Advertisement
E-Paper

উখড়ায় স্কুলছাত্রীর অপমৃত্যুতে অভিযুক্তদের সাজা চাইছেন মা

বাড়ির ছোট ছেলেটিকে আঁকড়ে ধরে কাঁদছেন মা। পাড়া-পড়শির চোখে জল। উখড়ার বিশালাক্ষীতলায় বাড়িটা ঘিরে দুপুর থেকেই স্বজন-পড়শির ভিড়। অনেকের বিস্ময়ের ঘোর কাটেনি তখনও। খানিক আগেই ওই বাড়ির এক তলার ঘরে ওড়নার ফাঁসে ঝুলতে দেখা গিয়েছে নবম শ্রেণির ছাত্রীটিকে। ছাত্রীটির মা, কাকলি পাল এক টানা বিলাপ করে চলেছেন, “আমি আর কিচ্ছি চাই না, আমার মেয়ের খুনিদের শাস্তি চাই।”

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১১ ডিসেম্বর ২০১৪ ০১:১২
অভিযুক্তদের ধরার দাবিতে তখনও ছাড়া হয়নি দেহ।—নিজস্ব চিত্র।

অভিযুক্তদের ধরার দাবিতে তখনও ছাড়া হয়নি দেহ।—নিজস্ব চিত্র।

বাড়ির ছোট ছেলেটিকে আঁকড়ে ধরে কাঁদছেন মা। পাড়া-পড়শির চোখে জল।

উখড়ার বিশালাক্ষীতলায় বাড়িটা ঘিরে দুপুর থেকেই স্বজন-পড়শির ভিড়। অনেকের বিস্ময়ের ঘোর কাটেনি তখনও। খানিক আগেই ওই বাড়ির এক তলার ঘরে ওড়নার ফাঁসে ঝুলতে দেখা গিয়েছে নবম শ্রেণির ছাত্রীটিকে।

ছাত্রীটির মা, কাকলি পাল এক টানা বিলাপ করে চলেছেন, “আমি আর কিচ্ছি চাই না, আমার মেয়ের খুনিদের শাস্তি চাই।” কোল ঘেঁষে মায়ের নাগাড়ে প্রলাপ ফ্যালফাল চোখে শুনছে ছোট্ট ছেলেটি। বুধবার দুপুরে বিশালাক্ষীতলার ক্ষোভ আর উষ্মার এই আবহে স্থানীয় স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য নিশীথ মণ্ডল জানিয়ে গেলেন, “এর একটা বিহিত করতেই হবে।” তিনি জানান, ওই ছাত্রী এলাকায় ভাল মেয়ে বলেই পরিচিত ছিল। তার কেন এমন পরিণতি হল বোঝা দায়। তিনিও চাইছেন পুলিশ তদন্ত করে উপযুক্ত শাস্তির ব্যবস্থা করুক। এ দিকে অভিযুক্ত ওই সদ্য যুবাদের সম্পর্কে এলাকাবাসীর জানান, ৬ জনের একটা দল রয়েছে ওই যুবকদের। বাইক নিয়ে এলাকা দাপিয়ে বেড়ানো আর মেয়েদেক উত্যক্ত করার ‘বিশেষ সুনাম’ রয়েছে তাদের। তাদের অনেকেই শুকনো আঠা নিয়ে নিয়মিত নেশা করে বলেও অভিযোগ। এক কথায় এলাকায় ‘খারাপ ছেলে’ বলে পরিচিত তারা। বাসিন্দারাও চাইছেন, শাস্তি হোক ওই ৬ জনেরই।

মৃত নাবালিকা স্থানীয় পুলিনবিহারী বালিকা বিদ্যালয়ের ছাত্রী ছিল। স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা গীতা ভট্টাচার্য জানান, পড়াশোনায় ভালই ছিল সে। স্বভাব মিশুকে মেয়েটি স্কুলে-পাড়ায় সকলেরই বেশ আদরের ছিল। তবে কথায় কথায় অভিমানও ছিল তার। বান্ধবীরা মনে করতে পারছেন সেই সব ছোটখাট অভিমানও। সদ্য শেষ হয়েছে তার স্কুলের বার্ষিক পরীক্ষা। বন্ধুরা জানান, সবাই মিলে ‘মজা’ করার অনেক পরিকল্পনাই ছিল তাদের। সব কেমন তালগোল পাকিয়ে গিয়েছে এক দুপুরেই।

ছাত্রীর আত্মহনন নিয়ে রাজনীতিও কম হচ্ছে না। সিপিএম নেতা ও পাণ্ডবেশ্বরের বিধায়ক গৌরাঙ্গ চট্টোপাধ্যায়ের দাবি “সারা রাজ্যেই নৈরাজ্য ও মেয়েদের উপর অত্যাচার চলছে। এই ঘটনা তারই প্রতিফলন।” তাঁর দাবি, এ রাজ্যের দুষ্কৃতীরা ভাবছে শাসক দলের ঘনিষ্ঠ হলেই পুলিশ নিস্ত্রিয় থাকবে। তিনি জানান, এ দিন বেশ কয়েক জন তৃণমূল সমর্থক ওই ছাত্রীর দেহ তুলে নিয়ে যেতে এসেছিল। কিন্তু সাধারণ মানুষের প্রতিরোধ করায় তা আর সম্ভব হয়নি।

যদিও এ সব অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন রানিগঞ্জের তৃণমূল বিধায়ক সোহরাব আলি। তিনি বলেন, “ঘটনাটি খুবই লজ্জাজনক। এ নিয়ে রাজনীতির অবকাশ নেই। আমরা দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।” যদিও তৃণমূলের অন্ডাল ব্লক সভাপতি কাঞ্চন মিত্রের দাবি, “মূল অভিযুক্তর বাবা দীর্ঘ দিন সিপিএম ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত। বর্তমানে তিনি বিজেপির সঙ্গে রয়েছেন বলে শুনছি।” যা শুনে বিজেপি সভাপতি নির্মল কর্মকার বলেন, “এই মর্মান্তিক ঘটনার মধ্যেও তৃণমূল বিজেপি-র ভূত দেখছে!’’

ukhra school student uncertain death
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy