লক্ষ্মীর ভান্ডার প্রকল্পের টাকা দিতে অস্বীকার করায় বিবাহিত প্রেমিকার সঙ্গে অশান্তি প্রেমিকের। ব্ল্যাকমেলও করা হয়। সে সব সহ্য করতে না পেরে আত্মহত্যা করেছেন ওই বধূ!এমনই অভিযোগ উঠল পূর্ব বর্ধমানের ভান্ডারডিহিতে। ‘অস্বাভাবিক মৃত্যু’র তদন্তে মৃতার প্রেমিকের ভূমিকা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। চলছে তাঁর খোঁজ।
পুলিশ সূত্রে খবর, মৃতার নাম মন্দিরা মালিক। বয়স ৩২ বছর। মন্দিরার শ্বশুরবাড়ি দেওয়ানদিঘি থানার ভান্ডারডিহিতে। বাপেরবাড়ি ভাতার থানা এলাকায়। গত বৃহস্পতিবার দুপুরে ভান্ডারডিহিতে খড়ি নদীর চরে গিয়ে তিনি কীটনাশক খান বলে অভিযোগ। স্থানীয় বাসিন্দারা তাঁকে অচৈতন্য অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে শ্বশুরবাড়িতে খবর দেন। পরিবারের লোকজন তাঁকে উদ্ধার করে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি করিয়ে ছিলেন। কিন্তু শনিবার ভোরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয়েছে মন্দিরার।
পরিবারের দাবি, মাস ছয়েক আগে সমাজমাধ্যমে এক যুবকের সঙ্গে পরিচয় হয়েছিল বধূর। ধীরে ধীরে সমাজমাধ্যমের ওই বন্ধুর সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠতা বাড়ে। এ নিয়ে বাড়িতে অশান্তি হচ্ছিল। তখন সেই যুবকই নাকি মন্দিরাকে শ্বশুরবাড়ি ছাড়ার জন্য চাপ দেন। প্রেমিকের জন্য কিছু দিন আগে এক বার বাড়ি ছেড়ে চলেও গিয়েছিলেন বধূ। পরে পরিবার এবং সন্তানের কথা ভেবে বাড়ি ফিরে আসেন। তখন তাঁকে ফের মানসিক নির্যাতন করতে শুরু করেন প্রেমিক।
মন্দিরার মৃত্যুর পরে শ্বশুরবাড়ির অভিযোগ, ‘‘প্রেমিক ওর আপত্তিকর ছবি ভাইরাল করার হুমকি দেন। তা উপেক্ষা করায় ফোন করে চাপ সৃষ্টি করছিলেন ওই যুবক। ওঁর কাছে না গেলে শ্বশুরবাড়িতে ওই সব ছবি পাঠানো হবে বলে হুমকি দিয়েছিলেন। সম্মানরক্ষায় বাধ্য হয়ে মন্দিরা প্রেমিকের কাছে গিয়েওছিলেন।’’ পরিবারের আরও দাবি, গত বুধবার লক্ষ্মীর ভান্ডারে পাওয়া টাকা তুলে আনতে মন্দিরাকে চাপ দেন তাঁর প্রেমিক। কিন্তু মন্দিরা জানান, ওই টাকা তাঁর সন্তানদের পড়াশোনার জন্য রেখেছেন। ওই টাকায় হাত দেবেন না। তা নিয়ে দু’জনের মধ্যে জোর অশান্তি হয়। তার পরেই বাড়ি ফিরে কীটনাশক খেয়ে আত্মহত্যা করতে যান মন্দিরা।
আরও পড়ুন:
বধূর মৃত্যুতে অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে তদন্ত করছে দেওয়ানদিঘি থানার পুলিশ। মৃতার বাবা এক যুবকের সঙ্গে মেয়ের বাড়ি থেকে চলে যাওয়ার বিষয়টি স্বীকার করেছেন। সকলের সমস্ত দাবি এবং অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে পুলিশ সূত্রে খবর।