Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

যাতায়াতে সুবিধা, টোটোকে বৈধতা দিতে উদ্যোগী পুরসভা

দিনে হোক বা রাতে, শহরের এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে যাতায়াত মানেই চিন্তায় পড়ে যেতেন শহরবাসী। কখনও রিকশা চালকদের একাংশের মাত্রাতিরিক্ত ভাড়া চাওয়া, কখনও কিছু ভ্যান চালকদের অভব্য আচরণএর থেকে রেহাই পেতে বিকল্প যানের খোঁজ চলছিলই। তারমধ্যেই ব্যাটারিচালিত টোটো গাড়ি এসে যাওয়ায় যেন হালে পানি পান দাঁইহাটের বাসিন্দারা। রিকশাওয়ালাদের ‘আপত্তি’ অগ্রাহ্য করে সংখ্যাও বাড়তে থাকে টোটোর। বাড়তে থাকে জনপ্রিয়তাও।

নিজস্ব সংবাদদাতা
দাঁইহাট শেষ আপডেট: ০৩ ডিসেম্বর ২০১৪ ০১:১৯
Share: Save:

দিনে হোক বা রাতে, শহরের এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে যাতায়াত মানেই চিন্তায় পড়ে যেতেন শহরবাসী। কখনও রিকশা চালকদের একাংশের মাত্রাতিরিক্ত ভাড়া চাওয়া, কখনও কিছু ভ্যান চালকদের অভব্য আচরণএর থেকে রেহাই পেতে বিকল্প যানের খোঁজ চলছিলই। তারমধ্যেই ব্যাটারিচালিত টোটো গাড়ি এসে যাওয়ায় যেন হালে পানি পান দাঁইহাটের বাসিন্দারা। রিকশাওয়ালাদের ‘আপত্তি’ অগ্রাহ্য করে সংখ্যাও বাড়তে থাকে টোটোর। বাড়তে থাকে জনপ্রিয়তাও। শহরবাসীর সুবিধার্থে পুর-কর্তৃপক্ষও এ বার সরকারি নিয়মনীতি মেনে ওই টোটোগুলিকে বৈধতা দেওয়ার চিন্তাভাবনা শুরু করেছে।

কয়েক মাস আগে দাঁইহাট শহরে চালু হয় টোটো। তার আগে পর্যন্ত দাঁইহাট স্টেশন থেকে মাটিয়ারি ঘাট বা চৌরাস্তা যাওয়ার জন্য মুশকিলে পড়তেন যাত্রীরা। এক শ্রেণির রিকশা ও ভ্যান চালকদের খারাপ আচরণ এবং মাত্রতিরিক্ত ভাড়া চাওয়া নিয়েও অভিযোগ ছিল। সেই সময়েই টোটো চালু হওয়ায় যাতায়াতে কিছুটা স্বস্তি পান সাধারণ বাসিন্দারা। চাহিদাও বাড়তে তাকে ব্যাটারিচালিত ওই গাড়ির। টোটো চালকেরা জানান, চাহিদা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে রুটও বাড়তে শুরু করেছে টোটো গাড়ির। এখন দাঁইহাট থেকে কাটোয়া কিংবা কাছাকাছি গ্রামেও যাত্রী নিয়ে যাতায়াত করছে ‘টোটো’। তবে সরকারি ভাবে এখনও টোটোর দাঁড়ানোর জায়গা দিতে পারেনি দাঁইহাট পুরসভা। তাই ওই ব্যাটারিচালিত গাড়িগুলি আপাতত দাঁইহাট স্টেশন থেকে বেরিয়ে স্কুল যাওয়ার রাস্তায়, মাটিয়ারি ঘাটের কাছে ও এসটিকেকে রোডের দাঁইহাট চৌরাস্তায় দাঁড়াচ্ছে। পুরসভার কাছে, এমনকী টোটো চালকদের কাছেও এখনও পর্যন্ত কতগুলি ব্যাটারি চালিত গাড়ি দাঁইহাট পুর এলাকায় চলাচল করছে তার হিসেব নেই। তবে পুর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ওই সব টোটোচালক বা মালিকদের শীঘ্র ডেকে এ ব্যাপারে বিস্তারিত জানতে চাওয়া হবে।

টোটো চালকেরা জানান, ব্যাটারিচালিত গাড়ি হওয়ায় দূষণের ভয় নেই। রাতে ৮ ঘন্টা ব্যাটারি চার্জ দিলে দিনের বেলায় ৭০-৮০ কিলোমিটার রাস্তা সহজেই যাতায়াত করা যায়। আর মোটামুটি ভাবে ১ লক্ষ ১৫ হাজার টাকা দাম হওয়ায় কেনাটাও তুলনামূলক ভাবে সহজসাধ্য। শহরে এই গাড়ি চালিয়ে কর্মসংস্থানের পথ খুঁজে নিয়েছেন শিক্ষিত যুবকেরাও। বলাই রাজোয়ার, বিশ্বজিৎ রায়দের মতো টোটো চালকরা বলেন, “এই গাড়ি চালিয়ে যা আয় হয়, তাতে ভাল ভাবেই সংসার চলে যায়।” পুরসভা বা সরকার টোটো কিনতে সাহায্য করলে ওই গাড়ি আরও বাড়বে বলেও তাদের দাবি। ওই গাড়ির চালকেরা আরও জানান, রিকশার তুলনায় ‘টোটো’র ভাড়া কম। আবার রিকশার চেয়ে দ্রুত যাতায়াত করে টোটো। ফলে প্রয়োজনের জায়গায় কম ভাড়ায় অনেক তাড়াতাড়ি পৌঁছতে পারছেন মানুষ। আর এক চালক নিমাই মণ্ডল বলেন, “আমরা শৃঙ্খলা মেনে গাড়ি চালাই। যাত্রীদের সঙ্গে বাজে ব্যবহারও করি না।” তবে গোড়ার দিকে শহরে ‘টোটো’ চলাচল নিয়ে পুর কর্তৃপক্ষের কাছে বেশ আপত্তি জানিয়েছিলেন রিকশাচালকেরা। এখন অবশ্য বাস্তবটা বুঝেছেন অনেকেই। শহরের রিকশাচালক প্রদীপ দাস, নবকুমার বৈরাগ্যেরা বলেন, “কায়িক পরিশ্রম বেশি হওয়ায় আমাদের ভাড়া তুলনায় বেশি। তাই অনেক যাত্রীই ব্যাটারি চালিত গাড়ির দিকে ঝুঁকছেন।”

তবে টোটোগুলি এখনও কোনও বৈধতা পায়নি। পুরসভার কাছে গাড়িগুলিকে বৈধতা দেওয়ার জন্য আবেদন করেছেন টোটো চালকেরা। আবেদন পেয়ে দাঁইহাটের কংগ্রেসের পুরপ্রধান সন্তোষ দাস বর্ধমানে আঞ্চলিক পরিবহণ দফতরের কর্তার কাছে গিয়ে বিষয়টি জানিয়েছেন। সন্তোষবাবু বলেন, “আমাদের লাইসেন্স দেওয়ার জন্য পরিবহণ কর্তা বলেছেন। আমরা ব্যাটারিচালিত গাড়ির চালক বা মালিকদের সঙ্গে বৈঠক করে ভাড়া ও লাইসেন্স দেওয়া নিয়ে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেব।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

dainhat toto
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE