Advertisement
১৭ এপ্রিল ২০২৪

শিশুকন্যা খুনের নালিশ, কাটোয়ায় ধৃত নাবালিকা মা

বিবাহ-বহির্ভূত সম্পর্কের জেরে তিন মাসের শিশুকন্যাকে বালিশ চাপা দিয়ে শ্বাসরোধ করে খুন করার অভিযোগ উঠল নাবালিকা মায়ের বিরুদ্ধে। অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। শনিবার সকাল ৯টা নাগাদ ঘটনাটি ঘটেছে বর্ধমানের কাটোয়া শহরের অজয় বাঁধ লাগোয়া ঘুটকিয়া পাড়া-সর্দার পল্লি এলাকায়। বর্ধমানের পুলিশ সুপার সৈয়দ মহম্মদ হোসেন মির্জার দাবি, জেরার মুখে ধৃত দোষ স্বীকার করে নিয়েছে।

বাড়ির সামনে জটলা। —নিজস্ব চিত্র।

বাড়ির সামনে জটলা। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কাটোয়া শেষ আপডেট: ২৫ জানুয়ারি ২০১৫ ০০:০১
Share: Save:

বিবাহ-বহির্ভূত সম্পর্কের জেরে তিন মাসের শিশুকন্যাকে বালিশ চাপা দিয়ে শ্বাসরোধ করে খুন করার অভিযোগ উঠল নাবালিকা মায়ের বিরুদ্ধে। অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। শনিবার সকাল ৯টা নাগাদ ঘটনাটি ঘটেছে বর্ধমানের কাটোয়া শহরের অজয় বাঁধ লাগোয়া ঘুটকিয়া পাড়া-সর্দার পল্লি এলাকায়। বর্ধমানের পুলিশ সুপার সৈয়দ মহম্মদ হোসেন মির্জার দাবি, জেরার মুখে ধৃত দোষ স্বীকার করে নিয়েছে। পুলিশ সুপার আরও জানিয়েছেন, ধৃতের জবানবন্দি ভিডিও রেকর্ডিং করে রাখা হয়েছে। যদিও এ দিন দুপুরে কাটোয়া থানায় লিখিত অভিযোগ করে ধৃতের স্বামী বুদ্ধদেব থাণ্ডার দাবি করেন, তাঁর স্ত্রীর সর্ম্পকিত এক জ্যাঠা ও তার স্ত্রী যৌথভাবে এই খুনের জন্য দায়ী।

কাটোয়া শহরের অজয় বাঁধ লাগোয়া এলাকা হল ঘুটকিয়া পাড়া-সর্দার পল্লি। শনিবার দুপুরে সেখানে গিয়ে দেখা যায়, মাঝবয়সি এক মহিলা অজয় নদের ধারে মৃত শিশুকন্যাকে কোলে নিয়ে বসে আছেন। বাঁধের উপর মাথায় হাত দিয়ে বসে রয়েছেন মৃত শিশুকন্যার দিদা বাণী সর্দার। বাণীদেবীর সামনেই তাঁর মেয়ে দাবি করে, “জ্যাঠার কথাতেই এ দিন সকালবেলা বালিশ চাপা দিয়ে মেয়েকে মেরেছি।” ধৃতের পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, তুতো সম্পর্কিত ওই জ্যাঠার নাম কারফা সর্দার। পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনার পরেই মাটির বাড়িতে তালা দিয়ে এলাকা ছেড়ে পালিয়েছে কারফা। রুমকির বাপের বাড়ির পাশেই থাকতেন কারফা।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কারফার সঙ্গে ধৃত নাবালিকার বিবাহ-বর্হিভূত সম্পর্ক ছিল। ঘনিষ্ঠ মহলে ওই নাবালিকা জানিয়েছে, বছর দেড়েক আগে বাড়িতে কেউ না থাকার সুযোগে ভয় দেখিয়ে তার সঙ্গে সহবাস করেন কারফা। এর ফলে সে অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে। সেই অবস্থাতেই মাস পাঁচেক আগে স্থানীয় একটি মনসামন্দিরে পাড়ার ছেলে বুদ্ধদেব থাণ্ডারের সঙ্গে ওই নাবালিকার বিয়ে হয়ে যায়। যদিও নাবালিকার মা বাণী সর্দারের দাবি, “আমরা ঘুণাক্ষরেও এ রকম কথা জানতাম না। আজকেই প্রথম শুনছি।” ওই মহিলার স্বামী পেশায় অ্যাম্বুল্যান্স চালক বুদ্ধদেবের দাবি, বিয়ের কয়েক দিন পরেই তাঁর স্ত্রী সব ঘটনা বলেছিল। তাঁর আক্ষেপ, “সব জেনেও আমি স্ত্রীর সঙ্গে ছিলাম। কিন্তু এ রকম কেন করল, বুঝতে পারছি না।”

জেলা পুলিশের এক কর্তা জানান, সকাল ৯টা নাগাদ বাড়িতে এসে নাতনির নিথর দেহটি দেখে চিৎকার করে ওঠেন বাণীদেবী। পড়শি ও শ্বশুরবাড়ির লোকজন চেপে ধরলে ওই নাবালিকা গড়গড় করে সব কথা বলে ফেলে। পুলিশ সূত্রে খবর, জেরায় ধৃত জানিয়েছে কারফা ওই শিশুকন্যাকে নিজের কাছে রাখতে চেয়েছিল। কিন্তু সে দিতে চায়নি। এর পর কারফা তাদের পরিবার শেষ করে দেওয়ার হুমকি দেয়। এই হুমকিতে ভয় পেয়েই নিজের শিশুকন্যাকে খুন করেছে সে। যদিও পুলিশের কাছে দায়ের করা অভিযোগে ধৃতের স্বামী দাবি করেছে, শিশুকন্যার পিতৃপরিচয় জানাজানি হওয়ার ভয়ে কারফাই ওকে খুন করেছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

murder katwa baby murder by mother rumki katoa
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE