Advertisement
১৯ মে ২০২৪

কালনায় তৃণমূল ছাড়তে চান আর এক নেতা

জেলা পরিষদ সদস্য শান্তি চালের পরে এ বার তৃণমূল ছাড়তে চলেছেন কালনার আর এক নেতা। কালনা ১ ব্লক যুব তৃণমূলের সভাপতি হারান শেখ বিজেপিতে যোগ দিতে চেয়ে লিখিত আবেদন করেছেন। তৃণমূল নেতৃত্বের দাবি, দলে বিশেষ প্রভাব ছিল না ওই নেতার। তাই এই দলত্যাগে কোনও সমস্যা হবে না।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কালনা শেষ আপডেট: ২২ ডিসেম্বর ২০১৪ ০০:৩২
Share: Save:

জেলা পরিষদ সদস্য শান্তি চালের পরে এ বার তৃণমূল ছাড়তে চলেছেন কালনার আর এক নেতা। কালনা ১ ব্লক যুব তৃণমূলের সভাপতি হারান শেখ বিজেপিতে যোগ দিতে চেয়ে লিখিত আবেদন করেছেন। তৃণমূল নেতৃত্বের দাবি, দলে বিশেষ প্রভাব ছিল না ওই নেতার। তাই এই দলত্যাগে কোনও সমস্যা হবে না।

সম্প্রতি কালনার জেলা পরিষদ সদস্য শান্তি চাল তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেন। দলে উপযুক্ত সম্মান না পেয়েই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে জানিয়েছিলেন তিনি। বেগপুর পঞ্চায়েতের রামপুর গ্রামের বাসিন্দা হারান শেখেরও দাবি, সম্মান না পাওয়ার জন্য এমন সিদ্ধান্ত। তাঁর সঙ্গে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেওয়ার জন্য আবেদনপত্র জমা দিয়েছেন ওই ব্লকের কাকুরিয়া পঞ্চায়েতের সুব্রত মাঝিলা নামে প্রাক্তন এক পঞ্চায়েত সদস্য। বিজেপির জেলা নেতৃত্বের দাবি, ২৫ ডিসেম্বর কালনার অঘোরনাথ পার্ক স্টেডিয়ামে দলের রাজ্য নেতাদের উপস্থিতিতে একটি জনসভা হবে। সেখানেই অন্য দলের বেশ কিছু নেতা-কর্মী বিজেপিতে যোগ দেবেন। কালনা ১ ব্লকের দুই তৃণমূল নেতাকেও সেখানেই দলে নেওয়া হবে।

গত ভোটে পঞ্চায়েত সমিতির একটি আসনে তৃণমূলের প্রার্থী হয়ে পরাজিত হন হারান শেখ। হারের পর দলের নেতাদের কাছে তিনি নালিশ করেছিলেন, তাকে জোর করে হারানো হয়েছে। তবে এই অভিযোগ দলে তেমন আমল পায়নি। তৃণমূল সুত্রে জানা গিয়েছে, এক সময়ে দলে ভাল প্রভাব ছিল এই নেতার। ২০০৮ সালে পঞ্চায়েতে উপপ্রধান হওয়ার পর থেকে দলের একাংশের সঙ্গে বিবাদ শুরু হয় তাঁর। এলাকার দু’টি গোষ্ঠীর সংঘাতে মারামারি, বোমাবাজিও হয়। ২০১০ সালে আস্থা ভোটে হেরে উপপ্রধান পদ খোয়ান হারান। এর পরেই বেগপুর এলাকায় দাপট বাড়তে শুরু করে ইনসান মল্লিক নামে দলের অন্য এক নেতার।

কোণঠাসা হয়ে পড়া হারান শেখকে ২০১২ সালে চাঙ্গা করতে এগিয়ে আসে দলই। তৃণমূলের জেলা (গ্রামীণ) সভাপতি স্বপন দেবনাথের নির্দেশে তাঁকে ব্লকের যুব সভাপতির দায়িত্ব দেওয়া হয়। তৃণমূলের একটি সূত্রের অবশ্য দাবি, তাতে অবশ্য খুব বেশি লাভ হয়নি। বরং, তিনি কিছুটা নিষ্প্রভই থাকেন। তার পরেও গত ভোটে পঞ্চায়েত সমিতির আসনে তাঁকে প্রার্থী করা হয়। ভোটে হারার পরে দলের কর্মসূচিতে তাঁকে আর সে ভাবে দেখা যেত না।

দল ছাড়তে চলার কথা স্বীকার হারান শেখ রবিবার বলেন, “দুর্দিনে দল করেছি। কিন্তু তৃণমূলে থেকে সম্মানের চেয়ে অসম্মানই বেশি জুটছিল। তাই বিজেপিতে যোগ দিচ্ছি।” তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, শনিবার রাতে তিনি নিজের সিদ্ধান্তের কথা এলাকার বেশ কিছু নেতাকে জানিয়ে দেন। দলের ব্লক সভাপতি উমাশঙ্কর সিংহরায় অবশ্য বলেন, “দলে ওঁর প্রভাব বলে কিছু ছিল না। ওঁকে চাঙ্গা করতে ভাল পদও দেওয়া হয়েছিল। দলে সম্মান না পাওয়ার অভিযোগ ঠিক নয়। দলে এর কোনও প্রভাব পড়বে না।”

হারান শেখ-সহ তৃণমূলের দুই নেতা তাদের দলে যোগ দিতে চেয়েছেন, এ কথা স্বীকার করেছে বিজেপি। দলের জেলা সভাপতি রাজীব ভৌমিকের বক্তব্য, “হারান শেখ দলের ষড়যন্ত্রের শিকার।” তিনি দাবি করেন, শুধু কালনা ১ ব্লকের দুই নেতার যোগদান নয়, ২৫ ডিসেম্বরের সভায় বেশ কিছু চমক থাকবে। বিজেপির সংখ্যালঘু সেলের জেলা সভাপতি মুশারফ হোসেন দাবি করেন, সংখ্যালঘুদের মধ্যে বিজেপি যে দাগ কাটেছে, তার প্রমাণ হারান শেখের যোগদান। কাটোয়া, কেতুগ্রাম, মঙ্গলকোট, পূর্বস্থলী-সহ জেলার বেশ কিছু এলাকা থেকে সংখ্যালঘু নেতা-কর্মীরা ২৫ তারিখ বিজেপিতে যোগ দেবেন বলে তাঁর দাবি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

tmc quit party kalna haran sheikh
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE