ইদের সকালে লাউদোহায় গুলির ঘটনায় মৃত্যু হল আরও এক জনের। মঙ্গলবার ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয়েছিল শেখ আমিনের। মাথায় গুলি লেগে জখম হন শেখ মোজাহার হোসেন (৩০)। বুধবার রাতে দুর্গাপুরের এক বেসরকারি হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়।
গোটা ঘটনায় বুধবার রাত পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। যেখানে খুনের ঘটনাটি ঘটে, সেই কৈলাসপুরে মঙ্গলবার রাতে অভিযুক্তদের বাড়িতে তল্লাশি চালায় পুলিশ। কিন্তু কাউকেই পাওয়া যায়নি বলে পুলিশ জানিয়েছে। এলাকায় একটি অস্থায়ী ক্যাম্প করেছে পুলিশ।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, কৈলাসপুরেরই বাসিন্দা মোজাহার গ্রামে টিউশন দিতেন। কয়েক মাস আগে তাঁর বিয়ে হয়। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মোজাহারের বিরুদ্ধে কখনও কোনও দুষ্কর্মের অভিযোগ ছিল না। দুর্গাপুরের-ফরিদপুরের বিডিও শুভ সিংহরায় বলেন, ‘‘গুলিগোলার মাঝে পড়ে এমন এক জন বাসিন্দার প্রাণ হারানো খুবই দুঃখজনক।’’
মঙ্গলবার সকালে নমাজ পাঠের পরে গ্রামের ইদগাহ থেকে বেরোতেই গুলি চালায় দুষ্কৃতীরা। ঝাঁঝরা হয়ে যান আমিন। বেআইনি কয়লা কারবার, খুন-সহ নানা অভিযোগে কয়েক বার জেল খেটেছেন তিনি। পরিবারের অভিযোগ, আমিনের এক সময়ের অনুগামী শেখ শাজাহান ও তার দলবলই খুনের ঘটনায় জড়িত। শাজাহান, শেখ সাকিবুল, শেখ কাশেম-সহ মোট দশ জনের নামে লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে পুলিশের কাছে।
কয়লা কারবারে কর্তৃত্ব নিয়ে এই এলাকায় বারবার খুন-পাল্টা খুনের ঘটনা ঘটেছে। এক সময় শেখ সেলিম এই কারবার নিয়ন্ত্রণ করতেন। আমিন ছিলেন তাঁর ডান হাত। পরে আমিন ও সেলিমের মধ্যে দূরত্ব তৈরি হওয়ায় দু’পক্ষের এলাকা দখলের লড়াই শুরু হয়। ২০১২ সালে খুন হন সেলিম। অভিযুক্তের তালিকায় ছিলেন আমিন ও শাজাহান। ২০১৪-র মাঝামাঝি জেল থেকে বেরোন তাঁরা।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, জেল থেকে বেরিয়ে শাজাহান এলাকায় কর্তৃত্ব দখল করতে শুরু করে। সে নিয়ে আমিনের সঙ্গে দূরত্ব তৈরি হয়। আমিন মোরাম খাদানের ব্যবসা শুরু করেন। আমিনকে চাপে রাখতে শাজাহান-ঘনিষ্ঠ কাসেমও সেই ব্যবসা শুরু করে। পরে আমিন সরে এলেও দু’পক্ষের চাপান-উতোর চলছিলই। এলাকার এক সূত্রের দাবি, কাশেমের মোরাম ব্যবসায় ভাটা ফেলতে আমিন তলে-তলে নানা ছক কষছিলেন বলে শাজাহান-শিবির সন্দেহ করছিল। পুলিশ সূত্রে জানা যায়, এর আগে কয়লার ডিপো নিয়েও দু’পক্ষের অশান্তি হয়েছিল। প্রতাপপুরের খাটগোড়িয়ায় নতুন ডিপো তৈরি শুরু করেন আমিন। কিন্তু শাজাহানের লোকজন নানা ভাবে ‘বিরক্ত’ করছিল। এমনকী, কাছেই নিজেদের একটি ডিপো তৈরি করে তারা। আমিন ডিপো গুটিয়ে নেন। কিন্তু ফোনে পরস্পরকে হুমকি, কারবারে বাগড়া দেওয়ার চেষ্টা চলছিলই বলে অভিযোগ।
পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, অজয় পেরিয়ে অভিযুক্তেরা বীরভূমে আশ্রয় নিয়েছে। এই এলাকা লাগোয়া বীরভূমের থানাগুলিকে সতর্ক করা হয়েছে বলে জানায় পুলিশ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy