মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ মহিলাদের সম্পর্কে অসম্মানজনক মন্তব্য করা সত্ত্বেও পুলিশ তাঁর বিরুদ্ধে এফআইআর নিতে চাইছে না বলে অভিযোগ।
শুক্রবার দুপুরে বর্ধমানের কালনা থানায় মন্ত্রীর বিরুদ্ধে ওই অভিযোগ দায়ের করতে গিয়েছিলেন বিপ্লবকুমার চৌধুরী নামে বিরাটির এক বাসিন্দা। এর আগে বিভিন্ন ঘটনায় তিনি একের পর এক মামলা রুজু করেছেন। যার মধ্যে নদিয়ার চৌমুহায় সাংসদ তাপস পালের কুকথা থেকে শুরু করে এই সদ্য বিধায়ক প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়ের ট্রাফিক কনস্টেবলকে চড় মারার অভিযোগ রয়েছে।
এ দিন অভিযোগপত্র হাতে নিয়েই বিপ্লববাবু কালনা থানায় গিয়েছিলেন। তাঁর অভিযোগ, এক পুলিশকর্মী জানান, সেটি ওসি দীপঙ্কর সরকারের ঘরে পাঠানো হচ্ছে। কিন্তু পরে ওসির কাছে অভিযোগ গ্রহণের নথি চাইলে তিনি তা দেননি বলে বিপ্লববাবুর অভিযোগ। পরে তিনি অভিযোগপত্র ফিরিয়ে নেন। বিপ্লববাবুর হুঁশিয়ারি, এর পরে তিনি ডাকযোগে ওসি, এসডিপিও (কালনা), বর্ধমানের পুলিশ সুপার এবং রাজ্য পুলিশের ডিজিকে পাঠাবেন। তার পরেও পুলিশ মামলা রুজু না করলে উচ্চ আদালতে যাবেন। তবে স্বপনবাবুর দাবি, “আমি মামলা করার মতো কিছু বলিনি। কারও নাম করেও কিছু বলিনি। তবে মামলার অধিকার সকলের আছে।”
কী বলেছিলেন মন্ত্রী, যার জন্য তাঁর বিরুদ্ধে মামলা হবে? বিপ্লববাবুর অভিযোগ, ১২ জানুয়ারি কালনার গোপালদাসপুরে তৃণমূলের সভায় স্বপনবাবু বলেন, “সিপিএমের মহিলা নেত্রীদের কথা আর বলবেন না। মহিলা সমিতির অনেক নেত্রীকে জানি, যিনি নিজের ব্লাউজ ছিঁড়ে অভিযোগ করেছেন, অমুকে আমার ব্লাউজ ছিঁড়ে দিয়েছে। আমার শালীনতা হরণ করেছে।” সিপিএমের রাজ্য কমিটির সদস্য তথা গণতান্ত্রিক মহিলা সমিতির রাজ্য সভানেত্রী অঞ্জু করের নাম না করেও তিনি বলেন, “এখানকার নেত্রীর পজিশন কম। কালনা ছেড়ে তাঁকে রাত কাটাতে হয় সুলুন্টুতে (পূর্বস্থলীর গ্রাম)। নাটক করে বাজার গরম না করলে কলকাতার বাজারে দাম পাচ্ছেন না উনি।”
কালনা থানা সূত্রে অবশ্য দাবি, তারা অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেনি। এক অফিসারের কথায়, “অভিযোগ পড়ে আমাদের মনে হয়েছে, মানহানির মামলা হতে পারে। তার জন্য সঠিক জায়গা আদালত। তা সত্ত্বেও ওই ব্যক্তিকে অভিযোগপত্র রেখে যেতে বলা হয়েছিল। কিন্তু তিনি আমাদের কথা শোনেননি।” আইনজীবী অরুণাভ ঘোষ বলেন, “এক ধরনের মানাহানির মামলা আদালতে রুজু করতে হয় ঠিকই। কিন্তু এটা সে ধরনের ঘটনা নয়। এ ক্ষেত্রে পুলিশ স্বচ্ছন্দে অভিযোগ নিতে পারত।”
মন্ত্রীর মন্তব্য প্রসঙ্গে অঞ্জু কর আগেই বলেছিলেন, “যে দলের নেত্রীর মুখে শালীনতা নেই, তাঁদের কাছে কি আশা করা যায়। ওই নেতার কুরুচিকর কথা নারী সমাজকে অপমানিত করেছে।” তবে এ দিন বিপ্লববাবুর অভিযোগ দায়েরের চেষ্টা প্রসঙ্গে তিনি মন্তব্য করতে চাননি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy