Advertisement
E-Paper

বিতর্কসভার বিষয় কেন সিবিআই, প্রশ্ন শিল্পাঞ্চলে

নামে অরাজনৈতিক উত্‌সব। কিন্তু সিবিআই পিছু ছাড়ল না। নাচ, গান, আবৃত্তিতে জমে উঠেছিল উত্‌সব। তার মাঝে বিতর্কসভা। শুক্রবার বিকেলে আসানসোলের ডামরায় ‘কোলফিল্ড উত্‌সব’-এ সেই বিতর্কসভার বিষয় ছিল ‘সভার মতে সিবিআই এখনও খাঁচার পাখি’। আর তা নিয়েই সরব হয়েছে বিরোধীরা। বিতর্কের বিষয় সাহিত্য বা সংস্কৃতি সম্পর্কিত কিছু হলেই ভাল হত বলে দাবি করেছেন শহরবাসীর একাংশও।

নীলোত্‌পল রায়চৌধুরী

শেষ আপডেট: ২৭ ডিসেম্বর ২০১৪ ০২:২৪
চলছে বিতর্ক। —নিজস্ব চিত্র।

চলছে বিতর্ক। —নিজস্ব চিত্র।

নামে অরাজনৈতিক উত্‌সব। কিন্তু সিবিআই পিছু ছাড়ল না।

নাচ, গান, আবৃত্তিতে জমে উঠেছিল উত্‌সব। তার মাঝে বিতর্কসভা। শুক্রবার বিকেলে আসানসোলের ডামরায় ‘কোলফিল্ড উত্‌সব’-এ সেই বিতর্কসভার বিষয় ছিল ‘সভার মতে সিবিআই এখনও খাঁচার পাখি’। আর তা নিয়েই সরব হয়েছে বিরোধীরা। বিতর্কের বিষয় সাহিত্য বা সংস্কৃতি সম্পর্কিত কিছু হলেই ভাল হত বলে দাবি করেছেন শহরবাসীর একাংশও।

ডামরায় ২৪ ডিসেম্বর থেকে শুরু হয়েছে এই উত্‌সব। শেষ হবে আজ, শনিবার। বামেরা রাজ্যে ক্ষমতায় থাকাকালীন এই ডামরায় একই রকম উত্‌সব করত স্পন্দন গোষ্ঠী। সেই উত্‌সবের আয়োজক কমিটিতে থাকতেন মূলত সিপিএম নেতা-কর্মীরা। যদিও উত্‌সবে সরাসরি কোনও রাজনৈতিক রঙ ছিল না। ২০১১ সালের পরে সেই উত্‌সব বন্ধ হয়ে যায়। তার পরে ২০১৩ সাল থেকে শুরু হয়েছে এই কোলফিল্ড উত্‌সব। এটির আয়োজক কমিটিতে রয়েছেন মূলত স্থানীয় তৃণমূল নেতা-কর্মীরা। তবে এই উত্‌সবের গায়েও কোনও রাজনৈতিক রঙ লাগানো হয়নি।

কিন্তু এ বার উত্‌সবের তৃতীয় দিনে তার গায়ে রাজনৈতিক রঙ লাগিয়ে দেওয়া হল বলে অভিযোগ তুলেছে বিরোধীরা। স্পন্দন গোষ্ঠীর সঙ্গে যুক্ত ছিলেন স্থানীয় সিপিএম নেতা মানিক চৌধুরী। এ দিন বিতর্কসভার বিষয় শুনে তাঁর অভিযোগ, “আমরা যখন উত্‌সবের আয়োজন করতাম, বিতর্ক প্রতিযোগিতা রাখা হলেও বিষয় নির্বাচনের ব্যাপারে সব সময় রাজনীতি থেকে দূরে থাকার চেষ্টা করেছি। এটা অস্বীকার করার উপায় নেই যে, ওদের অনুষ্ঠান এলাকায় আগের উত্‌সবের মতোই জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। কিন্তু, এই ধরনের বিষয় নির্বাচন কাম্য নয়। এ নিয়ে এলাকার সাধারণ মানুষজনের মুখেও সমালোচনা শুনছি।”

আসানসোলের লেখক অমল বন্দ্যোপাধ্যায়, চিকিত্‌সক অরুণাভ সেনগুপ্তরাও দাবি করেন, “দু’বছরের এই উত্‌সব এলাকায় জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে। কিন্তু এ বার তাতে সরাসরি রাজনীতির অনুপ্রবেশ ঘটায় সর্বজনীন গ্রহণযোগ্যতা হারানোর সম্ভাবনা তৈরি হল। বিতর্কসভার বিষয় সাহিত্য বা সংস্কৃতি সংক্রান্ত কিছু হলেই ভাল হত।” বিজেপির আসানসোল জেলা সভাপতি নির্মল কর্মকারের কটাক্ষ, “সিবিআইকে তৃণমূল এত ভয় পেয়েছে যে একটা অরাজনৈতিক উত্‌সবেও তাকে ভুলতে পারছে না ওদের নেতারা।”

যদিও গোটা বিষয়টিকে আমল দিতে চাননি উত্‌সব কমিটির অন্যতম কর্তা তথা শহরের তৃণমূল নেতা জিতেন্দ্র তিওয়ারি। তাঁর পাল্টা দাবি, “এর মধ্যে রাজনীতির কোনও ব্যাপার নেই। কিছু দিন আগে দেশের সর্বোচ্চ আদালতই সিবিআইকে ‘খাঁচার পাখি’ বলেছে। তাই বিতর্কসভায় এই বিষয় নির্বাচন নিয়ে আপত্তির কিছু থাকতে পারে না।”

২৪ ডিসেম্বর এই উত্‌সবের সূচনা করেছিলেন আসানসোল রামকৃষ্ণ মিশনের সম্পাদক স্বামী সোহমাত্মানন্দ। ছিলেন আসানসোল দক্ষিণের তৃণমূল বিধায়ক তথা শহরের প্রাক্তন মেয়র তাপস বন্দ্যোপাধ্যায়। খনি এলাকা ডামরায় চার পাশে রয়েছে বেশ কিছু আদিবাসী গ্রাম। লাগোয়া প্রাচীন জনপদ মহীশিলা, কোটালডিহি, ঘুষিক, সাহেবকুঠি গ্রামের মানুষজন এই উত্‌সবে যোগ দেন। প্রথম দিন রবীন্দ্রসঙ্গীতের উপরে একক নৃত্য ও যে কোনও লোকসঙ্গীতের উপরে প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। অঙ্কন প্রতিযোগিতায় শিশুরা ইচ্ছে মতো আঁকার পাশাপাশি বড়রা ‘উত্‌সবমুখর বাংলার ছবি’ এঁকেছেন। ছিল আবৃত্তি প্রতিযোগিতাও। কলকাতার শিল্পীদের সঙ্গে আসানসোলের তপতী মিত্র ও সৃঞ্জয় বিটের গান শ্রোতাদের প্রশংসা কুড়িয়ছে। এ দিন ছিল শঙ্খধ্বনি প্রতিযোগিতা, বিতর্কসভা দু’টি হিন্দি নাটক। আজ, শনিবার থাকছে নাটক ও আদিবীসী শিল্পীদের নিয়ে নানা অনুষ্ঠান।

nilotpal roychowdhury coalfield festival
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy