এক বছরের বেতন বাকি পড়েছে। পুজোর মুখেও তা মিলবে কি না, এখন সে নিয়েই আশঙ্কায় রূপনারায়ণপুরের হিন্দুস্তান কেবলস কারখানার প্রায় সাড়ে সাতশো শ্রমিক-কর্মী। ক্ষুব্ধ শ্রমিক-কর্মীদের বিক্ষোভে সম্প্রতি কারখানায় ঢুকতেও বাধা পান আধিকারিকেরা।
আসানসোলের বিজেপি সাংসদ বাবুল সুপ্রিয় অবশ্য বৃহস্পতিবার বলেন, “ভারী শিল্পমন্ত্রী অনন্ত গীতের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। তিনি জানিয়েছেন, কেবলস কর্মীদের বকেয়া দেওয়ার বিষয়টি অনুমোদন হয়ে গিয়েছে। দিন কয়েকের মধ্যে সাত মাসের বেতন পেয়ে যাবেন কর্মীরা।” সাংসদের দাবি, প্রধানমন্ত্রীকে এ ব্যাপারে চিঠি দিয়েছিলেন তিনি। সেই দরবারই অর্থ মন্ত্রক ঘুরে অনুমোদন পেয়েছে।
হিন্দুস্তান কেবলস কারখানা অধিগ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দেশের প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের অধীনস্থ সংস্থা অর্ডিন্যান্স ফ্যাক্টরি বোর্ড। অধিগ্রহণ প্রক্রিয়ার কথা গত ২১ জুলাই সংসদে দাঁড়িয়ে ঘোষণা করেছেন কেন্দ্রীয় ভারীশিল্প প্রতিমন্ত্রী ডি রামকৃষ্ণন। মন্ত্রীর ওই বক্তব্যের পরেই এলাকায় খুশির হাওয়া বইতে শুরু করে। সংস্থার শ্রমিক-কর্মীরা সুদিন ফেরার অপেক্ষায় রয়েছেন। কিন্তু, এর পরেও শ্রমিক কর্মীরা বকেয়া বেতন নিয়ে চিন্তায়। মন্ত্রীর ঘোষণার সময়েই তাঁদের ১১ মাসের বেতন বাকি পড়ে গিয়েছিল। তাঁরা আশা করেছিলেন, এই এক মাসে বকেয়ার কিছুটা হলেও পাবেন তাঁরা। কিন্তু, তা এখনও হয়নি। শ্রমিক-কর্মীরা জানান, পুজোর আর মাত্র ১৮ দিন বাকি। অথচ, বকেয়া মেলার তেমন কোনও সম্ভাবনা এখনও নজরে আসছে না। সে জন্য তাঁরা বিক্ষোভও শুরু করেছেন। সংস্থার অনুমোদিত চারটি শ্রমিক সংগঠনই যৌথ আন্দেলনে নেমেছেন। তাদের দাবি, কবে নাগাদ বকেয়া পাওয়া যাবে তা নির্দিষ্ট করে কর্তৃপক্ষকে জানাতে হবে। সংস্থার সিএমডি মহেন্দ্রকুমার সিংহের সঙ্গে ১৫ সেপ্টেম্বর তাঁরা যৌথ বৈঠকও করবেন বলে জানিয়েছেন।
কেবলস সূত্রে জানা গিয়েছে, আজ, শুক্রবার দিল্লিতে একটি উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক রয়েছে। থাকবেন কেব্লসের সিএমডি, ভারী শিল্প দফতর, অর্ডিন্যান্স ফ্যাক্টরি বোর্ড এবং ডিপার্টমেন্ট অফ ডিফেন্স প্রোডাকসন্সের প্রতিনিধিরা। জানা গিয়েছে, কারখানা অধিগ্রহণ সংক্রান্ত খুটিনাটি বিষয়ে আলোচনা হতে পারে সেখানে। কারখানার জনসংযোগ আধিকারিক হরিসাধন চট্টোপাধ্যায় বলেন, “উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকটি হয়ে যাওয়ার পরে ১৫ সেপ্টেম্বর শ্রমিক নেতাদের সঙ্গে সংস্থার সিএমডি-র বৈঠক করার কথা আছে।” আইএনটিইউসি নেতা উমেশ ঝা, সিটু নেতা প্রদীপ সাহারা বলেন, “পুজোর আগে বেতন দিতেই হবে, পরিস্কার করে সে কথা জানতেই বৈঠকের দাবি করেছি।” এইচএমএস নেতা বিরোজা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “বকেয়া নিয়ে কর্তৃপক্ষ কোনও উচ্চবাচ্য করছেন না। আমরা পরিষ্কার করে সে কথা জানার জন্যই বৈঠকের দাবি করেছি।” এআইটিইউসি নেতা নয়ন গোস্বামীর বক্তব্য, “এক বছর বেতন পাননি শ্রমিক-কর্মীরা। উৎসবের আগে না পেলে অথৈ জলে পড়বেন সবাই।” বিএমএস নেতা ওমপ্রকাশ সিংহের অবশ্য দাবি, “অনুমোদিত শ্রমিক সংগঠনগুলির তরফে কর্তৃপক্ষকে কারখানায় ঢুকতে না দেওয়ার ব্যাপারে যে আন্দোলন হচ্ছিল, তা অনৈতিক। তাতে কারখানার ভবিষ্যৎ আরও বিগড়ে যেতে পারে।”
সাংসদ বাবুলের অবশ্য আশ্বাস, “শীঘ্রই বকেয়া বেতন পেয়ে যাবেন শ্রমিক-কর্মীরা।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy