নিয়মমাফিক বেতন না মেলার অভিযোগে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রীড়া আধিকারিক তথা ক্রিকেট প্রশিক্ষক। আদালত হলফনামা পেশের নির্দেশ দিলেও তা দেয়নি বিশ্ববিদ্যালয়। শেষে উপাচার্য ও রেজিস্ট্রারকে ডেকে পাঠিয়ে ওই প্রশিক্ষককে উপযুক্ত বেতন মিটিয়ে দিতে বলল কোর্ট।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন ক্রীড়া আধিকারিক তথা ক্রিকেট কোচ শান্তনু দাশগুপ্ত অভিযোগ করেন, তাঁকে লেকচারারের সমান বেতন দেওয়ার কথা। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় সুপারের স্কেলে বেতন দিয়েছে। ২০১০ সালে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে মামলা করেন।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১০ থেকে ২০১৩--এই তিন বছর হাইকোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চ বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনি শাখাকে বারবার উপযুক্ত আইনজীবী বা প্রতিনিধি পাঠাতে এবং মামলা প্রসঙ্গে হলফনামা পেশ করতে বলে। কিন্তু তা পাঠানো হয়নি। চলতি বছর ২৬ সেপ্টেম্বর বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য স্মৃতিকুমার সরকার ও রেজিষ্ট্রার শ্রীপতি মুখোপাধ্যায়কে বিচারপতি সম্বুদ্ধ চক্রবর্তীর এজলাসে হাজির হতে নির্দেশ দেয় হাইকোর্ট। বিশ্ববিদ্যালয়ের সূত্রে গিয়েছে, ওই দিন উপাচার্য ও রেজিষ্ট্রারকে বিচারপতি জিজ্ঞাসা করেন, কেন তিন বছর ধরে কোনও আইনজীবী বা প্রতিনিধিকে আদালতে হাজির করানো হয়নি। ওই দিনই শান্তনুবাবুকে ইউজিসি-র নিয়ম মেনে বেতন দিতে নির্দেশ দেয় আদালত।
শান্তনুবাবু দাবি করেন, তিনি সুপারের স্কেলে বেতন পেয়েই ২০১০ সালে অবসর নেন। কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয় এক প্রশিক্ষক তথা আধিকারিককে ইউজিসি-র স্কেল অনুসারে লেকচারারের সমান বেতন দিয়েছে। তাই বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়েরও উচিত ইউজিসির নিয়ম মেনে তাঁকে লেকচারারের সমান বেতন দেওয়া।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রের খবর, উপাচার্য স্মৃতিকুমার সরকার হাইকোর্ট থেকে ফিরে ফিনান্স অফিসার ও অন্য আধিকারিকদের সঙ্গে দীর্ঘ বৈঠক করেন। সেখানে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, আদালতের নির্দেশ মেনে সমস্ত বকেয়া পরিশোধ করে দেওয়া হবে। উপাচার্য স্মৃতিকুমারবাবু বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয় কী ভাবে চলত, তাই এই বিষয় থেকেই স্পষ্ট। আমি তো অনেক পরে এসেছি। আমার পক্ষে তো একা ভগীরথ হওয়া সম্ভব নয়।” তিনি আরও বলেন, “শান্তনুবাবু হাইকোর্টে জিতে গিয়েছেন। তাঁর পাওনাগণ্ডা মিটিয়ে দেওয়া ছাড়া উপায় নেই। তবে আমাদের আইনি শাখা ২০১০ সালের মামলায় এক বারও আদালতে হাজির হল না কেন, সেটা আশ্চর্যের।” তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিষ্ট্রার বলেন, “আমরা ওই রায়ের বিরুদ্ধে কী করা যায় তা নিয়ে আলোচনা করছি। তবে ওই মামলা হবার সময় আমরা কেউই পদে ছিলাম না। তাই এই ব্যাপারে আমাদের স্পষ্ট করে কী হয়েছে তা বলা সম্ভব নয়।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy