Advertisement
E-Paper

মিউজিয়ামকে থানার মালখানা ঢুঁড়ে প্রত্নবস্তু দান করল বর্ধমানের পুলিশ

জেলা জুড়ে বিভিন্ন থানার মালখানায় পড়ে থাকা প্রত্নসামগ্রী বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগ্রহশালায় পৌঁছে দিতে উদ্যোগী হল পুলিশ। সোমবার জেলা পুলিশ সুপার সৈয়দ মহম্মদ হোসেন মির্জা ১১-১২ শতকের একটি পঞ্চতীর্থিকা জৈন মূর্তি বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের কিউরেটর রঙ্গনকান্তি জানার হাতে তুলে দেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৮ জুলাই ২০১৪ ০২:০৩
বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের কিউরেটরের হাতে প্রাচীন মূর্তি তুলে দিচ্ছেন জেলা পুলিশ সুপার সৈয়দ মহম্মদ হোসেন মির্জা।—নিজস্ব চিত্র

বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের কিউরেটরের হাতে প্রাচীন মূর্তি তুলে দিচ্ছেন জেলা পুলিশ সুপার সৈয়দ মহম্মদ হোসেন মির্জা।—নিজস্ব চিত্র

জেলা জুড়ে বিভিন্ন থানার মালখানায় পড়ে থাকা প্রত্নসামগ্রী বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগ্রহশালায় পৌঁছে দিতে উদ্যোগী হল পুলিশ। সোমবার জেলা পুলিশ সুপার সৈয়দ মহম্মদ হোসেন মির্জা ১১-১২ শতকের একটি পঞ্চতীর্থিকা জৈন মূর্তি বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের কিউরেটর রঙ্গনকান্তি জানার হাতে তুলে দেন।

এই পঞ্চতীর্থিকা মূর্তিটি কালনা থানার বৈদ্যপুরে ১০০ দিনের প্রকল্পের কাজ চলার সময় একটি পুকুর খুঁড়তে গিয়ে উদ্ধার হয়েছিল গত ২০১৩ সালের ১৮ মে। কিন্তু কোনও দাবিদার না মেলায়, পুলিশ সেটি কালনা থানায় নিয়ে এসে মালখানায় রাখে। মূর্তিটি প্রায় তিন ফুট লম্বা, দেড় ফুট চওড়া বেলে পাথরের তৈরি। রঙ্গনবাবু বলেন, “ওই মূর্তি উদ্ধারের মাধ্যমে রাঢ়ের সংস্কৃতি ও ইতিহাস চর্চায় এক গুরুত্বপূর্ন অধ্যায়ের সংযোজন ঘটল।”

রঙ্গনবাবুর অনুরোধে বিভিন্ন থানার মালখানা ঢুঁড়ে কী কী ঐতিহাসিক বস্তু রয়েছে, তার তালিকা ও ছবি থানার ওসি বা আইসিকে তাঁর কাছে জমা দিতে বলেন এসপি। তালিকা দেখে তার মধ্যে কোন কোন প্রত্নবস্তুকে সংগ্রহশালায় রাখা যায় তা জানাবেন রঙ্গনবাবু। সেনই মতো পুলিশ বস্তুটিকে মিউজিয়ামে পাঠাতে উদ্যোগী হবে।

পুলিশের উদ্যোগে খুশি রঙ্গনবাবু বলেন, “দীর্ঘদিন ধরেই থানার মালখানায় পড়ে থাকা ঐতিহাসিক বস্তুগুলি সংরক্ষণের চেষ্টা করছিলাম। পুলিশ ও প্রশাসনকে একাধিকবার চিঠিও দিয়েছি। এ উদ্যোগ বাস্তবে রূপায়িত হলে শুধু মিউজিয়ামের দর্শক নয়, ভবিষ্যতের গবেষকদেরও প্রচুর সুবিধা হবে।” বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগ্রহশালার নতুন সংযোজনের খবর উপাচার্য স্মৃতিকুমার সরকার বলেন, “মালখানার অন্ধকারে অবহেলায় পড়ে থাকা ঐতিহাসিক মুর্তি, মুদ্রা পুলিশ আমাদের হাতে তুলে দিতে চায় শুনে ভাল লাগছে।” তিনি জানান, সরকারি নিয়মই হল, থানায় এ ধরনের কিছু পড়ে থাকলে বা জমা পড়লে, তাকে নিকটবর্তী সরকারি সংগ্রহশালায় পাঠানো। রঙ্গনবাবুর দাবি, “একটা সময় পর্যন্ত মালখানার রেজিস্টারে প্রত্নবস্তু বা ঐতিহাসিক মুদ্রার কথা লেখা থাকত, পরে আর তালিকা বাড়েনি। মাঝেমধ্যেই শুনতে পাই নানা মালখানা থেকে হারিয়ে যাচ্ছে প্রত্নসামগ্রী। অনেক সময় গুরুত্ব বুঝতে না পেরে মুদ্রা নষ্টও করে ফেলা হয়। ফলে এগুলির সংরক্ষণ দরকার।”

এসপি বলেন, “যত দ্রুত সম্ভব মালখানায় পড়ে থেকে ঐতিহাসিক বস্তুর তালিকা ও ছবি পাঠাতে বলেছি। সেগুলি পর্যবেক্ষণের জন্য আমরা বিভিন্ন থানায় রঙ্গনবাবুদের পাঠাবো। উনি কোনটি গুরুত্বপূর্ণ, তা চিহ্নিত করলেই সেগুলিকে জেলাশাসকের অনুমতি নিয়ে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের হাতে তুলে দেওয়া হবে।” উপাচার্যও আশ্বাস দিয়েছেন, “আমরা বড় মিউজিয়াম গড়তে চেয়ে ইতিমধ্যেই উদ্যোগ নিয়েছি। ললিতকলা অ্যাকাডেমির তরফে মহতাব মঞ্জিল পরিদর্শনও করা হয়েছে।”

বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় অধীনে বর্ধমান ছাড়াও বাঁকুড়া, বীরভূম ও হুগলির একাংশ ও আসানসোল কমিশনারেট এলাকা রয়েছে। ওই সমস্ত এলাকার থানাগুলিতেও প্রচুর প্রত্নসামগ্রী পড়ে রয়েছে বলে বিশ্ববিদ্যালয়ের দাবি। বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই সমস্ত জেলা পুলিশের কাছেও বর্ধমান জেলা পুলিশের এ হেন উদ্যোগের কথা জানিয়ে চিঠি দেওয়া হবে।

bardwan university museum curetor sayed mahammad hussain mirza
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy