সেই রাস্তা। —নিজস্ব চিত্র।
লাল মোরামের রাস্তা। তার উপর দিয়ে অহরহ ছুটছে চারচাকা, মোটরবাইক, এমনকী ছোট ট্রাকও। অথচ, একটু বৃষ্টি হলেই এই রাস্তা দিয়েই চলাফেরা করা দায় হয়ে যায় বলে অভিযোগ এলাকার বাসিন্দাদের। জঙ্গলে ঘেরা এই মোরামের রাস্তাটি পিচের করার দাবি জানিয়েছেন তাঁরা। বাসিন্দাদের দাবি, কম দূরত্বের জন্য অনেকেই এই রাস্তা ব্যবহার করেন।
আউশগ্রাম ২ ব্লকের ঝিঝিরা থেকে গোপালমাঠ পর্যন্ত এই রাস্তার দূরত্ব প্রায় সাড়ে চার কিলোমিটার। সহজে মানকর, বর্ধমান যাওয়ার জন্য দু’পাশে ঘন জঙ্গলে ঘেরা এই রাস্তাটি ব্যবহার করেন প্রায় ২৫টি গ্রামের বাসিন্দারা। আউশগ্রাম ২ ব্লকের দেবশালা ও অমরপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের বেশির ভাগ মানুষকেই যাতায়াতের জন্য এই রাস্তা ধরতে হয়। এ ছাড়া সহজে মানকর কলেজ, স্টেশন, মানকর গ্রামীণ হাসপাতাল, বুদবুদ ইত্যাদি জায়গায় যাওয়ার জন্যও এই রাস্তাটি অনেকে ব্যবহার করেন। বাসিন্দাদের দাবি, মোরামের এই রাস্তা দিনের পর দিন খুবই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে। অথচ, এখনও সেটি পাকা করার ব্যাপারে কোনও পক্ষের কোনও ভ্রূক্ষেপ নেই। লবণধার গ্রামের বাসিন্দা বিশ্বরূপ মণ্ডল জানান, ঝিঝিরা থেকে এই রাস্তাটি ব্যবহার করার ফলে যাতায়াতকারীদের প্রায় ১৫ কিলোমিটার রাস্তা কম ঘুরতে হয়। তাড়াতাড়ি গন্তব্যে পৌঁছতে এই রাস্তাটির যথেষ্ট গুরুত্ব রয়েছে এলাকার মানুষের কাছে। তিনি আরও জানান, মোরামের রাস্তা হওয়ার ফলে একটু বৃষ্টিতেই রাস্তার অবস্থা খারাপ হয়ে যায়। তা ছাড়া বেশি গাড়ি যাতায়াতের ফলে রাস্তায় বড় বড় গর্ত তৈরি হয়েছে। যা মোটরবাইক চালকদের কাছে যথেষ্ট আশঙ্কার বিষয়। তিনি বলেন, “আমরা স্থানীয় পঞ্চায়েত থেকে ব্লক প্রশাসন, সবার কাছেই রাস্তা পাকা করার আবেদন জানিয়েছি। কিন্তু এখনও তা হয়নি।”
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, ঝিঝিরা থেকে ভাতকুন্ডা হয়ে মানকর যাওয়ার অন্য একটি পিচের রাস্তা আছে। কিন্তু সেই রাস্তারও অবস্থা খুব একটা ভাল নয়। তা ছাড়া ওই রাস্তা দিয়ে গেলে যতটা ঘুরপথ হয়, লবণধার হয়ে মোরামের রাস্তায় গেলে দূরত্ব ও সময়, দু’টোই কম পড়ে। স্থানীয় বাসিন্দা অনিল ঘোষ, নিতাই ঘোষ, দেবু মুর্মুরা জানান, দু’টি পঞ্চায়েতের মানুষদের বিভিন্ন কাজে অমরাগড়ে ব্লক অফিসে যেতে হয়। তাঁরা লবণধার হয়ে রাস্তাটিই ব্যবহার করেন। তাঁরা দাবি করেন, যদি এই রাস্তা পাকা করে দেওয়া হয়, তবে হয়তো এখান দিয়ে ছোট বাস বা গাড়ি চলাচল করবে। তাঁরা বলেন, “এখন এই রাস্তা দিয়ে গাড়ি ভাড়া করে যেতে হয়। বর্ষার সময়ে আবার কোনও গাড়িও যেতে চায় না। তাই বেশি টাকা দিয়ে ঘুরপথে যেতে হয়।” লবণধারের বাসিন্দা বিশ্বরূপ মণ্ডল জানান, মোরামের এই রাস্তাটি চওড়াও অনেক। কাজেই পিচের করতে খুব একটা অসুবিধা হবে না। তিনি বলেন, “এই এলাকায় প্রচুর আদিবাসী পরিবারের বাস। পিচের রাস্তা হলে সেই সব আদিবাসী গ্রামের বাসিন্দাদেরও নানা দিক থেকে সুবিধা হবে।”
আউশগ্রাম ২ বিডিও দীপ্তিময় দাস জানান, এ বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy