দু’দিন পরেই জেলার দু’টি কেন্দ্রে লোকসভা ভোট। তার আগে ‘মা-মাটি-মানুষ’য়ের নাম দিয়ে মঙ্গলকোটে তৃণমূলের নেতাদের একাংশের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ করে প্রচারপত্র (লিফলেট) ছড়ানো হয়েছে। এই ঘটনা ঘটেছে মঙ্গলকোটে। লিফলেটটিতে তৃণমূলের একশ্রেণীর নেতার বিরুদ্ধে দুর্নীতিতে যুক্ত থাকার অভিযোগ করা হয়েছে। তৃণমূলের ব্লক নেতৃত্বের অবশ্য দাবি, ভোটের মুখে বিভ্রান্তি ছড়ানোর জন্য সিপিএম এই প্রচারপত্র ছড়াচ্ছে।
‘মা-মাটি-মানুষ’এর নাম দিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশে লেখা ‘খোলা চিঠি’তে দাবি করা হয়েছে, পরিবর্তনের আগে মঙ্গলকোটে তৃণমূল কর্মীদের বাড়ি পুড়েছে। কিন্তু তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পরে তাঁদের কোনও সুরাহা হয়নি। অভিযোগ করা হয়েছে, ক্ষমতায় আসার পরেই কৈচরে বর্ধমান-কাটোয়া রাজ্য সড়কের উপর খাসজমি দখল করে ও তোলা আদায় করে তৃণমূলের বিশাল অফিস তৈরি হয়েছে। মঙ্গলকোটের বিডিও এবং সরকারি কর্মচারীদের প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় ঠিকাদারদের কাছ থেকে কমিশন আদায় করা হচ্ছে। লিফলেটে দাবি করা হয়েছে, মঙ্গলকোটের ‘শহিদ ও সংগ্রামী পরিবার’দের কাজ না দিয়ে মোটা টাকার বিনিময়ে সিপিএম পরিবারের সদস্যদের পুলিশ, ও শিক্ষকদের চাকরি দেওয়া হয়েছে। অথচ, সিপিএমের আমলে খুন হওয়া খেঁড়ুয়া গ্রামের পূর্ণিমা মাঝি, দিলীপ ঘোষের পরিবার, বক্সিনগরের আলাউদ্দিন শেখ, মনোয়ারপুরের হাসমত শেখের পরিবার ধুঁকছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক বিক্ষুব্ধ তৃণমূল নেতা বলেন, মঙ্গলকোটের বিডিওর ঘরের পাশে টাকার ভাগাভাগি হয়। দুর্নীতির প্রতিবাদ করলে দলের ব্লক সভাপতি অভব্য আচরণ করেন। দল থেকে তাড়িয়ে দেওয়া কিংবা মিথ্যা অভিযোগে ফাঁসিয়ে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়। ওই নেতার দাবি, জেলা ও রাজ্য নেতৃত্বকে এই বিষয়ে জানানো হলেও সুরাহা মেলেনি। তবে, ওই বিক্ষুদ্ধ নেতা অবশ্য ওই লিফলেট ছাপানোর দায় স্বীকার করেননি।
মঙ্গলকোটের বিডিও তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। মঙ্গলকোটের তৃণমূলের ব্লক সভাপতি অপূর্ব চৌধুরী অবশ্য সব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “সিপিএম মাওবাদীদের কায়দায় রাতের অন্ধকারে এই ‘খোলা চিঠি’ ছড়াচ্ছে।” সিপিএমের ভাগীরথী অজয় জোনাল কমিটির সম্পাদক দূর্যোধন সরের দাবি, “তৃণমূলে বিক্ষুব্ধ গোষ্ঠীর লোকেরাই ওই সব প্রচারপত্র ছড়িয়েছে।”