প্রার্থী বাসুদেব মেটে বলেন, ‘‘শেষ পাঁচ বছরে বিধানসভায় বারবার সোচ্চার হয়েছি বিষয়টি নিয়ে। কয়েকটি প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছে। চেষ্টা করা হবে, যাতে গোটা এলাকা সেচের আওতায় আসে।’’
এ সব রাজনৈতিক তরজায় অবশ্য বিশ্বাস নেই চাষিদের। এক চাষি বলেন, ‘‘ভোট তো মিটে যাবে। জলটা মিলবে কবে?’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy