Advertisement
E-Paper

নিজেদের লেখা মুছতেই কমিশন কর্মীদের সাহায্য

বর্ধমান পূর্ব লোকসভা কেন্দ্রের প্রার্থী ঈশ্বরচন্দ্র দাসের কার্টুন এঁকে কংগ্রেস ‘ব্যক্তি কুৎসা’ করছে বলে নির্বাচন কমিশনের কাছে অভিযোগ করেছিল সিপিএম। বৃহস্পতিবার দুপুরে গনগনে রোদে কাটোয়ার মণ্ডলপাড়ায় ওই বিতর্কিত দেওয়াল মুছতে গিয়েছিলেন মহকুমা নির্বাচন দফতরের মডেল কোড অফ কন্ডাক্টের (এমসিসি) কর্মীরা। তবে হাওড়া ও হাবরায় সরকারি কর্মীদের নির্বাচনী বিধিভঙ্গের ফ্লেক্স, পোস্টার খুলতে গিয়ে যে অভিজ্ঞতা হয় এ দিন একেবারেই তার উল্টো অভিজ্ঞতা হল কর্মীদের। বাধা, হেনস্থা এসব তো দূর, উল্টে দেওয়াল মোছার কাজে হাত লাগালেন কংগ্রেসেরই এক কর্মী।

সৌমেন দত্ত

শেষ আপডেট: ০৪ এপ্রিল ২০১৪ ০১:০৯
মণ্ডলপাড়ায় দেওয়াল মুছছেন ওই কংগ্রেস কর্মী। —নিজস্ব চিত্র।

মণ্ডলপাড়ায় দেওয়াল মুছছেন ওই কংগ্রেস কর্মী। —নিজস্ব চিত্র।

বর্ধমান পূর্ব লোকসভা কেন্দ্রের প্রার্থী ঈশ্বরচন্দ্র দাসের কার্টুন এঁকে কংগ্রেস ‘ব্যক্তি কুৎসা’ করছে বলে নির্বাচন কমিশনের কাছে অভিযোগ করেছিল সিপিএম। বৃহস্পতিবার দুপুরে গনগনে রোদে কাটোয়ার মণ্ডলপাড়ায় ওই বিতর্কিত দেওয়াল মুছতে গিয়েছিলেন মহকুমা নির্বাচন দফতরের মডেল কোড অফ কন্ডাক্টের (এমসিসি) কর্মীরা। তবে হাওড়া ও হাবরায় সরকারি কর্মীদের নির্বাচনী বিধিভঙ্গের ফ্লেক্স, পোস্টার খুলতে গিয়ে যে অভিজ্ঞতা হয় এ দিন একেবারেই তার উল্টো অভিজ্ঞতা হল কর্মীদের। বাধা, হেনস্থা এসব তো দূর, উল্টে দেওয়াল মোছার কাজে হাত লাগালেন কংগ্রেসেরই এক কর্মী।

এ দিন কাটোয়া শহরের বিভিন্ন এলাকায় ঘোরেন এমসিসি দফতরের তিন কর্মী। তাঁদের সাহায্য করছিলেন গাড়ির চালকও। তবে কোনও পুলিশকর্মী ছিলেন না তাঁদের সঙ্গে। গাড়িতে চুন, বালতি, দেওয়াল রং করার বড় তুলি, বড় লাঠি, ছুরি আর একটা টুল ভরসা করেই কখনও গাড়ির মাথায় চড়ে, কখনও বিদ্যুতের খুঁটির উপর উঠে দলীয় পতাকা, ফ্লেক্স খুলছিলেন কর্মীরা। তবে কোনও জায়গাতেই এমসিসি কর্মীদের তেমন কোনও প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়নি।

এ দিন বেলা পৌনে ১১টা নাগাদ এমসিসি কর্মীরা মহকুমাশাসকের দফতর থেকে বের হন। ডাকবাংলো রোড হয়ে গাড়ি পৌঁছয় সার্কাস ময়দানের বিদ্যাসাগর পল্লিতে। সেখানে বিদ্যুতের খুঁটি, টেলিফোন দফতরের খুঁটি থেকে পতাকা খুলে বাজেয়াপ্ত করতে থাকেন কর্মীরা। এরপর কেশিয়া-কুলডাঙা হয়ে গাড়ি চলে আসে বর্ধমান-কাটোয়া রাজ্য সড়কে। রাস্তায় যেতে যেতে সরকারি জায়গায় থাকা পতাকা-ফ্লেক্স খুলে গাড়িতে তুলতে থাকেন এমসিসি কর্মীরা। সাড়ে ১২টা নাগাদ বর্ধমান-কাটোয়া রোড ধরে বাসস্ট্যান্ড হয়ে কাছাড়ি রোড ধরে মহকুমাশাসক দফতরে ফিরে আসেন তাঁরা। সেখানে কিছুক্ষণ থাকার পর মণ্ডলপাড়ায় যান ওই কর্মীরা।

সেখানে গিয়ে দেখা যায়, এমসিসি কর্মীরা প্লাস্টিকের বালতিতে কোনও রকমে চুন ভেজাতে পারলেও, তুলি দিয়ে কংগ্রেসের লেখা দেওয়াল মুছতে পারছিলেন না। তখন খালি গায়ে, পাজামা পড়ে রাস্তায় বেড়িয়েছিলেন ভ্যান চালক গেনু মোল্লা। এলাকায় তিনি কংগ্রেস কর্মী বলেই পরিচিত। সরকারি কর্মীদের দুরবস্থা দেখে তিনি নিজেই দেওয়াল মুছতে শুরু করে দেন। মোছা শেষে গেনু মোল্লা সরকারী কর্মীদের কাছে জানতে চান, ওই দেওয়ালে ফের লেখা যাবে তো? এমসিসি কর্মীরা তাঁকে জানান, নির্বাচনি বিধি মেনে লিখলে কোনও অসুবিধা নেই। পরে গেনু মোল্লা বলেন, “ওঁদের অসুবিধা হচ্ছে দেখে আমি নিজেই আমাদের দেওয়াল মুছে দিয়েছি। আবার তো লিখতে পারব। তাহলে অসুবিধা কোথায়?”

পরে মনসাপাড়া ও কেজি বসু সরণিতে দুটি দেওয়ালের একাংশ সরকারী কর্মচারীরাই মুছে দেন। পতাকা খোলা থেকে দেওয়াল মোছা সবটাই ক্যামেরা বন্দি করতে হবে বলে নির্বাচন কমিশনের নির্দেশ রয়েছে। এ দিন এমসিসি কর্মীরা কয়েকটি জায়গার ছবি তোলেন। কাটোয়ার মহকুমাশাসক মৃদুল হালদার বলেন, “আমার মহকুমায় সব রাজনৈতিক দলই প্রশাসন ও নির্বাচন কমিশনকে খুব সহযোগিতা করছে। মনে হচ্ছে না এমসিসির সঙ্গে পুলিশ দরকার আছে।” পাশাপাশি এমসিসি কর্মীদের প্রতি তাঁর সতর্কবার্তা, “কোথাও বাধা পেলে জোর করবেন না। আমাকে বলুন, তারপর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা আমি নেব।”

wall writing soumen dutta mandalpara congress
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy