Advertisement
E-Paper

দরপত্র হলেও কাজ শুরু থমকে

জমি জট কেটে এনটিপিসির তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের কাজ এগোচ্ছে জোর কদমে। এ বার কাটোয়া থেকে বলগনা ন্যারোগেজ রেললাইনকে ব্রডগেজ করার জন্য দরপত্র ডাকল রেল। প্রকল্পটিকে ভাগ করা হয়েছে দু’টি পর্যায়ে। রেল সূত্রে খবর, বলগনা থেকে কাটোয়া পর্যন্ত ছোট লাইন রয়েছে ২৬ কিলোমিটার।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০২ অগস্ট ২০১৪ ০০:০৪
কাটোয়ায় প্রস্তাবিত তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের ৫৫৬ একর জমির মধ্যে ২.৪ কিলোমিটার জমিতে প্রাচীর দেওয়ার কাজ হয়েছিল বাম আমলেই। শুক্রবার বাকি ৩.৭ কিলোমিটার জমি ঘেরার কাজ শুরু করল এনটিপিসি। হাজির ছিলেন প্রশাসনের আধিকারিকেরাও। নিজস্ব চিত্র।

কাটোয়ায় প্রস্তাবিত তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের ৫৫৬ একর জমির মধ্যে ২.৪ কিলোমিটার জমিতে প্রাচীর দেওয়ার কাজ হয়েছিল বাম আমলেই। শুক্রবার বাকি ৩.৭ কিলোমিটার জমি ঘেরার কাজ শুরু করল এনটিপিসি। হাজির ছিলেন প্রশাসনের আধিকারিকেরাও। নিজস্ব চিত্র।

জমি জট কেটে এনটিপিসির তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের কাজ এগোচ্ছে জোর কদমে। এ বার কাটোয়া থেকে বলগনা ন্যারোগেজ রেললাইনকে ব্রডগেজ করার জন্য দরপত্র ডাকল রেল। প্রকল্পটিকে ভাগ করা হয়েছে দু’টি পর্যায়ে।

রেল সূত্রে খবর, বলগনা থেকে কাটোয়া পর্যন্ত ছোট লাইন রয়েছে ২৬ কিলোমিটার। তার মধ্যে বলগনা থেকে বনকাপাশি পর্যন্ত ১৪ কিলোমিটার লাইনের জন্য প্রথম পর্যায়ে খরচ ধরা হয়েছে ৪৭ কোটি ৫১ লক্ষ টাকা। বনকাপাশি থেকে কাটোয়া পর্যন্ত বাকি ১২ কিলোমিটার লাইনে গেজ বদলের জন্য ৩৬ কোটি ৯৬ লক্ষ টাকা খরচ ধরা হয়েছে। প্রথম পর্যায়ে তৈরি করা হবে প্ল্যাটফর্ম, লেভেল ক্রশিং, সংযোগকারী রাস্তা, কালভার্ট, ফুট ওভারব্রিজ। এই পর্যায়ে মাটি ভরাটের কাজও করবে রেল। তবে দরপত্র ডাকা হলেও এখনই যে কাজ শুরু হচ্ছে না তা জানিয়েছেন পূর্ব রেলের এক কর্তা। তিনি বলেন, “সেপ্টেম্বরে দরপত্র খোলা হবে। তারপরে সেগুলি পরীক্ষা করে ঠিকাদার সংস্থা ঠিক করে কাজের বরাত দেওয়া হবে। ডিসেম্বরের আগে গেজ বদলের কাজ শুরু করা সম্ভব হবে না।”

কাটোয়াতে প্রস্তাবিত তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রকে সামনে রেখে ২০০৬ সালে এই রেলপথকে ব্রডগেজ করার প্রকল্পে সায় দিয়েছিলেন তৎকালীন ইউপিএ সরকারের রেলমন্ত্রী লালুপ্রসাদ যাদব। প্রথমে কাটোয়ার তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র গড়ার কথা ছিল রাজ্য বিদ্যুৎ উন্নয়ন নিগমের (পিডিসিএল)। এই রেললাইনের জন্য প্রস্তাবিত তাপবিদ্যুৎ নির্মাণকারী সংস্থা ও রেল ৫০ শতাংশ করে ব্যয়ভার বহন করবে বলে চুক্তি হয়েছিল। মমতা বন্দ্যেপাধ্যায় রেলমন্ত্রী থাকাকালীন বর্ধমান থেকে বলগনা পর্যন্ত গেজ পরিবর্তনের কাজ শুরু হয়। পরবর্তী সময়ে রেলমন্ত্রী মুকুল রায় ওই লাইন দিয়ে ট্রেন চলাচলের সূচনা করেন। বর্ধমান থেকে বলগনা পর্যন্ত রেললাইন ব্রডগেজে রূপান্তরিত হয়ে গেলেও বলগনা থেকে কাটোয়া পর্যন্ত লাইনটি ন্যারোগেজ হিসেবেই থেকে যায়।

এর মধ্যেই জমি-জটে বারবার আটকে যাচ্ছিল কাটোয়ায় তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র তৈরির প্রকল্প। ২০১০ সালে বিগত বাম আমলে সিদ্ধান্ত হয় রাজ্য বিদ্যুৎ উন্নয়ন নিগমের (পিডিসিএল) বদলে এই তাপবিদ্যুৎ প্রকল্পের কাজ করবে এনটিপিসি। এরপরেই ওই কেন্দ্রীয় সংস্থা চাষিদের কাছ থেকে সরাসরি জমি কিনতে মাঠে নামে। কিন্তু প্রায় তিন বছর পরে এনটিপিসি বুঝতে পারে সরকারি হস্তক্ষেপ ছাড়া তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য বাকি জমি কেনা যাবে না। এরপরেই নড়েচড়ে বসে রাজ্য সরকার। নিজেদের অবস্থান বদলে তারা এনটিপিসিকে সাহায্য করতে এগিয়ে আসে। সরকারের সাহায্য পাওয়ার পরেই এনটিপিসি চুক্তি মত চলতি বছরের ৩ মার্চ পূর্ব রেলের মুখ্য বাস্তুকারের (কনস্ট্রাকশন ২) হাতে দু’টি চেকে ১১২ কোটি ৫৭ লক্ষ টাকা তুলে দেয়। তার পরেই কাটোয়া থেকে বলগনা পর্যন্ত গেজ বদলের জন্য কেন্দ্রীয় সরকার বাজেটে টাকা বরাদ্দ করে। এর পরেই দীর্ঘ সাত বছর ধরে আটকে থাকা এই প্রকল্পের জট খুলতে চলেছে।

রেল দফতরের একাধিক কর্তা জানিয়েছেন, কাটোয়া-বলগনা রেললাইন এলাকায় মঙ্গলকোটের নিগন, কাটোয়ার শ্রীখণ্ড হল্ট স্টেশন, গাঙ্গুলিডাঙা গ্রামের কাছে দীর্ঘ কয়েক দশক ধরে রেলের জমি জবরদখল হয়ে রয়েছে। সপ্তাহ দু’য়েক আগে পূর্ব রেলের মুখ্য বাস্তুকার (কনস্ট্রাকশন) কাটোয়া থেকে বলগনা ন্যারোগেজ রেলপথ পরিদর্শন করে যান। ওই রেললাইন ঘুরে গিয়ে পূর্ব রেলের জেনারেল ম্যানেজারের কাছে বিস্তারিত রিপোর্ট জমা দেন। ওই রিপোর্ট দেখার পরেই রেল কর্তারা দ্রুত কাটোয়া বলগনা রেলপথ পরিবর্তনের জন্য প্রয়োজনীয় নির্দেশ দেন বলে রেলের কর্তারা জানিয়েছেন। কাজ শুরুর ১৮ মাসের মধ্যেই কাজ শেষ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। রেল জানিয়েছে, জবরদখলকারীরা যদি কাজে বাঁধা সৃষ্টি করে তাহলে স্থানীয় প্রশাসনের সাহায্যে সমস্যা মেটানো হবে।

ntpc thermal Power Station katoa
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy