Advertisement
E-Paper

মার্চেই ব্রড গেজে ছুটবে ট্রেন, বদলাবে কাটোয়াও

সব ঠিক চললে এ বছরের মার্চেই কাটোয়া-আমোদপুর ব্রডগেজ লাইনে ট্রেন দৌড়তে শুরু করবে বলে জানিয়েছেন পূর্ব রেলের জেনারেল ম্যানেজার রামকুমার গুপ্তা। তাঁর আশা, কাজ শুরুর দেড় বছরের মাথায় বলগোনা থেকে কাটোয়া পর্যন্ত ব্রডগেজ লাইনের কাজ শেষ হয়ে যাবে। এ ছাড়া হাওড়া ডিভিশনের অন্যতম জরুরি ব্যান্ডেল-কাটোয়া শাখাতেও খুব দ্রুত ডবল লাইনের কাজ সম্পূর্ণ হয়ে যাবে বলে তাঁর আশ্বাস।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০০:৫১
বনকাপাশি গ্রামে চলছে বলগোনা-কাটোয়া ছোট লাইন তোলার কাজ। ছবি: অসিত বন্দ্যোপাধ্যায়।

বনকাপাশি গ্রামে চলছে বলগোনা-কাটোয়া ছোট লাইন তোলার কাজ। ছবি: অসিত বন্দ্যোপাধ্যায়।

সব ঠিক চললে এ বছরের মার্চেই কাটোয়া-আমোদপুর ব্রডগেজ লাইনে ট্রেন দৌড়তে শুরু করবে বলে জানিয়েছেন পূর্ব রেলের জেনারেল ম্যানেজার রামকুমার গুপ্তা। তাঁর আশা, কাজ শুরুর দেড় বছরের মাথায় বলগোনা থেকে কাটোয়া পর্যন্ত ব্রডগেজ লাইনের কাজ শেষ হয়ে যাবে। এ ছাড়া হাওড়া ডিভিশনের অন্যতম জরুরি ব্যান্ডেল-কাটোয়া শাখাতেও খুব দ্রুত ডবল লাইনের কাজ সম্পূর্ণ হয়ে যাবে বলে তাঁর আশ্বাস।

সপ্তাহ দু’য়েক আগে হাওড়া ডিভিশনের ব্যান্ডেল-কাটোয়া ও আজিমগঞ্জ-কাটোয়া শাখা পরিদর্শনে এসেছিলেন পূর্ব রেলের জিএম। তাঁর সঙ্গে ছিলেন হাওড়ার ডিআরএম অনির্বাণ দত্ত থেকে শুরু করে অন্য আধিকারিকেরা। কাটোয়া স্টেশনে দাঁড়িয়ে পূর্ব রেলের জিএম কাটোয়াকে ঘিরে রেল দফতরের চিন্তাভাবনা কবে থেকে কার্যকর হবে তা জানিয়ে যান। রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, খাতায়-কলমে কাটোয়া ‘জংশন’ স্টেশন হলেও, যাত্রী পরিষেবার দিক থেকে বেশ পিছিয়ে ছিল। এ বার অন্য জংশন স্টেশন যে মর্যাদা পেয়ে থাকে কাটোয়া স্টেশনকেও সেই মর্যাদা দেবে রেল। জানা গিয়েছে, প্রাথমিক ভাবে সাতটি প্লাটফর্ম তৈরি হবে, বাসস্ট্যান্ডের দিকে নতুন টিকিট কাউন্টার-সহ যাত্রী পরিষেবার মান বাড়ানো হবে। রেলের এক আধিকারিক বলেন, “কয়েক মাসের মধ্যেই কাটোয়া স্টেশনে উন্নয়নের কাজ শুরু হয়ে যাবে।”

আমোদপুর-কাটোয়া লাইনে প্রথম দিকে কাজ দ্রুত গতিতে এগোলেও বছরের শেষে কাজের গতি কিছুটা কমে। তবে আমোদপুর থেকে নিরোল পর্যন্ত লাইনে বেশির ভাগ জায়গায় মাটির কাজ শেষ হয়ে গিয়েছে, সেতু ও কালভার্টের কাজও শেষের দিকে। আমোদপুর থেকে কান্দরা পর্যন্ত দুটি পর্যায়ে লাইন বসানোর কাজও প্রায় শেষ। পূর্ব রেল কর্তৃপক্ষের আশা, এ বছরের মার্চেই বীরভূমের আমোদপুর থেকে কীর্ণাহার পর্যন্ত ট্রেন চলতে শুরু করবে। তবে বাকি অংশের ভবিষ্যত্‌ নিয়ে খুব একটা আশার কথা শোনাতে পারেনি রেল কর্তৃপক্ষ। পূর্ব রেলের জিএম রামকুমার গুপ্ত জানান, তাঁরা এই প্রকল্পের বাকি অংশে অর্থ বরাদ্দ করার জন্য রেল মন্ত্রকের কাছে আবেদন করেছেন। তাঁর আশা, রেল বাজেটে অর্থের সংস্থান হলেই দ্রুত গতিতে কাজ শুরু হয়ে যাবে।

২০১২ সালের ডিসেম্বরে ৫২ কিলোমিটার কাটোয়া-আমোদপুর লাইনের টেন্ডার ডাকে রেল দফতর। পুরো পথটিকে ছ’ভাগে ভাগকরে টেন্ডার ডাকা হয়। আমোদপুর থেকে লাউঘাটা ব্রিজ (এ ও বি সেকশন) পর্যন্ত ৬৫ কোটি টাকা, লাভপুর থেকে কীর্ণাহার (সি সেকশন) ২০ কোটি, কীর্ণাহার থেকে কান্দরা (ডি সেকশন) ২০.৫৭ কোটি, কান্দরা থেকে পাঁচুন্দি (ই সেকশন), ও পাঁচুন্দি থেকে নবগ্রাম হল্ট (এফ সেকশন) ২৪.৭৩ টাকা খরচ ধরা হয়। এ ছাড়াও স্থানীয় মানুষজনের চাহিদা বাবদ খরচা ধরে ওই লাইনের প্রাথমিক খরচ ধরা হয় আনুমানিক ১৬০ কোটি টাকা। রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, তিন বছরের মধ্যে ওই লাইনে ট্রেন চালানোর পরিকল্পনা নেওয়া হয়। প্রাথমিক কাজ ১৮ মাসের মধ্যে শেষ করতে হবে বল প্রেজেক্ট ইঞ্জিনিয়ারদের জানিয়ে দেয় রেল। তবে রেলের কাজ ঢিমেতালে চলছে বলে অভিযোগ চিল অনেকেরই। বর্ধমানের কেতুগ্রামের নিরোল গ্রামের বাসিন্দা আশিস রায় অভিযোগ করেন, “টাকার অভাবে প্রথম থেকেই এই রেলপথের কাজ ধীরে গতিতে চলছে।” তবে রেলের একাধিক আধিকারিকের দাবি, রাষ্ট্রপতির স্মৃতি বিজড়িত এই রেলপথ দ্রুত শেষ করার জন্য তিনি নিজেই উদ্যোগী হয়েছেন। এ ছাড়া প্রস্তাবিত কাটোয়া তাপবিদ্যুত্‌ কেন্দ্রের কয়লা বীরভূমের মহম্মদবাজার ব্লকের পাঁচামি থেকে আসার সম্ভাবনা বাড়ছে দেখে রেলও ব্যবসার নিরিখে আমোদপুর-কাটোয়া রেলপথ দ্রুত শেষ করতে উদ্যোগী হয়েছে। এই রেলপথেই ২০১৩ সালের ১৩ জানুয়ারি শেষবারের মত ছোট রেল চলেছিল।

বর্ধমান-কাটোয়া রেলপথের একাংশ বর্ধমান থেকে বলগোনা আগেই ব্রডগেজ আগেই হয়ে গিয়েছে। প্রস্তাবিত কাটোয়া বিদ্যুত্‌ প্রকল্পকে সামনে রেখে এই রেলপথকে ছোট থেকে বড় করার উদ্যোগ করেছিল রেল কর্তৃপক্ষ। গত বছর মার্চে এনটিপিসি দু’দফায় ১১২ কোটি ৫৭ লক্ষ টাকা রেল কর্তৃপক্ষের হাতে তুলে দেয়। বিজেপি সরকার ক্ষমতায় আসার পর রেল বাজেটে তা অন্তর্ভুক্তি করে। বলগোনা থেকে কাটোয়া, এই ২৬ কিলোমিটার রেলপথের জন্য মাটির কাজ, সেতু ও কালভার্ট সংস্কার এবং সম্প্রসারণ, লাইন পাতার কাজ, স্টেশনের উন্নয়ন ও যাত্রী পরিষেবার মানোন্নয়নের জন্য রেল কর্তৃপক্ষ কাজের বরাত দিয়ে দিয়েছে। কয়েকদিন আগে থেকে ন্যারোগেজ লাইন তুলে ফেলার কাজও শুরু হয়ে গিয়েছে। বলগোনা, বনকাপাশি-সহ বিভিন্ন জায়গায় লাইনপাতার জন্য মাটির কাজও শুরু করে দিয়েছে ঠিকাদার সংস্থা। রেলের আধিকারিকদের আশা, আগামী দেড়-দু’বছরের মধ্যে কাটোয়া-বলগোনা ব্রডগেজ তৈরির কাজ শেষ হয়ে যাবে।

katoa broad gauge train
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy