সেজেছে বার্নপুর। —নিজস্ব চিত্র।
পার্ক, নদীর চরে পিকনিক। ক্লাবে-হোটেলে পার্টি। বর্ষশেষের দিন ও বর্ষবরণের রাতে নানা মজায় মাতল শিল্পাঞ্চল।
শপিংমল থেকে রেস্তোরাঁ, সেজে উঠেছে সবই। আর সূর্যের আলো পড়তে না পড়তেই বাড়ি ছেড়ে বেরিয়ে পড়েছেন মানুষজন। খাওয়া-দাওয়া, হুল্লোড়, নাচ-গানে মেতে স্বাগত জানালেন নতুন বছরকে। আসানসোল ও দুর্গাপুর শহরে বুধবারের ছবিটা ছিল এরকমই। এখানেই অবশ্য শেষ নয়। আজ, বৃহস্পতিবার, বছরের প্রথম দিনটি নানা ভাবে উদযাপনেরও বিভিন্ন রকম ব্যবস্থা থাকছে দুই শহরের আনাচে-কানাচে।
বুধবার রাতে দুর্গাপুরে বিভিন্ন হোটেল ও ক্লাবে পার্টিতে ভিড় হল জমাটি। ছিল দেদার খানাপিনা, নাচ-গানের আয়োজন। তবে রাত ১২টা পর্যন্ত। নতুন ইংরেজি বছরকে স্বাগত জানিয়েই শেষ পার্টি। এ দিন দুপুর থেকেই অনেকে পা বাড়ান বিভিন্ন পার্ক এবং শপিংমলের দিকে। সিটি সেন্টার লাগোয়া পার্কটি ছিল ভিড়ে ভরা। ইস্পাতনগরীর এ-জোন ও বি-জোন এর সংযোগস্থলে বড় পার্কটিতেও ভিড় ছিল চোখে পড়ার মত। নৌকাবিহারে, নানা রকম রাইডে মাতেন ছোট-বড় সকলেই। শপিংমলগুলিতেও ভিড় জমে যায়। চাইনিজ খাবার থেকে থেকে পিত্জা, সব রকম দোকানই ছিল জমজমাট। আকর্ষণীয় ‘অফার’ দেখলে এক ফাঁকে শো-রুমে ঢুকে কেনাকাটাও সেরে নেন অনেকে।
রাত ৮টা বাজতে না বাজতেই ক্ষুদিরাম সরণির বড় হোটেলগুলিতে পার্টি শুরু হয়ে যায়। রঙিন আলোর মাঝে ‘ডিস্ক জকি’র গানের সঙ্গে পা মেলান তরুণ-তরুণীরা। কোথাও কোথাও আবার ছিল ফ্যাশন-শোয়ের মতো নানা প্রতিযোগিতার ব্যবস্থা। সিটি সেন্টারের মতোই বিধাননগর এলাকার বিভিন্ন হোটেলেও বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন ছিল। বিভিন্ন ক্লাবও নিজেদের মতো করে পার্টির আয়োজন করেছিল। চিত্রটা একই রকম ছিল আসানসোলেও। অভিজাত ক্লাব, রেস্তোরাঁ, শপিংমলে তিল ধারণের জায়গা ছিল না। অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে রাস্তার মোড়ে মোড়ে পুলিশি টহল দেখা গিয়েছে দুই শহরেই।
বছরের প্রথম দিন বনভোজনের জন্যও সেজে উঠেছে শিল্পাঞ্চলের নানা জায়গা। মাইথনে ভিড় সামলাতে বাড়তি পুলিশি ব্যবস্থা রাখা হচ্ছে বলে জানিয়েছে প্রশাসন। পুলিশ কমিশনারেটের এডিসিপি (পশ্চিম) পঙ্কজ দ্বিবেদী বলেন, “এলাকার শান্তিশৃঙ্খলা রক্ষা করা ও ভ্রমণার্থীদের নিরাপত্তা-সহ যাবতীয় সহায়তা দেবে পুলিশ।” নৌকাবিহারের সময়ে দুর্ঘটনা রোধে বিপর্যয় মোকাবিলা দল মজুত রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
মাইথন লাগোয়া সিদাবাড়ি গ্রামকে আদর্শ গ্রাম করার জন্য সম্প্রতি দত্তক নিয়েছেন আসানসোলের সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় নগোরন্নোয়ন প্রতিমন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়। এই গ্রামের শেষ প্রান্তে নদীর তীরে সবুজ দ্বীপে বনভোজনের ব্যবস্থা করেছে স্থানীয় প্রশাসন। ইস্কোর তত্ত্বাবধানে থাকা বার্নপুরের নেহরু পার্কটি পর্যটকদের জন্য সেজে উঠেছে বর্ষশেষ ও বর্ষবরণ উপলক্ষে। সেখানেও রয়েছে বনভোজনের যাবতীয় ব্যবস্থা। ইস্কোর জনসংযোগ আধিকারিক ভাস্কর কুমার জানান, পার্কটি দেখভালের দ্বায়িত্বে থাকা সংস্থাকে আমোদ-প্রমোদের নানা উপকরণ রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। চিত্তরঞ্জনের ঝিলে পরিযায়ী পাখি দেখার বিশেষ ব্যবস্থা রেখেছেন রেল ইঞ্জিন কারখানা কর্তৃপক্ষও। সংস্থার জনসংযোগ আধিকারিক মন্তার সিংহ জানান, শীতের আগেই হ্রদগুলি উপযোগী করে তোলা হয়েছে।
সব মিলিয়ে, বর্ষশেষের উত্সব শেষ করে নতুন বছরের শুরুর দিনটি রঙিন করে রাখতেও তৈরি শিল্পাঞ্চল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy