Advertisement
১৯ মে ২০২৪

বছর পেরোলেও মেলেনি মজুরি, বিক্ষোভ কৈচরে

একশো দিনের কাজে মজুরি পাচ্ছেন না শ্রমিকরা, এই অভিযোগ তুলে প্রায় ঘণ্টা তিনেক অবস্থান-বিক্ষোভ করল তৃণমূল। বুধবার মঙ্গলকোটের কংগ্রেস পরিচালিত কৈচর ২ পঞ্চায়েতের দফতরে দলীয় পতাকা ঝুলিয়ে বিক্ষোভ দেখায় তারা। শিকেয় ওঠে পঞ্চায়েতের কাজকর্ম।

কৈচর পঞ্চায়েত দফতরের গেট বন্ধ করে বিক্ষোভ তৃণমূলের।—নিজস্ব চিত্র।

কৈচর পঞ্চায়েত দফতরের গেট বন্ধ করে বিক্ষোভ তৃণমূলের।—নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
মঙ্গলকোট শেষ আপডেট: ২২ মে ২০১৪ ০১:০৭
Share: Save:

একশো দিনের কাজে মজুরি পাচ্ছেন না শ্রমিকরা, এই অভিযোগ তুলে প্রায় ঘণ্টা তিনেক অবস্থান-বিক্ষোভ করল তৃণমূল। বুধবার মঙ্গলকোটের কংগ্রেস পরিচালিত কৈচর ২ পঞ্চায়েতের দফতরে দলীয় পতাকা ঝুলিয়ে বিক্ষোভ দেখায় তারা। শিকেয় ওঠে পঞ্চায়েতের কাজকর্ম। পরে কাটোয়া মহকুমার ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট সচ্চিদানন্দ বন্দ্যোপাধ্যায় ও মঙ্গলকোটের বিডিও সুশান্ত মণ্ডল ওই পঞ্চায়েতে গিয়ে শাসক ও বিরোধী দু’পক্ষের সঙ্গে কথা বলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। পঞ্চায়েত দফতরের বাইরে প্রচুর পুলিশও ছিল।

তৃণমূলের অভিযোগ, এক বছরের বেশি সময় ধরে ওই পঞ্চায়েতের বাজার ও বনকাপাশি গ্রামের ১০০ দিনের কাজের কর্মীরা মজুরি পাননি। এমনকী পঞ্চায়েত ওই শ্রমিকদের জন্য ‘মাস্টার রোল’ও তৈরি করেনি। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ১২টি প্রকল্প বাবদ প্রায় ২৩ লক্ষ টাকা বকেয়া রয়েছে ওই কর্মীদের।

বনকাপাশি গ্রামের ১০০ দিনের শ্রমিক লালু মাঝি, বিপদ মাঝি, সুকান্ত ঘোষ, সুফল মাঝিদের অভিযোগ, পঞ্চায়েত আমাদের সঙ্গে অন্যায় করছে। অন্য গ্রামের শ্রমিকেরা মজুরি পেলেও আমরা এক বছর ধরে মজুরি পাচ্ছি না। ওই এলাকার তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি রাঘব ঘোষের অভিযোগ, কংগ্রেস পরিচালিত ওই পঞ্চায়েত আমাদের কর্মী ও সমর্থকদের মজুরি দিতে টালবাহানা করছে। পঞ্চায়েত ইচ্ছা করেই টাকা আটকে রাখছে বলে তাঁর দাবি। এ ছাড়াও পঞ্চায়েতে স্বজনপোষণ, বিভিন্ন প্রকল্পের টাকা নয়ছয়ের অভিযোগ তুলে এ দিন সরব হয় তৃণমূল।

সকাল ১০টা থেকে পঞ্চায়েতের গেটে দলীয় পতাকা লাগিয়ে অবরোধ শুরু করে তৃণমূল। দলের প্রায় আড়াইশো কর্মী-সমর্থক পঞ্চায়েত দফতরের সামনে বসে পড়েন। দফতরে ঢুকতে না পেরে রাস্তাতেই দাঁড়িয়েছিলেন আধিকারিক ও কর্মীরা। আটকে পড়েন ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট ও বিডিও। প্রশাসনের কর্তারা বলেন, “এ ভাবে রোদের মধ্যে রাস্তায় দাঁড়িয়ে কোনও কথা হবে না। আলোচনা করে বিষয়টি মেটাতে হবে।” এ কথা শুনে অবরোধকারীরা রাস্তা ছেড়ে দিলে প্রশাসনের কর্তারা পঞ্চায়েত দফতরে যান। তাঁদের অনুরোধে পঞ্চায়েত প্রধান মিনতি মণ্ডল-সহ অন্য কর্মীরাও ভিতরে ঢোকেন। সেখানে কর্মীদের মজুরি মেটানো নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। মিনতিদেবী বলেন, “বকেয়া মজুরি নিয়ে পঞ্চায়েতের কোনও গাফিলতি নেই।” আলোচনায় ঠিক হয়, আগামী দু’দিনের মধ্যে পঞ্চায়েতের ডাটা এন্ট্রি অপারেটর মঙ্গলকোট ব্লকে বসে অনলাইনে মাস্টার রোল তৈরি করবেন। তারপর বকেয়া মজুরি দেওয়ার ব্যবস্থা করবে পঞ্চায়েত। তবে ওই পঞ্চায়েতের উপপ্রধান এনামূল হকের অভিযোগ (উজ্বল), “ওই ডাটা এন্ট্রি অপারেটরের অসহযোগিতার জন্য এই সমস্যা দেখা দিয়েছে। আমরা তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বিডিওকে চিঠি দিয়েছিলামন। তিনি কোনও ব্যবস্থা নেননি।” তাঁর আরও অভিযোগ, প্রশাসনের কর্তারা মৌখিক ভাবে এক সপ্তাহ ১০০ দিনের কাজ বন্ধের নির্দেশ দিয়ে গিয়েছেন। যদিও এই অভিযোগ মানতে চাননি প্রশাসনের কর্তারা।

মঙ্গলবার সিপিএম পরিচালিত কাটোয়ার সুদপুর পঞ্চায়েতেও আইএসজিপি ও ১০০ দিনের কাজে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে বিক্ষোভ দেখায় তৃণমূল। বুধবার সিপিএমের কাটোয়া জোনাল কমিটির সম্পাদক অঞ্জন চট্টোপাধ্যায় ওই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে বলেন, “আইএসজিপি প্রকল্পে সুদপুর পঞ্চায়েতে এখনও টাকা আসেনি। তেমনি ১০০ দিনের কাজেও কোনও নির্দিষ্ট অভিযোগ নেই।” যদিও তৃণমূলের তোলা অভিযোগগুলির তদন্তের জন্য কাটোয়ার ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট পঞ্চায়েতের বেশ কিছু নথি বজেয়াপ্ত করেছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

koichor mangalkot
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE