Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

পথবাতির বিদ্যুৎ বিলে ছাড় চায় কালনা পুরসভা

পথবাতির বিদ্যুৎ বিলে ছাড় চায় কালনা পুরসভা। তাঁদের দাবি, পুরসভার কোষাগারের যা হাল তা দিয়ে মাসে কয়েক লক্ষ টাকা বিদ্যুৎ বিল মেটানো যাচ্ছে না। ওই দাবিতে রাজ্যের বিদ্যুৎমন্ত্রী ও বিদ্যুৎ বন্টন নিগমের কর্তাদের চিঠিও দিয়েছে তারা। এমনকী চিঠির উত্তর না আসা পর্যন্ত পথবাতির বিদ্যুৎ বিল মেটানো বন্ধ রাখারও সিদ্ধান্ত নিয়েছে পুরসভা।

এই পথবাতির বিল দিতেই গররাজি কালনা পুরসভা। —নিজস্ব চিত্র।

এই পথবাতির বিল দিতেই গররাজি কালনা পুরসভা। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কালনা শেষ আপডেট: ১৮ এপ্রিল ২০১৪ ০১:৩২
Share: Save:

পথবাতির বিদ্যুৎ বিলে ছাড় চায় কালনা পুরসভা। তাঁদের দাবি, পুরসভার কোষাগারের যা হাল তা দিয়ে মাসে কয়েক লক্ষ টাকা বিদ্যুৎ বিল মেটানো যাচ্ছে না। ওই দাবিতে রাজ্যের বিদ্যুৎমন্ত্রী ও বিদ্যুৎ বন্টন নিগমের কর্তাদের চিঠিও দিয়েছে তারা। এমনকী চিঠির উত্তর না আসা পর্যন্ত পথবাতির বিদ্যুৎ বিল মেটানো বন্ধ রাখারও সিদ্ধান্ত নিয়েছে পুরসভা।

পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, বছর চারেক আগে মাসে বিদ্যুৎ বিল আসত প্রায় সাড়ে তিন লক্ষ টাকা। এখন তা দাঁড়িয়েছে সাড়ে এগারো থেকে বারো লক্ষ টাকায়। পথবাতি ছাড়াও শহরের ২২টি জলের পাম্প, কার্যালয়, পুরশ্রী, পুরবিতান, মালঞ্চ ইত্যাদি জায়গার বিদ্যুৎ বিল চোকাতে হয় পুরসভাকে। ফলে মোটা অঙ্কের বিদ্যুৎ বিল দিতে গিয়ে প্রতি মাসেই হিমশিম খেতে হচ্ছে বলে দাবি পুরসভার। পুরসভার দাবি, নতুন বোর্ড ক্ষমতায় আসার পরে পথবাতিতে সাধারণ বাল্বের পরিবর্তে পিএল লাগানো হয়েছে। তা সত্ত্বেও শহর জুড়ে থাকা হাজার পাঁচেক বাতিস্তম্ভের জন্য তিন থেকে সাড়ে তিন লক্ষ টাকা বিল আসে। মাস তিনেক আগে পুরসভার তরফে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, রাস্তার আলো জ্বালিয়ে পুরসভার কোনও আয় হয় না। অথচ শহরের মধ্যে অজস্র খুঁটি পুঁতে বাড়ি ও বিভিন্ন ব্যবসায়ীক প্রতিষ্ঠানে বিদ্যুৎ সরবরাহ করে বিদ্যুৎ দফতর। কিন্তু সে জন্য পুরসভাকে তারা কোনও কর দেয়না বলে পুরসভার দাবি। বিষয়টি জানিয়ে বিদ্যুৎ মন্ত্রী ও বিদ্যুৎ বণ্টন নিগমের কর্তাদের চিঠিও পাঠিয়েছেন তারা। কালনা পুরসভার আলো বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত কাউন্সিলর আনন্দ দত্ত বলেন, “রাস্তার আলো নিয়ে রাজ্যে আমরাই প্রথম আবেদন করেছি। নাগরিক পরিষেবা দিয়ে তার বিদ্যুৎ বিল যদি আমাদের মেটাতে হয়, তাহলে আমরাও বিদ্যুৎ দফতরের খুঁটি নিয়ে কর ধার্য করার ব্যাপারে ভাবব। আপাতত সরকারি নির্দেশের দিকে তাকিয়ে রয়েছি।” কালনার পুরপ্রধান বিশ্বজিৎ কুণ্ডু বলেন, “আমরা এখনই পথবাতির বিদ্যুৎ বিল না, সে কথা বলছি না। বরং প্রতি মাসে ওই খাতে যে টাকা দেওয়া হত, তা পুরসভা আলাদা করে ব্যাঙ্কে রেখে দিচ্ছে। যদি দেখা যায়, সরকারি ভাবে কোনও অর্থ সাহায্যের আশ্বাস মিলছে না, তাহলে বিদ্যুৎ দফতরের বকেয়া টাকা মিটিয়ে দেবে পুরসভা।” বিশ্বজিৎবাবুই জানান, মাস দুয়েক আগে চেতলার অহীন্দ্র মঞ্চে ১২৬টি পুরসভা নিয়ে একটি বৈঠক হয়। সেখানে ছিলেন পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। প্রশ্ন ওঠে, হাওড়া, কলকাতা, শিলিগুড়ির মতো কর্পোরেশনগুলির বিদ্যুৎ বিল মেটানোর জন্য যদি আলাদ করে অর্থ দেওয়া হয়, তাহলে ওই ,সুবিধে থেকে সাধারণ পুরসভা কেন বঞ্চিত হবে?

এ দিকে টানা তিন মাস রাস্তার আলোর বিল না মেটানোয় পুরসভার বকেয়ার পরিমাণ দাঁড়িয়েছে দশ লক্ষ টাকারও বেশি। টাকা চেয়ে বিদ্যুৎ দফতরের তরফে কয়েকবার চিঠিও পাঠানো হয়েছে। বিদ্যুত দফতরের কালনা ডিভিশনাল ইঞ্জিনিয়ার চঞ্চল বিশ্বাস বলেন, “কী ভাবে টাকা মেটাবে সেটা পুরসভার ব্যাপার। বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যে দফতরের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। আপাতত নির্বাচন পর্যন্ত বকেয়া বিলের জন্য অপেক্ষা করা হবে। তাতেও টাকা না মিললে পুরসভাকে চিঠি পাঠিয়ে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়ার কথা জানানো হবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

street light katoa municipality
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE