সংস্থার হাল ফেরানোর জন্য রাজনৈতিক স্বার্থ না দেখে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা উচিতডিপিএল কর্তৃপক্ষের কাছে জমা দেওয়া এক স্মারকলিপিতে এমনটাই দাবি করল আইএনটিটিইউসি-র ‘ডিপিএল এমপ্লয়িজ অ্যাসেসিয়েশন’। শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়ের অনুমোদন দেওয়া এই সংগঠনের কাযর্করী সভাপতি অমর মণ্ডল বলেন, “ডিপিএলের পরিস্থিতি খুব উদ্বেগজনক। রাজনৈতিক স্বার্থের দোহাই দিয়ে প্ল্যান্টের স্বার্থ বিসর্জন দেওয়া বা বিশেষ কাউকে পাইয়ে দেওয়ার প্রবণতা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। তা না হলে প্ল্যান্টের ভবিষ্যৎ অন্ধকার হয়ে যাবে।”
ডিপিএলে ইউনিটের সংখ্যা সাত। তার মধ্যে বয়স ও কারিগরি সংক্রান্ত কারণে প্রথম দু’টি ইউনিট বাতিল করা হয়েছে। নানা কারণে, তৃতীয়, চতুর্থ ও পঞ্চম ইউনিটও বন্ধ। নির্মীয়মাণ অষ্টম ইউনিটটি চালু হতে এখনও কিছুটা সময় লাগবে। ফলে ভরসা একমাত্র ষষ্ঠ ও সপ্তম ইউনিট। কিন্তু গত কয়েক মাস ধরে সে দু’টিও নানা কারণে নিয়মিত উৎপাদন করতে পারছে না। যেমন, বুধবার একটি ইউনিটও চলেনি। মূলত গ্রিড থেকে বিদ্যুৎ কিনে তা শিল্প-কারখানা ও গৃহস্থালীর বিদ্যুৎ সরবরাহ বজায় রেখেছে ডিপিএল। এমন পরিস্থিতিতে দুশ্চিন্তায় ভুগছেন সংস্থার কর্মীরা। তাঁদের অভিযোগ, আইএনটিটিইউসি-র গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব লেগেই থাকে। ফলে প্রশ্নের মুখে পড়েছে সংস্থার কাজের পরিবেশ। এমন পরিস্থিতি চলতে থাকলে সংস্থার ভবিষ্যৎই প্রশ্নের মুখে পড়ে যাবে বলে মনে করছেন কর্মী-আধিকারিকদের একাংশ।
ডিপিএলের কর্মীদের একাংশের অভিযোগ, কর্তৃপক্ষের একাংশ বরাবর শাসকদলের শ্রমিক সংগঠনকে হাতে রেখে সংস্থার স্বার্থ বিরোধী বহু সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এখনও সেই ধারাই চলছে। ফলে দিন-দিন ডিপিএলের হাল আরও খারাপ হচ্ছে। সম্প্রতি শোভনদেববাবু ডিপিএলে এলে তাঁকে তাঁর অনুগামীরা বিশদে পরিস্থিতি ব্যাখ্যা করেন। এর পরেই তিনি কর্তৃপক্ষের একাংশের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেন। তিনি বলেন, “কর্তৃপক্ষের একাংশের দুর্নীতি, অযোগ্যতা ও অপদার্থতার জন্যই ডিপিএলের আজ এই হাল।” আইএনটিটিইউসি-র গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “এ সবও চলবে না। শিল্প কারখানায় কাজের পরিবেশ ব্যাহত হবে, এমন কিছুই করা যাবে না।” তারই রেশ টেনে বুধবার ‘ডিপিএল এমপ্লয়িজ অ্যাসেসিয়েশন’-এর কার্যকরী সভাপতি অমর মণ্ডলের অভিযোগ, “দক্ষ আধিকারিক ও শ্রমিকদের রাজনৈতিক স্বার্থে বদলি করা হচ্ছে। আমরা এর বিরুদ্ধে।”
ডিপিএলে আইএনটিটিইউসি-র আর একটি সংগঠন রয়েছে। পূর্ণেন্দু বসুর অনুমোদন দেওয়া সেই ইউনিটটির নাম ‘ডিপিএল ওয়ার্কার্স অ্যাসোসিয়েশন’। সেটির নেতা দেবদাস মজুমদার এ দিন অমরবাবুদের দাবি প্রসঙ্গে বলেন, “এ ব্যাপারে কোনও মন্তব্য করব না। যা দেখার, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ দেখছেন।” তবে অমরবাবুদের দাবির সঙ্গে সহমত জানিয়েছেন সংস্থার আইএনটিইউসি নেতা উমাপদ দাস। তিনি বলেন, “সংস্থা বাঁচলে তবে তো শ্রমিক-কর্মীরা থাকবেন। আগে সংস্থাকে বাঁচাতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা উচিত। বিদ্যুৎমন্ত্রীকে সে ব্যাপারে আমরা স্মারকলিপিও দিয়েছি। দ্রুত পদক্ষেপ করা উচিত।” ডিপিএল কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গিয়েছে, সংস্থার উন্নতির জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশ মতো পদক্ষেপ করা হচ্ছে।