আটকানো হয়েছে এই লরিটিকে।—নিজস্ব চিত্র।
দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ দুর্গাপুরের জেসপ কারখানায় লোহার যন্ত্রাংশ নিতে আসা একটি লরিকে আটকে দিলেন কর্মরত নিরাপত্তারক্ষী ও ঠিকা শ্রমিকেরা। তাঁদের অভিযোগ, এর আগেও কারখানা খোলার প্রতিশ্রুতি দিয়ে লোহার যন্ত্রাংশ বের করা হয়, কিন্তু কারখানা খোলেনি।
বৃহস্পতিবার কারখানা চত্বরে ঢোকা লরিটির ভিতর থেকে কয়েকজন ব্যক্তি ওই কর্মীদের জানান, কর্তৃপক্ষ কিছু যন্ত্রাংশ নিয়ে যেতে চান। কিন্তু সন্দীপ সিংহ, অনুপ রায়ের মতো ঠিকাকর্মীরা ওই লরিটিকে আটকে অভিযোগ করেন, “এর আগেও কারখানা থেকে প্রায় সাড়ে ছয়শো টন যন্ত্রাংশ সরানো হয়েছে। কিন্তু তারপরেও করাখানা খোলে নি।” তাঁদের আরও অভিযোগ, ২০০৮ সাল থেকে তাঁরা কাজ করছেন। কিন্তু এখনও পর্যন্ত প্রতি মাসে বেতন মেলে না। বেশকয়েক মাস অন্তর বকেয়া মেটানো হয়।
লরি আটকানোর খবর পেয়ে কারখানায় পুলিশ যায়। পুলিশের তরফে ঠিকাকর্মীদের জানানো হয়, পুরো বিষয়টি নিয়ে কারখানা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হচ্ছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ১৯৫৮ সালে জেসপ কারখানাটি চালু হয়। মূলত ফাউন্ড্রি, ক্রেন, রেলের বগি ও রোলার তৈরি হতো কারখানায়। প্রায় সাড়ে ৪ হাজার কর্মী কারখানায় কাজ করতেন। ১৯৭১ সালে কেন্দ্র সরকারের ভারি শিল্প মন্ত্রক কারখানাটি অধিগ্রহণ করে। কিন্তু বিভিন্ন কারণে নয়ের দশকের গোড়া থেকেই রুগ্ন হতে শুরু করে কারখানাটি। ১৯৯৯ সাল নাগাদ কারখানাটি পাকাপাকিভাবে বন্ধ হয়ে যায়। চার বছর বন্ধ থাকার পর ২০০৩ সালে প্ল্যান্ট সমেত কারখানার ১১৭ একর জমি ১৮ কোটি টাকায় কিনে নেয় রুইয়া গোষ্ঠী। তখন কর্তৃপক্ষের তরফে রেলের বগি এবং কাপলিং তৈরি করা হবে বলা হলেও বাস্তবে তা হয় নি। ২০০৮ সাল নাগাদ রুইয়া গোষ্ঠী কারখানার জমির একাংশের চরিত্র বদল করে আবাসন প্রকল্প ও তথ্যপ্রযুক্তি পার্ক গড়ার আর্জি জানায় আসানসোল- দুর্গাপুর উন্নয়ন পর্ষদের (এডিডিএ) কাছে। কিন্তু এডিডিএ তা নাকচ করে দেয়। দীর্ঘদিন ধরে বিদ্যুত্ ও জলের বিল বকেয়া থাকায় সংযোগও ছিন্ন করে দেয় ডিপিএল।
এডিডিএ’র চেয়ারম্যান তথা দুর্গাপুরের তৃণমূল বিধায়ক নিখিল বন্দ্যোপাধ্যায় জেসপ কারখানা খোলার ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট দফতরে দরবার করার আশ্বাস দিয়েছেন। তবে এ দিন কারখানা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায় নি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy