Advertisement
১৮ মে ২০২৪

প্রধান শিক্ষক অধরা, তদন্ত অনিয়মের

ছাত্রীকে ‘বাইরের লোক দিয়ে ধর্ষণ’ করানোর হুমকি দেওয়ায় অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষককে দ্রুত গ্রেফতারের দাবিতে স্মারকলিপি দিল তৃণমূল শিক্ষা সেল ও আদিবাসীদের সংগঠন খেড়ওয়ালগাড় বিকাশ পরিষদ। বুধবার মহকুমাশাসকের কাছে ও নিউ টাউন শিপ থানায় স্মারকলিপি দেন তাঁরা। মহকুমা প্রশাসনের তরফেও উচ্চ পর্যায়ের এক প্রতিনিধি দল এ দিন স্কুলে গিয়ে বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগের তদন্ত করে।

ফুলঝোড়ের আদিবাসী আবাসিক স্কুলে প্রশাসনের দল। —নিজস্ব চিত্র।

ফুলঝোড়ের আদিবাসী আবাসিক স্কুলে প্রশাসনের দল। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ১১ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০১:৪১
Share: Save:

ছাত্রীকে ‘বাইরের লোক দিয়ে ধর্ষণ’ করানোর হুমকি দেওয়ায় অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষককে দ্রুত গ্রেফতারের দাবিতে স্মারকলিপি দিল তৃণমূল শিক্ষা সেল ও আদিবাসীদের সংগঠন খেড়ওয়ালগাড় বিকাশ পরিষদ। বুধবার মহকুমাশাসকের কাছে ও নিউ টাউন শিপ থানায় স্মারকলিপি দেন তাঁরা। মহকুমা প্রশাসনের তরফেও উচ্চ পর্যায়ের এক প্রতিনিধি দল এ দিন স্কুলে গিয়ে বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগের তদন্ত করে।

পড়ুয়াদের অভিযোগ ছিল, প্রধান শিক্ষক বিশুদ্ধানন্দ রায় তাদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন। নিয়ম বহির্ভূত ভাবে টাকা নেওয়া হয়। হস্টেলের খাবার ও অন্যান পরিষেবার মানও খারাপ। এসব নিয়ে আন্দোলন করায় প্রধান শিক্ষক তাদের ধমকে চুপ করানোর চেষ্টা করেন। তাতে কাজ না হওয়ায় ২২ জুলাই ওই ছাত্রীকে ‘বাইরের লোক দিয়ে ধর্ষণ’ করানোর হুমকি দেন বলে অভিযোগ। শনিবার থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করে ছাত্রীটি। ওই স্কুলের এক শিক্ষিকাও প্রধান শিক্ষকের বিরদ্ধে থানায় তাঁর সঙ্গে দুর্ব্যবহার, গালিগালাজ এবং বেআইনি ভাবে ছুটি না দেওয়ার অভিযোগ দায়ের করেন। তবে অভিযুক্তের খোঁজ পায়নি পুলিশ। মোবাইল বন্ধ থাকায় তাঁর সঙ্গে যোগাযোগও করা যায়নি। তবে স্কুল পরিচালন সমিতির সম্পাদক তথা তৃণমূল শিক্ষা সেলের নেতা কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, প্রধান শিক্ষক তাঁর কাছে আবেদন জানিয়ে মঙ্গলবার পর্যন্ত ছুটি নিয়েছেন।

মহকুমা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন একটি উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি দল ওই স্কুলে যায়। পড়ুয়ারা দলের সদস্যের কাছে প্রধান শিক্ষকের শাস্তির দাবি জানায়। পরে আধিকারিকদের আশ্বাস পেয়ে পঠন-পাঠন শুরু হয়। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, স্কুলের শিক্ষিকা শ্রাবণী সেনশর্মাকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। বুধবার থেকে তিনি কাজ শুরু করেছেন। স্কুলের শিক্ষক সন্দীপ মল্লিক বলেন, “বহু দিন পরে স্বাভাবিক পঠন-পাঠন শুরু হয়েছে।” মহকুমাশাসক কস্তুরি সেনগুপ্ত বলেন, “স্কুলের নানা অনিয়ম নিয়ে ধারাবাহিক তদন্ত চলছে। এখন পর্যন্ত বহু অসঙ্গতি মিলেছে।”

এ দিন তৃণমূল শিক্ষা সেলের জেলা কোর কমিটির সদস্য বিমল কর অভিযোগ করেন, “জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা দায়ের হওয়ার পরেও এখনও প্রধান শিক্ষককে গ্রেফতার করা হয়নি। দ্রুত তাঁকে অপসারণ ও গ্রেফতারের দাবি জানাচ্ছি।” তাঁর অভিযোগ, স্কুল পরিচালন সমিতির সম্পাদক কল্যাণবাবু প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অন্যায় ভাবে সওয়াল করছেন। তাঁকে বাঁচানোর চেষ্টা করছেন। বিমলবাবু বলেন, “আমরা কোনও ভাবেই অভিযুক্তকে আড়াল করতে দেব না।” কল্যাণবাবু অবশ্য অভিযোগ মানতে চাননি। খেড়ওয়ালগাড় বিকাশ পরিষদের সম্পাদক গৌরচন্দ্র হেমব্রমের দাবি, “ওই প্রধান শিক্ষককে না সরালে কোনও ভাবেই স্কুলের পরিবেশ স্বাভাবিক হবে না। পড়ুয়াদের স্বার্থের কথা ভেবে আমরা দ্রুত তাঁর গ্রেফতার ও অপসারণের দাবি জানিয়েছি।” পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্ত পলাতক। তাঁর খোঁজে তল্লাশি চলছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

durgapur investigation
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE