এ বছর বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্ন্তগত কলেজগুলিতে অনলাইন পদ্ধতিতে ভর্তি প্রক্রিয়া স্থগিত করে দেওয়ার সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে সরব হল এসএফআইয়ের বর্ধমান জেলা কমিটি।
সোমবার এক সাংবাদিক বৈঠকে এসএফআইয়ের জেলা সভাপতি সুব্রত সিদ্ধান্ত জানান, গত বছর বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ে অনলাইন ভর্তি প্রক্রিয়াকে স্বাগত জানানোর সঙ্গেই এই পদ্ধতির বিভিন্ন ত্রুটি দুর করার দাবি জানানো হয়েছিল। কিন্তু বর্তমান শিক্ষাবর্ষে অনলাইন পদ্ধতির বদলে পুরনো ফর্ম বিলি করে ভর্তির যে সিদ্ধান্ত সরকার নিয়েছে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় সেটাই অনুসরণ করায় এসএফআই ক্ষুব্ধ।
সুব্রতবাবুর দাবি, “নতুন শিক্ষামন্ত্রী বলেছেন যে বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজের এই অনলাইনে ভর্তির পরিকাঠামো রয়েছে, তারা অনলাইনে ভর্তি করতে পারে। কিন্তু বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় নতুন শিক্ষামন্ত্রীকে খুশি করার পুরনো পদ্ধতিতে ভর্তি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এর ফলে কলেজগুলিতে অশান্তি হবে।” অনার্স পাঠ্যক্রমে ভর্তি নিয়ে টাকার খেলাও চলবে বলে দাবি করেন তিনি।
জেলা এসএফআইয়ের অভিযোগ, গতবার হুগলির সিঙ্গুর কলেজ ও বাঁকুড়ার কাঠিয়াবাবা কলেজে শতকরা ৪৫ ভাগের চেয়ে কম নম্বর পাওয়া ছাত্রছাত্রীদেরও অনার্স পাঠ্যক্রমে ভর্তি করিয়েছিল টিএমসিপি। এই বিষয়ে আলোচনার জন্য বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য স্মৃতিকুমার সরকারের কাছে সময় চেয়েও পাওয়া যায়নি বলে দাবি করেছেন এসএফআইয়ের জেলা সম্পাদক।
বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের কলেজসমূহের পরিদর্শকের দফতর থেকে জানানো হয়েছে, আগামী ১০ জুনের মধ্যে সমস্ত কলেজকে অনার্স পাঠ্যক্রমে ভর্তির ফর্ম দেওয়া শুরু করতে হবে। অন লাইন পদ্ধতিতে কোথাও ভর্তি হবে না। তবে কতদিন ফর্ম দেওয়া হবে, তা স্থির করবে কলেজ কর্তৃপক্ষ।
গত বছর রাজ্যের মধ্যে প্রথম বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ৮৯টি কলেজে অনার্স পাঠ্যক্রমে ভর্তি করানো হয়েছিল। কিন্তু এ বার বর্ধমান তা করতে পারলো না কেন? উপাচার্য স্মৃতিকুমার সরকার সোমবার বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকে জানিয়েছেন, গত ২৮ ফেব্রুয়ারি রাজ্য সরকার বলেছিল, এ বার থেকে সমস্ত কলেজের পাশ ও অনার্সে ভর্তির জন্য অনলাইন পদ্ধতির সাহায্য নিতে হবে। কিন্তু গত ২৯ মে রাজ্য সরকার ফের নতুন করে জানায়, অনলাইনের বদলে সমস্ত কলেজে ছাত্রভর্তি করা হবে আগের মত ফর্ম বিলি করে।
উপাচার্য বলেন, “আমাদের পক্ষে এত অল্প সময়ের মধ্যে এক সঙ্গে অনার্স ও পাশ পাঠ্যক্রমে অনলাইনে ভর্তি করাবার মত পরিকাঠামো তৈরি করা সম্ভব হবে না। তাই আমরা এবারের মত দুটি ক্ষেত্রেই পুরনো পদ্ধতিতে ভর্তি করাচ্ছি। আগামীবার ফের যাতে অনলাইনে এই ভর্তি প্রক্রিয়া চলতে পারে, তার চেষ্টা করা হবে।”
বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের কলেজসমূহের পরিদর্শক দেবকুমার পাঁজা বলেছেন, “ এবারের মত সমস্ত কলেজে ১০ তারিখের মধ্যে ছাত্র ভর্তি সংক্রান্ত ফর্ম বিলি শুরু করতে নির্দেশ দেওটা হয়েছে কলেজগুলিকে।”
এ দিনই স্থানীয় রায়ান থেকে বর্ধমানে আসার পথে বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের স্নাতকোত্তর পাঠ্যক্রমের ছাত্র চণ্ডীচরণ লেটকে লাঠি ও বাঁশ দিয়ে তৃণমূল মারধর করেছে বলে অভিযোগ করেছে এসএফআই। চণ্ডীচরণবাবু বর্ধমান এসএফআইয়ের সদর লোকাল কমিটির যুগ্ম সম্পাদক। এ বারের লোকসভা নির্বাচনে তিনি সিপিএমের এজেন্ট ছিলেন। অভিযোগ, লোকসভা নির্বাচনে রায়ানের পাঁচটি বুথের মধ্যে দুটিতে সিপিএম জেতার জন্যই এই হামলা হয়েছে।