Advertisement
১৮ মে ২০২৪

গরু পাচার চক্রের হদিশ

ভোরে ঘুম ভাঙার পরেই মাথায় হাত। গোয়াল থেকে বেমালুম হাওয়া সাধের দুধেল গাই অথবা চাষের বলদ জোড়া। কালনা মহকুমার ঘরে ঘরে এ ছবি এখন বড্ড চেনা। পুলিশেরও দাবি, কালনা মহকুমার বিভিন্ন এলাকায় ক্রমশ সক্রিয় হছে গরু পাচার চক্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কালনা শেষ আপডেট: ০৮ জুলাই ২০১৪ ০২:০৬
Share: Save:

ভোরে ঘুম ভাঙার পরেই মাথায় হাত। গোয়াল থেকে বেমালুম হাওয়া সাধের দুধেল গাই অথবা চাষের বলদ জোড়া। কালনা মহকুমার ঘরে ঘরে এ ছবি এখন বড্ড চেনা। পুলিশেরও দাবি, কালনা মহকুমার বিভিন্ন এলাকায় ক্রমশ সক্রিয় হছে গরু পাচার চক্র।

সম্প্রতি কালনার বৈদ্যপুর এলাকা থেকে দু’জন গরু চোরকে গ্রেপ্তার করেছিল পুলিশ। ধৃতদের জেরা করে আরও দু’জন গরুচোরকে ধরা হয়। ধৃতদের জেরা করার পরে পুলিশের কাছে উঠে আসে গরু চুরির নান তথ্য। তদন্তে উঠে আসে, গরু চুরিতে প্রধান ভূমিকা নেয় স্থানীয় লিঙ্কম্যানরা। তাদের কাজ হল পাকা রাস্তা থেকে গোয়ালঘরের দূরত্ব, গোয়াল ঘরে কী ধরনের গরু রয়েছে, তাদের বাজার মূল্য কেমন তার খোঁজ এনে দেওয়া। এরপর চুরির জন্য একটি তিন থেকে চার জনের দল তৈরি করা হয়। তারা আসে গাড়িতে। গাড়ির সামনে থাকে একটি মোটরবাইক। গোয়ালঘরের সামনেও থাকে মোটরবাইক। তারপরে সেই মোটরবাইক থেকে দেওয়া হয় প্রয়োজনীয় সঙ্কেত। শুরু হয় ‘অপারেশন’। জেরায় গরুচোরেরা জানিয়েছে, গোয়ালঘর থেকে গরু চুরি করতে সময় লাগে মিনিট দশেক। তারপরে দড়িতে বেঁধে গরুকে ম্যাটাডর অথবা ছোট ট্রাকে তোলা হয়। রাতে পুলিশের হাত থেকে বাঁচার জন্য গাড়ি থেকে হরিবোল রব তোলা হয়। ছড়ানো হয় খই। ফলে চোখের সামনে চোরাই গরু বেরিয়ে গেলেও বুঝতেই পারে না পুলিশ।

কোথায় বিক্রি হয় এই চোরাই গরু? কী ভাবে চলে লেনদেন?

জেলা পুলিশের এক কর্তা জানান, গরু বিক্রির লেনদেন পুরোটাই চলে নগদে। কালনা থেকে যাওয়া চোরাই গরুর বাজার হল মূলত হুগলি ও নবদ্বীপের বিভিন্ন হাট। সাধারণত বাজারমূল্যের অর্ধেক দামেই বিক্রি করা হয় চোরাই গরু। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সপ্তাহ খানেক আগে জনা চারের একটি গরু চোরের দল কালনা ১ ব্লকের নান্দাই পঞ্চায়েতের রামেশ্বরপুর গ্রামে গভীর রাতে এসেছিল। তারা গরু চুরির জন্য ঢোকে গ্রামের কার্তিক হেমব্রমের গোয়ালঘরে। কিন্তু গাড়িতে গরু তোলার সময় গ্রামবাসীরা তাদের দেখে ফেলে এবং তাড়া করে। কিন্তু পাচারকারীরা গাড়ি ফেলেই চম্পট দেয়।

শুধু কালনাতেই নয়, পূর্বস্থলী, মন্তেশ্বরেও গরু চুরির ঘটনা ঘটছে। কালনা ১ ব্লকের প্রাণিসম্পদ উন্নয়ন আধিকারিক সমীর শীল বলেন, “গণনা অনুযায়ী গরুর সংখ্যা ক্রমশ কমছে। এই সংখ্যা কমার একটি কারণ গরু পাচার। পুলিশের এ ব্যাপারে সক্রিয় হওয়া উচিত।” যদিও মহকুমা পুলিশের এক আধিকারিকের দাবি, “প্রতিটি থানা গরু চুরির ব্যাপারে সতর্ক রয়েছে এবং রাতে অভিযান চালানোর কথাও ভাবা হচ্ছে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

cow smuggle kalna baidyapur
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE