বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে গিয়ে এক কিশোরকে খুনের অভিযোগ উঠেছে হিরাপুরে। সোমবার সকালে নরসমুদা গ্রাম লাগোয়া পুরনো একটি খাদান থেকে দেহটি উদ্ধার করে পুলিশ। ঘটনায় জড়িত সন্দেহে চার জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। কেন এই খুন, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানান এডিসিপি (পশ্চিম) পঙ্কজ দ্বিবেদী। পুলিশের একটি সূত্রের দাবি, চোরাই জিনিসের বখরা নিয়ে বিবাদে এমন ঘটে থাকতে পারে।
এই ঘটনার পরে এ দিন সকালে এলাকায় অপরাধমূলক কাজকর্মের অভিযোগে সরব হন স্থানীয় বাসিন্দারা। কমবয়সীদের দিয়ে নানা দুষ্কর্ম করানো হচ্ছে বলেও দাবি করেন তাঁদের একাংশ। রাত নামলেই যত্রতত্র মদ-জুয়ার আসর বসলেও পুলিশ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয় না বলে ক্ষোভ তাঁদের। পুলিশের আশ্বাস, নজরদারি বাড়ানো হচ্ছে।
পুলিশ জানায়, নিহত কিশোর চাঁদ খানের (১২) বাড়ি হিরাপুরের আট নম্বর বস্তি এলাকায়। তার মা সৈবুন্নিসা হিরাপুর থানায় অভিযোগ করেন, রবিবার রাত সাড়ে ৮টা নাগাদ জনা কয়েক যুবক বাড়ি থেকে তাঁর ছেলেকে ডেকে নিয়ে যায়। রাত ১০টা নাগাদ তিনি বাড়ি থেকে বেরিয়ে কিছুটা দূরে একটি মোবাইল ফোনের টাওয়ারের নীচে ছেলেকে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন। সঙ্গে সঙ্গে বাড়ি ফিরে প্রতিবেশীদের ডেকে নিয়ে যান তিনি। কিন্তু তখন সেখানে গিয়ে আর ছেলেকে দেখতে পাননি।
এর পরেই বিষয়টি তাঁরা পুলিশকে জানান। বাড়ির লোকজনের সঙ্গে প্রাথমিক কথাবার্তার পরে পুলিশ রাতেই দু’জনকে আটক করে। তাদের জেরা করার পরে এ দিন সকালে আটক করা হয় আরও দু’জনকে। পুলিশ জানায়, ওই চার জনকে জেরা করে কিশোরের দেহ কোথায় রয়েছে তা জানা যায়। এডিসিপি (পশ্চিম) বলেন, “ধৃতদের জেরা করে খুনের কারণ জানার চেষ্টা চলছে।”
পুলিশের একটি সূত্রের দাবি, সাধন বেদা নামে বছর পঁয়ত্রিশের এক যুবক এলাকার অল্পবয়সী ছেলেদের নানা দুষ্কর্মে নামায়। আট নম্বর বস্তি-সহ আশপাশের এলাকায় তারা চুরি-ছিনতাই করে। কিছু দিন ধরে চুরি করা জিনিসের বখরা নিয়ে এই চক্রটির কয়েক জনের মধ্যে গোলমাল চলছিল। তারই জেরে এই ঘটনা ঘটে থাকতে পারে বলে মনে করছে পুলিশ। সাধনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এডিসিপি (পশ্চিম) বলেন, “আমরা এখনও নিশ্চিত নই। তদন্ত চলছে।”
এলাকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে তাঁরা উদ্বিগ্ন বলে এ দিন জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তাঁদের অভিযোগ, সন্ধ্যা নামলেই এলাকায় মদ-গাঁজা-জুয়ার আসর বসে যায়। রবিবার রাতে যে মোবাইল ফোনের টাওয়ারের নীচে ওই কিশোরকে পড়ে থাকতে দেখা গিয়েছিল, সোমবার সকালে সেখানে প্রচুর মদের বোতল পড়ে থাকতে দেখা যায়। বাসিন্দাদের আরও অভিযোগ, রাত বাড়লে চুরি-ছিনতাই বাড়ে। এই এলাকায় ঘনঘন চুরি ও মদ-জুয়ার আসরের খবর তাদের কাছেও রয়েছে বলে জানায় পুলিশ। টহল ও নজরদারি বাড়ানো হচ্ছে বলে আশ্বাস পুলিশকর্তাদের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy