পানাগড়ে শিল্পতালুকের নির্মীয়মাণ রাস্তায় বিক্ষোভ খেতমজুরদের। —নিজস্ব চিত্র।
খেতমজুরদের অনেকে ক্ষতিপূরণ পাননি। অনেকের ক্ষতিপূরণের চেক নিতে চায়নি ব্যাঙ্ক। খেতমজুর না হয়েও কেউ কেউ ক্ষতিপূরণ পেয়েছেন। এমন নানা অভিযোগে বুধবার পানাগড় শিল্পতালুকে রাস্তা তৈরির কাজ বন্ধ করে দিলেন খেতমজুর ও বর্গাদারেরা। ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরের আধিকারিকেরা এলেও সমস্যার সুরাহা না হওয়া পর্যন্ত কাজ করতে দেওয়া হবে না বলে হুঁশিয়ারি দেন কাঁকসার বিভিন্ন এলাকার শ’দুয়েক খেতমজুর।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, পানাগড় শিল্পতালুকের জন্য জমি অধিগ্রহণ করা হয় ২০০৯ সালে। জমি মালিকদের চেক বিলি করা হয়ে গিয়েছে আগেই। কিন্তু খেতমজুর ও বর্গাদারদের ক্ষতিপূরণের বিষয়টি এখনও মেটেনি। গত নভেম্বরে স্থানীয় আমানিডাঙা প্রাথমিক স্কুলে শ’খানেক খেতমজুরকে ক্ষতিপূরণ বাবদ ৩৭,৫০০ টাকার চেক দেওয়া হয়েছিল। অভিযোগ, সেই চেক জমা দিতে গেলে নিতে চাননি ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ। ফলে, টাকা হাতে পাননি তাঁরা। অনেকেই এখনও চেক হাতে পাননি এবং অনেকে প্রকৃত খেতমজুর না হয়েও ক্ষতিপূরণের টাকা পেয়েছেন বলেও অভিযোগ। খেতমজুর সুমি মান্ডি বলেন, “এ সবের প্রতিবাদে আমরা রাস্তার কাজ বন্ধ করে দিয়েছি।”
খেতমজুরেরা জানান, তাঁরা আমানিডাঙা, ঝিনুকগড়, পোরালপাড়া, শেরপুর, মাধবমাঠ এলাকার বাসিন্দা। প্রায় সাতশো একর জমি অধিগ্রহণ করেছে রাজ্য শিল্পোন্নয়ন নিগম। সেই জমিতেই খেতমজুরের কাজ করতেন বলে দাবি তাঁদের। তেমন প্রায় একশো জনকে নভেম্বরের ২১ তারিখ নির্দেশিত বেসরকারি ব্যাঙ্কের চেক দেওয়া হয়েছিল। ব্যাঙ্কে গিয়ে তাঁরা চেক জমা দিতে গেলে ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ জানিয়ে দেওন, তাঁদের কাছে এই চেক আপাতত জমা না নেওয়ার নির্দেশ রয়েছে। ক্ষুব্ধ খেতমজুরেরা তার পরে বারবার প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েছেন। কিন্তু কোনও লাভ হয়নি। মঙ্গলবার তাঁরা ব্লক অফিসে গিয়ে বিক্ষোভ দেখান। বুধবার কাজ বন্ধ করে দেন। পরিস্থিতি বেগতিক দেখে ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরের তিন আধিকারিক ঘটনাস্থলে পৌঁছন। তাঁদের ঘিরে বিক্ষোভ দেখান খেতমজুররা।
ভুমি ও ভূমি সংস্কার দফতরের সার্ভেয়ার প্রতিভাময় ঘোষ জানান, কিছু নির্দিষ্ট সমস্যার জন্য সেই সময় ‘স্টপ পেমেন্ট’ করতে হয়েছিল। তাই সমস্যা দেখা দেয়। এখন অবশ্য তা মিটে গিয়েছে। প্রকৃত খেতমজুরদের ক্ষতিপূরণ না পাওয়া এবং খেতমজুর না হয়েও ক্ষতিপূরণ তুলে নেওয়ার অভিযোগ প্রসঙ্গে ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরের তরফে জানানো হয়, এ ব্যাপারে সমীক্ষা চলছে। বৈধ সব খেতমজুরই ক্ষতিপূরণ পাবেন বলে আশ্বাস দফতরের কর্তাদের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy