পর্যটন মন্ত্রীর পরামর্শ মতো পূর্বস্থলী ২ ব্লকের চুপি পাখিরালয়ের পূর্ণাঙ্গ সংস্কার চেয়ে পর্যটন দফতরে প্রস্তাব পাঠাতে চলেছে মহকুমা প্রশাসন।
গত ২৪ ডিসেম্বর কালনার ১০৮ শিবমন্দির ও রাজবাড়ি কমপ্লেক্সের আলো-ছায়া প্রকল্পের উদ্বোধন করতে এসেছিলেন রাজ্যের পর্যটন মন্ত্রী ব্রাত্য বসু। তাঁর সঙ্গে ছিলেন কালনার মহকুমাশাসক সব্যসাচী ঘোষ। তখনই সব্যসাচীবাবু পর্যটন মন্ত্রীকে জানান, চুপি পাখিরালয়ে প্রতি শীতেই প্রচুর পরিমাণে পরিযায়ী পাখি আসে। তাদের দেখভাল ও পাখিরালয়কে আকর্ষণীয় করার জন্য এটির আমূল সংস্কার প্রয়োজন। পরে পর্যটন মন্ত্রী সংস্কার প্রস্তাব পাঠাতে বলেন। মহকুমা প্রশাসনের পক্ষ থেকে পূর্বস্থলী ২ ব্লকের বিডিওকে এই প্রস্তাব পাঠানোর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
চুপি গ্রামের পাশ দিয়ে যাওয়া ছাড়িগঙ্গার পাড়েই রয়েছে এই পাখিরালয়। শীত এলেই মধ্য ও উত্তর এশিয়া, ইউরোপ, কাস্পিয়ান সাগর, তিব্বত, সাইবেরিয়া, বৈকাল হ্রদ, তুর্কমেনিস্তান-সহ পৃথিবীর নানা প্রান্ত থেকে পরিযায়ী পাখি আসে এখানে। মূলত ডিসেম্বর থেকেই পাখিদের আনাগোনা শুরু। এই সময় কূট, গার্ডওয়াল, বিভিন্ন ধরনের জ্যাকানা, মোরহেন, ধূসর বক, লিটল এগরেট, ওসপ্রে-সহ শ’খানেকেরও বেশি প্রজাতির দেখা মেলে। পাখির দল খাবার হিসেবে পায় জলাশয়ের গেঁড়ি, গুগলি, শামুক, ছোট সাপ। বেশ কিছু প্রজাতির পাখি জলাশয় লাগোয়া এলাকায় ডিম পাড়ে। শীত শেষে তারা ফিরে যায় পুরানো ঠিকানায়।
পর্যটকদের কাছে এলাকাটি আকর্ষণীয় করতে স্থানীয় বাসিন্দারা প্রশাসনের কাছে অনেক দিন থেকেই দরবার করছিলেন। বছর আটেক আগে জেলা পরিষদের উদ্যোগে ওয়াচ টাওয়ার, পিকনিক স্পট গড়ে ওঠে। ব্লক প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, পাখিরালয়ের কাছে অবস্থিত পর্যটক আবাসটি ঢেলে সাজানো হয়েছে। জল সমস্যা মেটাতে পাম্প বসানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। পরিবেশ ভারসাম্য বজায় রাখতে ইতিমধ্যেই জলাশয়ে প্রায় শ’তিনেক কচ্ছপ ছাড়া হয়েছে। ওয়াচ টাওয়ারের কাছাকাছি তিন বিঘা জমিতে কটেজ তৈরিরও পরিকল্পনা রয়েছে। ২০১১ সালে রাজ্যের তত্কালীন পর্যটন মন্ত্রী রচপাল সিংহ পাখিরালয় ঘুরে তার পরিকাঠামো উন্নয়নের জন্য ১ কোটি ৪২ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করেন। প্রাথমিক ভাবে কিছু পরিকাঠামো গড়ে তোলা হলেও দিন কয়েকের মধ্যেই সেগুলি বেহাল হয়ে পড়ে। এ বার সেগুলিই ঢেলে সাজাতে চাইছে জেলা প্রশাসন। তার সঙ্গেই ভাবা হয়েছে ‘নেচার গ্যালারি’ তৈরির কথা। নতুন তৈরি হওয়া গ্যালারিতে থাকবে পরিযায়ী পাখিদের জীবনচক্র, খাদ্যাভাস-সহ বিভিন্ন জৈবিক প্রবৃত্তির বিস্তৃত বর্ণনা।
পূর্বস্থলী উত্তর কেন্দ্রের বিধায়ক তপন চট্টোপাধ্যায়ের আশ্বাস, “পাখিরালয়কে ঘিরে পর্যটকদের আগ্রহ বাড়ছে। এখানে যে পাখিগুলি আসে তাদের সম্পর্কে জানার জন্য নেচার গ্যালারি তৈরি প্রয়োজন। আমি নিজে এই বিষয়ে পর্যটন দফতরে দরবার করেছি।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy