Advertisement
E-Paper

কলেজে সংঘর্ষ, পুলিশকে তালা টিএমসিপি-র

ছাত্র-সংঘর্ষ রুখতে গিয়ে কলেজে টিএমসিপি-র হাতে তালাবন্দি হয়ে রইল পুলিশ। বর্ধমানের রানিগঞ্জে টিডিবি কলেজের সদর দরজায় বৃহস্পতিবার দুপুরে ওই তালা পড়ে। ভিতরে শিক্ষক-শিক্ষিকা ও পড়ুয়াদের সঙ্গে আটকে পড়ে পুলিশও। ঘণ্টা তিনেক পরে তালা খোলার ব্যবস্থা করেন টিএমসিপি জেলা নেতারা। তাঁদের পাল্টা অভিযোগ, গোলমাল থামাতে বেধড়ক লাঠি চালিয়েছে পুলিশ।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৫ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০০:২০
মারপিট থামাতে টিডিবি কলেজে পুলিশের লাঠি।

মারপিট থামাতে টিডিবি কলেজে পুলিশের লাঠি।

ছাত্র-সংঘর্ষ রুখতে গিয়ে কলেজে টিএমসিপি-র হাতে তালাবন্দি হয়ে রইল পুলিশ।

বর্ধমানের রানিগঞ্জে টিডিবি কলেজের সদর দরজায় বৃহস্পতিবার দুপুরে ওই তালা পড়ে। ভিতরে শিক্ষক-শিক্ষিকা ও পড়ুয়াদের সঙ্গে আটকে পড়ে পুলিশও। ঘণ্টা তিনেক পরে তালা খোলার ব্যবস্থা করেন টিএমসিপি জেলা নেতারা। তাঁদের পাল্টা অভিযোগ, গোলমাল থামাতে বেধড়ক লাঠি চালিয়েছে পুলিশ। তাতে কলেজের টিএমসিপি পরিচালিত ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক সৌমিত্র বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ অনেকে জখম হন।

আসানসোল-দুর্গাপুর কমিশনারেটের এডিসিপি (সেন্ট্রাল) বিশ্বজিৎ ঘোষ বলেন, “পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্য যা করা প্রয়োজন, পুলিশ তা করেছে।” তালা দিয়ে পুলিশকর্মীদের আটকে রাখা প্রসঙ্গে তাঁর বক্তব্য, “একটি তালা লাগিয়ে কি পুলিশকে আটকানো যায়? পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্য যতক্ষণ ঘটনাস্থলে থাকা প্রয়োজন ততক্ষণ পুলিশ ছিল। তার পরে বেরিয়ে এসেছে।”

কলেজ সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন দুপুরে বিজেপি-র ছাত্র সংগঠন অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থ পরিষদের (এবিভিপি) জনা সত্তর কর্মী-সমর্থক সংগঠনের নতুন কলেজ শাখার সদস্যদের নামের তালিকা দিতে যান অধ্যক্ষ স্বদেশ মজুমদারের কাছে। সেখানে থেকে বেরোনোর পরেই টিএমসিপি কর্মীরা তাঁদের ঘিরে তাঁরা কলেজের ছাত্র কি না সেই প্রমাণপত্র দেখতে চান। দু’পক্ষের বচসা থেকে মারপিট বাধে। খবর পেয়ে রানিগঞ্জ থানা থেকে পুলিশের বড় বাহিনী এবং র্যাফ পৌঁছয়। পরিস্থিতি আয়ত্তে আনতে লাঠি চালায় পুলিশ।

পুলিশ সূত্রের খবর, দু’পক্ষই ছত্রভঙ্গ হতে পুলিশ যখন কলেজ চত্বর ছেড়ে যাওয়ার উপক্রম করছে, তখনই কলেজের সদর দরজায় তালা লাগিয়ে দেন কিছু টিএমসিপি কর্মী। ভিতরে আটকে পড়েন রানিগঞ্জের সার্কেল ইনস্পেক্টর, রানিগঞ্জ থানার ওসি অর্ণব গুহ-সহ পুলিশকর্মীরা। তাঁরা কলেজ চত্বরে গাড়িতে বসে অপেক্ষা করতে থাকেন। লাঠি চালানোয় অভিযুক্ত পুলিশকর্মীদের শাস্তি দাবি করে বাইরে স্লোগান দিতে থাকেন টিএমসিপি-র ছেলেমেয়েরা।


কলেজের গেটে তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হয়। শিক্ষক-শিক্ষিকা ও পড়ুয়াদের সঙ্গে আটকে পড়ে পুলিশও।

খবর পেয়ে একে একে কলেজে পৌঁছন রানিগঞ্জ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি তৃণমূলের সেনাপতি মণ্ডল, স্থানীয় তৃণমূল কাউন্সিলর হেনা খাতুন এবং টিমসিপি-র বর্ধমান জেলা সভাপতি অশোক রুদ্র। অশোকবাবুর নির্দেশে বিকেলে কলেজের তালা খুলে দেন টিএমসিপি কর্মীরা।

অশোকবাবু মেনে নিয়েছেন, “ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক মার খাওয়ায় উত্তেজিত হয়ে আমাদের ছেলেরা কলেজে তালা ঝুলিয়েছিল। বহিরাগতেরা যাতে ঢুকতে না পারে সে জন্য অধ্যক্ষের কাছে কলেজ গেটে নিরাপত্তারক্ষী বাড়ানোর দাবি জানিয়েছি।” সাধারণ সম্পাদক সৌমিত্রবাবুর আবার দাবি, “বাম জমানায় নিযুক্ত কিছু পুলিশকর্মী এখন বিজেপি-কে সাহায্য করছেন। আমরা উচ্চ নেতৃত্বকে বিষয়টি জানিয়েছি।”

এভিবিপি-র রাজ্য কমিটির সদস্য তথা এই কলেজের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র অবিনাশ চর্তুবেদীর পাল্টা অভিযোগ, “আমাদের সদস্যেরা কেউই বহিরাগত নয়। টিএমসিপি-র ছেলেরা আমাদের বেধড়ক মারল। তার পরে পুলিশ লাঠি চালানোয় ওরাই কলেজের গেটে তালা দিয়ে বিশৃঙ্খলা তৈরি করল।”

দীর্ঘক্ষণ তালাবন্দি থাকলেও অধ্যক্ষ স্বদেশবাবুর দাবি, কলেজে ‘অপ্রীতিকর’ কিছু ঘটেনি। তিনি বলেন, “টিএমসিপি-র দাবি যথার্থ। বহিরাগতেরা যাতে অনায়াসে ভিতরে ঢুকতে না পারে, সে জন্য শুক্রবার থেকে গেটে দু’জন রক্ষী রাখা হবে।”

ছবি: ওমপ্রকাশ সিংহ।

hooliganism tdb college police lathicharge
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy