Advertisement
১৯ মে ২০২৪

কলেজে ঢুকে ফর্ম ছিনতাই, নালিশ

দিনে দুপুরে কলেজের অফিসে ঢুকে অনার্সের আবেদনপত্র ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠল কয়েকজন যুবকের বিরুদ্ধে। বুধবার বর্ধমানের কালনা কলেজের ঘটনা। সন্ধ্যায় কালনা থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন কলেজ কর্তৃপক্ষ। ১৬ অগস্ট পর্যন্ত কলেজ বন্ধ রাখারও সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তাঁরা। কলেজ সূত্রে জানা গিয়েছে, সম্প্রতি অনার্সের ভর্তি প্রক্রিয়া শেষে দেখা যায় প্রায় দেড়শো আসন ফাঁকা পড়ে রয়েছে।

ভাঙা নোটিশ বোর্ড। নিজস্ব চিত্র।

ভাঙা নোটিশ বোর্ড। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কালনা শেষ আপডেট: ১৪ অগস্ট ২০১৪ ০১:৫৯
Share: Save:

দিনে দুপুরে কলেজের অফিসে ঢুকে অনার্সের আবেদনপত্র ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠল কয়েকজন যুবকের বিরুদ্ধে। বুধবার বর্ধমানের কালনা কলেজের ঘটনা। সন্ধ্যায় কালনা থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন কলেজ কর্তৃপক্ষ। ১৬ অগস্ট পর্যন্ত কলেজ বন্ধ রাখারও সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তাঁরা।

কলেজ সূত্রে জানা গিয়েছে, সম্প্রতি অনার্সের ভর্তি প্রক্রিয়া শেষে দেখা যায় প্রায় দেড়শো আসন ফাঁকা পড়ে রয়েছে। ঠিক হয়, পাসের ছাত্রছাত্রীদের আবেদনের ভিত্তিতে ওই আসন পূরণ করা হবে। সেই মতো কলেজ কর্তৃপক্ষ নোটিশ ঝুলিয়ে জানিয়ে দেন, বুধ ও বৃহস্পতিবার ওই আবেদন জমা নেওয়া হবে। বুধবার ফর্ম জমা শুরু হতে প্রথম দিকে কলেজের কর্মীদের ছেলেমেয়েরাই ফর্ম জমা করে। কলেজের বাইরে কয়েকজন টিএমসিপি নেতাকে ঘোরাঘুরি করতেও দেখা যায়। বেলা একটা নাগাদ যে জানালা দিয়ে আবেদনপত্র জমা নেওয়া হচ্ছিল সেখানে এক দল ছাত্র ভিড় করে, যাঁরা নিজেরা আবেদনপত্র জমা দিচ্ছে না। তখনই কলেজ কর্তৃপক্ষ খবর পায়, কলেজ চত্বরের যে জেরক্স সেন্টার থেকে ভর্তির ফর্ম দেওয়া হচ্ছিল, তার মালিককে এক দল ছাত্র ফর্ম বিলি বন্ধ রাখার হুমকি দিচ্ছে। ঝামেলার আশঙ্কায় কালনা থানায় ফোন করে পুলিশ চেয়ে পাঠান কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ বংশীবদন মাজি। কিছুক্ষণের মধ্যে কলেজে পৌঁছয় পুলিশবাহিনী।

কলেজ সূত্রে খবর, পুলিশ আসার পরেই আচমকা সক্রিয় হয়ে ওঠে টিএমসিপির কিছু নেতা। বিভিন্ন বিষয় আলোচনার জন্য বারবার অধ্যক্ষের ঘরে যাতায়াত শুরু করে তারা। কলেজের অফিসে তখন ফর্ম জমা নেওয়ার কাজ চলছিল। অভিযোগ, আচমকা টেবিল থেকে জমা পড়া প্রায় ৩৫টি ফর্ম ছিনিয়ে নেয় কয়েকজন। দ্রুত ওই কর্মী বিষয়টি জানান ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষকে। থমকে যায় ভর্তি প্রক্রিয়া। এরপরেই ভর্তি প্রক্রিয়া বন্ধ করা যাবে না বলে বিক্ষোভ শুরু করে টিএমসিপির লোকজন। ভাঙচুর করা হয় নোটিশ বোর্ডও। ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের সঙ্গে বারবার আলোচনায় বসে কলেজ সংসদের সাধারণ সম্পাদক সৌরভ ঘোষ, সহ-সভাপতি সালাম শেখ প্রমুখ। অধ্যক্ষ কেন পুলিশ ডেকেছেন, সে প্রশ্নও তোলেন তাঁরা। তাঁদের দাবি, কোনও মতেই ফর্ম জমা বন্ধ করা যাবে না। বৃহস্পতিবার পর্যন্তই ফর্ম নিতে হবে। ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ তাঁদের জানান, বেশ কিছু আবেদন পত্র চুরি গিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে ফর্ম জমা নেওয়া যাবে না। তারপরেও সন্ধ্যা পর্যন্ত নিজেদের দাবিতে অনড় থাকে টিএমসিপি। অধ্যক্ষও শিক্ষকদের সঙ্গে দফায় দফায় বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেন। সন্ধ্যায় বংশীবদনবাবু জানান, আপাতত অনার্সের আসন পূরণের প্রক্রিয়াটি বন্ধ রাখা হচ্ছে। ১৬ অগস্ট কলেজের পরিচালন সমিতির বৈঠকে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দাবি, পরিকল্পিত ভাবে কয়েকজন শুরু থেকে জানালার সামনে ভিড় করে আটকে রেখেছিল।

প্রশ্ন উঠছে, কেন এ দিন দুপুর থেকে কলেজে অতি সক্রিয় ছিল টিএমসিপি? প্রথমে কিছু বলতে না চাইলেও পরে কলেজ সংসদের সহ-সভাপতি বলেন, “কলেজের দুই সিপিএম মনোভাবাপন্ন কর্মী বদনাম ছড়ানোর জন্য বহিরাগত লোকজন এনে উত্তেজনা ছড়ানোর চেষ্টা করে। তারাই নোটিশ বোর্ড ভাঙচুর করে।” তাঁর দাবি, সংগঠন শুধু কলেজ কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করেছে ফর্ম জমা নেওয়া জারি রাখতে।

 কালনার বিধায়ক তথা ওই কলেজের পরিচালন সমিতির সদস্য বিশ্বজিৎ কুণ্ডুরও দাবি, “ওই ঘটনার সঙ্গে কোনও ভাবেই টিএমসিপি জড়িত নয়।” তাঁর দাবি, “কিছু লোকজন এবং পড়ুয়ারা অসৎ উদ্দেশ্যে কলেজ থেকে ফর্ম ছিনিয়ে নেয়। এমনকী বৈধ আবেদনকারীদেরও আবেদনপত্র জমা দিতে বাধা দেওয়া হয়।” বিশ্বজিৎবাবু আরও বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয় গর্ভনিং বডির সঙ্গে আলোচনা করে কলেজ বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ওই দিন বৈঠকে ভর্তি প্রক্রিয়া নিয়ে যাতে কোনও দুর্নীতি না হয় সেই চেষ্টা করা হবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

bardwan kalna college form snatching
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE