Advertisement
১১ মে ২০২৪
বৈকুণ্ঠপুর

পঞ্চায়েতের দখল নিয়ে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে গুলি

পঞ্চায়েতের দখল নিয়ে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব, তার জেরে প্রধানকে গুলি করে খুনের চেষ্টার অভিযোগ উঠল বর্ধমানের বৈকুণ্ঠপুরে। বৃহস্পতিবার রাতের ঘটনা। রাতেই ওই পঞ্চায়েতের তৃণমূল প্রধান নীলকণ্ঠ ঘোষ বর্ধমান থানায় পাঁচ জনের নামে অভিযোগ করেন।

ধৃত বিবেকানন্দ পাল। —নিজস্ব চিত্র।

ধৃত বিবেকানন্দ পাল। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বর্ধমান শেষ আপডেট: ০৬ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০০:২৪
Share: Save:

পঞ্চায়েতের দখল নিয়ে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব, তার জেরে প্রধানকে গুলি করে খুনের চেষ্টার অভিযোগ উঠল বর্ধমানের বৈকুণ্ঠপুরে।

বৃহস্পতিবার রাতের ঘটনা। রাতেই ওই পঞ্চায়েতের তৃণমূল প্রধান নীলকণ্ঠ ঘোষ বর্ধমান থানায় পাঁচ জনের নামে অভিযোগ করেন। অভিযুক্তদের একজন বর্ধমান ২ পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য, দু’জন বৈকুণ্ঠপুর ২ পঞ্চায়েতের সদস্য ও বাকি দু’জন স্থানীয় তৃণমূল নেতা। একজনকে গ্রেফতারও করেছে পুলিশ।

দলের উপরমহল থেকে বারবার গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব থামানোর কথা বলা হলেও আবারও এমন ঘটনায় বিচলিত জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব। বর্ধমান জেলা তৃণমূল সভাপতি (গ্রামীণ) স্বপন দেবনাথ বলেন, “আমরা দলীয় তদন্ত শুরু করেছি। জামালপুরের বিধায়ক উজ্জ্বল প্রামাণিককে ঘটনার কারণ খুঁজে বের করার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।”

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, রাত ৯টা নাগাদ ডাক্তার দেখিয়ে ছেলের মোটরবাইকের পিছনে বসে বৈকুণ্ঠপুরের বাড়িতে ফিরছিলেন নীলকণ্ঠবাবু। জিটি রোড বাইপাস থেকে নেমে বাড়ি যাওয়ার মোড় ঘুরতেই পিছন থেকে একটা বাইকে কয়েকজন এসে তাদের উপর হামলা করে বলে অভিযোগ। হামলাকারীরা প্রথমেই নীলকণ্ঠবাবুর ছেলে সৌরভের ডান হাতে লাঠি দিয়ে আঘাত করে। বাবা-ছেলে বাইক থেকে পড়ে যেতেই নীলকণ্ঠবাবুকে লক্ষ্য করে গুলি ছোঁড়া হয় বলে অভিযোগ। গুলি লাগে ডান পায়ে। আধঘণ্টা ওভাবে পড়ে থাকার পরে ফোনে কোনওরকমে পরিচিতদের খবর দেন তাঁরা। পরে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয় নীলকণ্ঠবাবুকে।

শুক্রবার হাসপাতালে শুয়ে নীলকণ্ঠবাবুর দাবি, “দলেরই বর্ধমান ২ পঞ্চায়েত সমিতির পূর্ত কর্মাধক্ষ্য শক্তিপদ পাল ওরফে বাবলু প্রধান পদ থেকে আমাকে সরিয়ে দিতে প্রচুর চেষ্টা করছিল। বুধবার অনাস্থা আনারও চেষ্টা করে। দলের রাজ্য স্তরের নেতাদের ঘটনার কথা জানাতে অবশ্য অনাস্থা আনা সম্ভব হয়নি। অনাস্থা না আনতে পেরেই আমায় খুনের চেষ্টা করে বাবলুরা।”

এফআইআরে এই শক্তিপদ ওরফে বাবলু, তাঁর ভাই বিবেকানন্দ পাল ওরফে ডাকু, গোপাল বিশ্বাস, সুধাংশু সাঁতরা ও জবা মালিকের নাম রয়েছে বলে বর্ধমান থানা সূত্রে জানা গিয়েছে। গোপালবাবু বৈকুণ্ঠপুর ২ গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্য। জবাদেবীও ওই গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্য। বাকিরা স্থানীয় তৃণমূল নেতা। এদের মধ্যে বিবেকানন্দ পালকে বৃহস্পতিবার রাতেই গ্রেফতার করে পুলিশ। ঘটনাস্থল থেকে একটি লাঠি, কার্তুজের ফাঁকা মিলেছে বলেও জেলা পুলিশ সুপার সৈয়দ মহম্মদ হোসেন মির্জা জানিয়েছেন। হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, রাতেই প্রধানের পা থেকে গুলি বের করা হয়েছে। তাঁর অবস্থা স্থিতিশীল।

প্রধানকে ভয় দেখাতেই ওই হামলা চালানো হয়েছে বলে পুলিশের অনুমান। পুলিশের দাবি, বিবেকানন্দবাবু জেরায় জানিয়েছেন, প্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা পরেও আনা হবে। কারণ ওই পঞ্চায়েতের সাত তৃণমূল সদস্য প্রধানের বিরুদ্ধে চলে গিয়েছেন। ধৃতের দাবি, অনাস্থা আসবে বুঝেই প্রধান নিজেদের লোকেদের কাজে লাগিয়ে গুলির ‘নাটক’ করছেন।

তবে প্রধানের পাল্টা অভিযোগ, বাবলুর ভাই বিবেকানন্দ ওরফে ডাকু একসময় সিপিএমের হয়ে এলাকায় তোলাবাজি ও তৃণমূলের লোকেদের উপর অত্যাচার করত। তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পরেই তৃণমূলের হয়ে ওই একই কাজ করছে।

শুক্রবার ধৃতকে বর্ধমান সিজেএম আদালতে তোলা হলে তাঁর ছ’দিনের পুলিশ হেফাজত হয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

burdwan panchayat tmc
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE