এখনও প্রার্থিতালিকা ঘোষণা হয়নি। তার আগেই প্রার্থী নিয়ে শাসকদলের দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে এল কালনায়।
প্রার্থী না হওয়ার জন্য হুমকি দিয়ে শুক্রবার তাঁর চিকিৎসাকেন্দ্রে ঢুকে তাণ্ডব চালানোর অভিযোগ করলেন কালনার ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর গোকুলচন্দ্র বাইন। যে পাঁচ জনের নামে তিনি পুলিশে অভিযোগ করেছেন তারা এলাকায় তৃণমূলের কর্মী হিসেবে পরিচিত।
পুরভোটের জন্য দলের নানা গোষ্ঠী ইতিমধ্যে নিজেদের পছন্দের প্রার্থীদের তালিকা জমা দিতে শুরু করেছে বলে তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে। স্থানীয় সূত্রের খবর, কাউন্সিলর গোকুলবাবুর সঙ্গে তার ওয়ার্ডের কিছু লোকজনের মনোমালিন্য নতুন নয়। এর আগেও তিন বার তাঁর সঙ্গে গোলমালের ঘটনা ঘটেছে। তৃণমূলের একটি সূত্রের খবর, এ বার কালনার এই ১৩ নম্বর ওয়ার্ডে দলের একটি গোষ্ঠী গোকুলবাবুকে প্রার্থী হিসেবে মানতে চাইছে না। তারা দলের কাছে প্রার্থী হিসেবে অন্য নাম প্রস্তাব করেছে। কিন্তু অন্য একটি গোষ্ঠীর তালিকায় ফের গোকুলবাবুর নামই উঠে এসেছে। তা থেকেই দ্বন্দ্ব শুরু হয়েছে।
কালনার ছোটমিত্রপাড়ায় গোকুলবাবু একটি চিকিৎসাকেন্দ্র চালান। সকালে সেখানে রোগী দেখার পরে শহরের একটি আয়ুর্বেদ হাসপাতালে কাজে যান তিনি। গোকুলবাবু অভিযোগ করেন, এ দিন সকাল সাড়ে ৭টা নাগাদ তাঁর চিকিৎসাকেন্দ্রে আচমকা ঢুকে গালিগালাজ শুরু করে কয়েক জন যুবক। তিনি কেন প্রার্থী হিসেবে আবেদনপত্র জমা দিয়েছেন, সেই প্রশ্ন তুলে হুমকি দেয়। দলের জেলা সভাপতিকে ফোন করে সেই আবেদন তোলার জন্যও চাপ দেয় তারা। গোকুলবাবুর কথায়, “আমি ওদের বলি, এ নিয়ে দলের বৈঠকে আলোচনা হতে পারে। কিন্তু ওরা সে কথা শুনতে চায়নি। উল্টে কলার ধরে হুমকি দেয়। কেন্দ্রে ভাঙচুরও চালায়।” তিনি আরও অভিযোগ করেন, তাঁর বাড়িতে গিয়েও ওই যুবকের দল হুমকি দিয়েছে। ভাঙচুর করেছে মোটরবাইকও। তিনি বলেন, “আমি গোটা বিষয়টি দলের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। পুলিশেও অভিযোগ করেছি।”
যারা এই ঘটনায় জড়িত, তারা কারা? গোকুলবাবু দাবি করেন, “ওরা বিধায়ক বিশ্বজিৎ কুণ্ডুর অনুগামী। এর আগেও তিন বার আমার উপরে যে হামলা হয়েছে তাতে ওরাই যুক্ত।” তিনি আরও জানান, এ দিন ওই ঘটনার সময়ে চিকিৎসাকেন্দ্রে বসেছিলেন স্থানীয় এক বাসিন্দা। পরিস্থিতি শান্ত করতে গেলে হামলাকারীরা তাঁকেও ঠেলে ফেলে দেয়। গোকুলবাবু বলেন, “এর আগে দলের কথা ভেবে থানায় অভিযোগ করিনি। এ বার নিরাপত্তার কথা ভেবে আর ঝুঁকি নিইনি।”
কাউন্সিলর যাদের নামে অভিযোগ করেছেন এ দিন তাদের সঙ্গে চেষ্টা করেও অভিযোগ করা যায়নি। বিধায়ক বিশ্বজিৎবাবু বলেন, “১৩ নম্বর ওয়ার্ডে একটি ঘটনা ঘটেছে বলে শুনেছি। বিষয়টি নিয়ে বিশদে খোঁজ নিচ্ছি।” জেলা তৃণমূল সভাপতি (গ্রামীণ) স্বপন দেবনাথের প্রতিক্রিয়া, “কোনও অভাব-অভিযোগ থাকলে তা দলের মধ্যে আলোচনা করাই নিয়ম। কাউন্সিলরের বাড়িতে গিয়ে তাঁকে হয়রানির ঘটনার নিন্দা করছে দল। ঠিক কী ঘটেছে, তা নিয়ে খোঁজখবর চলছে।”