সকালে কিছুক্ষণ পরপরই তাঁর ঘর থেকে ভেসে আসছিল মোবাইল বেজে ওঠার আওয়াজ। কিন্তু বন্ধু এক বারও ফোন ধরছেন না বুঝে দেখতে যান পাশের ঘরের সহপাঠী। গিয়ে দেখেন, বিছানায় নিথর পড়ে বছর ছাব্বিশের কৌস্তভ মজুমদার।
বিহারের কিষানগঞ্জের মাতা গুজরি মেডিক্যাল কলেজের হস্টেলে মঙ্গলবার মেলে বর্ধমানের খোসবাগানের বাসিন্দা কৌস্তভের দেহ। চিকিৎসকদের অনুমান, ঘুমের মধ্যে হার্ট অ্যাটাকে মৃত্যু হয়েছে তাঁর। দেহ ময়না-তদন্তে পাঠিয়েছে পুলিশ।
বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজের শিক্ষক কৃষ্ণানন্দ মজুমদারের ছেলে কৌস্তভ ২০০৫ সালে উচ্চ মাধ্যমিকে রাজ্যে সপ্তম হয়েছিলেন। বর্ধমান মেডিক্যাল থেকে এমবিবিএস পাশ করার পরে কিষানগঞ্জে ওই বেসরকারি কলেজে এমএস পড়তে যান বছর দুয়েক আগে। বর্ধমানে কৌস্তভের প্রতিবেশী বিশ্বনাথ প্রামাণিক, অঞ্জলি দে-রা জানান, কৃষ্ণানন্দবাবু ক্যানসারে আক্রান্ত। দিল্লিতে এইমসে তাঁর চিকিৎসা চলছে। কৌস্তভের মা-ও সেখানেই রয়েছেন।
কিষানগঞ্জের ওই মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ পঞ্চানন ঘোষও বর্ধমানের ঢলদিঘি পাড়ার বাসিন্দা। এ দিন তাঁর সঙ্গে চেষ্টা করেও যোগাযোগ করা যায়নি। তবে কলেজের ডিরেক্টর তথা এলাকার প্রাক্তন বিজেপি বিধায়ক দিলীপ জায়সবাল জানান, এ দিন সকাল ৮টা নাগাদ কৌস্তভের পাশের ঘরের ছাত্রেরা তাঁকে ডেকে সাড়া না পাওয়ায় হস্টেল কর্তৃপক্ষ ও কলেজের অধ্যক্ষকে বিষয়টি জানান। দিলীপবাবুর দাবি, “বাবার অসুস্থতা নিয়ে কৌস্তভ কিছু দিন ধরেই হতাশায় ভুগছিলেন।” কৌস্তভের সহপাঠীরাও জানান, বেশ ক’দিন ধরে কৌস্তভ চুপচাপ ছিল। কিষানগঞ্জের এসপি মহম্মদ কাশিম জানান, দেহে চোট-আঘাতের চিহ্ন মেলেনি। দেহ ময়না-তদন্তে পাঠানো হয়েছে। বাড়িতেও খবর গিয়েছে।
কৌস্তভের বাবা-মায়ের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। তবে এই মৃত্যুসংবাদ আসার পরে খোসবাগানে শোকের ছায়া নেমে আসে। কৌস্তভের বন্ধু প্রিয়ঙ্করের বাবা স্বপন সামন্ত বলেন, “স্তব্ধ হয়ে গিয়েছি। কী করে এমন হল, বুঝতে পারছি না।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy